নিশ্চয় ফির’আউন পৃথিবীতে কর্তৃত্ব লাভ করেছিলো এবং তার লোকজনকে তার অনুসারী করেছে ; তাদের মধ্যে একটা দলকে দুর্বল দেখতো, তাদের পুত্র-সন্তানদেরকে হত্যা করতো এবং তাদের নারীদের জীবিত রাখতো। নিশ্চয় সে বিপর্যয় সৃষ্টিকারী ছিলো।
এবং আমি মূসার মাকে গোপন প্রেরণা দিয়েছি যে, ‘তাকে দুধ পান করাও। অতঃপর যখন তার সম্পর্কে তোমার আশঙ্কা হয়, তবে তাকে দরিয়ায় নিক্ষেপ করো আর না ভয় করো এবং না দুঃখ। নিশ্চয় আমি তাকে তোমার নিকট ফিরিয়ে আনবো এবং তাকে রসূল করবো’।
এবং ফির’আউনের স্ত্রী বললো, ‘এ শিশু আমার ও তোমার নয়নের শান্তি, তাকে হত্যা করো না; হয় তো এটা আমাদের উপকারে আসবে, অথবা আমরা তাকে পুত্র হিসেবে গ্রহণ করে নেবো। এবং তারা বুঝতে পারে নি।
এবং সকালে মূসার মায়ের হৃদয় ধৈর্যহীন হয়ে পড়লো। অবশ্য সে তার অবস্থা প্রকাশ করে দেওয়া উপক্রম হয়েছিলো যদি আমি তার হৃদয়কে দৃঢ় করে না দিতাম, যাতে সে আমার প্রতিশ্রুতির প্রতি আস্থাশীল থাকে।
এবং আমি পূর্ব থেকেই সমস্ত ধাত্রীকে তার জন্য হারাম করে দিয়েছিলাম। সুতরাং সে বললো, ‘আমি তোমাদেরকে কি এমন পরিবারের সন্ধান দেবো, যারা তোমাদের এ শিশুকে লালন-পালন করবে এবং তারা তার মঙ্গলকামী?’
এবং সেই শহরে প্রবেশ করলো। যখন শহরবাসীগণ দ্বি-প্রহরের নিদ্রার মধ্যে অসতর্ক ছিলো। তখন সেখানে দু’টি লোককে সংঘর্ষে লিপ্ত দেখতে পেলো- একজন মূসার সম্প্রদায়ের ছিলো আর অপরজন তার শত্রুদলের। তখন ওই লোক যে তার দলের ছিলো সে মূসার নিকট সাহায্য চাইলো তারই বিরুদ্ধে, যে তার শত্রুদের অন্তর্ভুক্ত ছিলো; অতঃপর মূসা তাকে ঘুষি মারলো সুতরাং সে তাকে মেরে ফেললো; বললো, ‘এ কাজ শয়তানের নিকট থেকে হয়েছে, নিশ্চয় সে শত্রু, প্রকাশ্য পথভ্রষ্টকারী’।
অতঃপর তার ভোর হলো ওই শহরে ভীত অবস্থায় এ অপেক্ষায় যে, কি ঘটছে! যখনই দেখলো যে, ওই ব্যক্তি যে গতকাল তার নিকট সাহায্য চেয়েছিলো সে সাহায্যের জন্য ফরিয়াদ করছে। মূসা তাকে বললো, ‘নিশ্চয় তুমি প্রকাশ্য পথভ্রষ্ট!’
অতঃপর যখন মূসা তাকে পাকড়াও করার ইচ্ছা করলো, যে উভয়েরই শত্রু, তখন সে (ইস্রাঈলী) বললো, ‘হে মূসা! তুমি কি আমাকে তেমনি হত্যা করতে চাও যেমন তুমি গতকাল এক ব্যক্তিকে হত্যা করেছিলে? তুমি তো এটাই চাও যে, পৃথিবীতে স্বেচ্ছাচারী হবে এবং শান্তি স্থাপন করতে চাচ্ছো না!’
এবং শহরের দূর প্রান্ত থেকে এক ব্যক্তি ছুটে এলো; বললো, ‘হে মূসা! নিশ্চয় রাজন্যবর্গ আপনাকে হত্যা করার পরামর্শ করেছে। সুতরাং আপনি বাইরে চলে যান! আমি আপনার মঙ্গলকামী’।
এবং যখন মাদ্য়ানের পানির নিকট এলো, সেখানে লোকদের একদলকে দেখলো যে, তারা নিজেদের জানোয়ার গুলোকে পানি পান করাচ্ছে; এবং তাদের থেকে আলাদা ওপাশে দু’জন নারীকে দেখলো যে, তারা আপন পশুগুলোকে রুখে রাখছে; মূসা বললেন, ‘তোমরা দু’জনের কি অবস্থা?’ তারা বললো, ‘আমরা পানি পান করাতে পারি না যতক্ষণ পর্যন্ত সমস্ত রাখাল পানি পান করিয়ে ফিরে না নিয়ে যায় এবং আমাদের পিতা অতিশয় বৃদ্ধা!’
সুতরাং মূসা ওই দু’জনের পশুগুলকে পানি পান করিয়ে দিলো, অতঃপর ছায়ার প্রতি ফিরলো আরয করলো, ‘হে আমার রব! আমি ওই খাদ্যের মুখাপেক্ষী, যা তুমি আমার জন্য অবতীর্ণ করেছো’।
অতঃপর ওই দু’জনের একজন তার নিকট এলো শরম জড়িত চরণে চলতে চলতে; বললো, ‘আমার পিতা তোমাকে ডাকছে তোমার পারিশ্রমিক দেওয়ার জন্য এরই যে, তুই আমাদের পশুগুলোকে পানি পান করিয়েছো’। যখন মূসা তার নিকট এলো এবং তাকে সমস্ত বৃত্তান্ত বর্ণনা করে শুনালো, সে বললো, ‘আপনি ভয় করবেন না, আপনি বেচে গেছেন যালিমদের কবল থেকে’।
বললো, ‘আমি চাচ্ছি আমার দু’কন্যার একজনকে তোমার সাথে বিয়ে দিতে- এ মহরের উপর যে, তুমি আট বছর যাবৎ আমার নিকট চাকুরী করবে; অতঃপর যদি পূর্ণ দশ বছর পূরণ করে নাও তবে তা হবে তোমার নিকট থেকেই। এবং আমি তোমাকে কষ্টে ফেলতে চাই না। অবিলম্বে আল্লাহ্ ইচ্ছা করলে, তুমি আমাকে সদাচারীদের মধ্যে পাবে’।
মূসা বললো, ‘এটা আমার ও আপনার মধ্যে চুক্তি সম্পন্ন হলো। এ দু’টি মেয়েদের মধ্যে কোন একটা পূরণ করলে আমার উপর দাবী থাকবে না এবং আমাদের এ কথার উপর আল্লাহ্র যিম্মা রইলো’।
অতঃপর যখন মূসা আপন মেয়াদ পূরণ করে দিলো এবং আপন বিবিকে নিয়ে যাত্রা করলো, তখ্ন ‘তূর’ পর্বতের দিক থেকে এক আগুন দেখতে পেলো। আপন পরিবারকে বললো, ‘তোমরা এখানে অপেক্ষা করো, তূর পর্বতের দিক থেকে এক আগুন আমার নজরে পড়েছে। সম্ভবতঃ আমি সেখান থেকে কিছু খবর নিয়ে আসতে পারি, অথবা তোমাদের জন্য কোন অঙ্গার নিয়ে আসবো যাতে তোমরা আগুন পোহাতে পারো’।
এবং এ যে, ‘নিক্ষেপ করো আপন লাঠি!’ অতঃপর যখন মূসা সেটা দেখলো যে, তা ছুটাছুটি করছে যেনো সাপ, তখন পৃষ্ঠ ফিরিয়ে চলতে লাগলো এবং ফিরে তাকালো না। হে মূসা! সামনে এসো এবং ভয় করো না! নিশ্চয় তোমার জন্য নিরাপত্তা রয়েছে।
আপন হাত জামার বুকের পাশে ভিতরে রাখো, তা বের হয়ে আসবে শুভ্র-উজ্জ্বল নির্দোষভাবে; এবং আপন হাত আপন বুকের উপর রাখো ভয় দূর করার জন্য। সুতরাং এ দু’টিই প্রমাণ তোমার রবের-ফির’আউন ও তার সভাসদবর্গের প্রতি। নিশ্চয় তারা হচ্ছে অমান্যকারী লোক’।
এবং আমার ভাই হারূন, তার ভাষা আমার চেয়ে অধিক পরিষ্কার। সুতরাং তাকে আমার সাহায্যের জন্য রসূল করে নাও, যাতে আমার সত্যায়ন করে। আমি আশঙ্কা করছি যে, তারা আমাকে অস্বীকার করবে’।
এরশাদ করলেন, ‘ অবিলম্বে আমি তোমার বাহুকে তোমার ভাই দ্বারা শক্তিশালী করবো এবং তোমাদের উভয়কে বিজয়ে দান করবো; সুতরাং তারা, তোমাদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না। আমার নিদর্শনগুলোর কারণে, তোমরা দু’জন এবং যারা তোমাদের অনুসরণ করবে, জয়যুক্ত হবে’।
অতঃপর যখন মূসা তাদের নিকট আমার সুস্পষ্ট নিদর্শনসমূহ নিয়ে এলো, তখন তারা বললো,‘এ তো নয়, কিন্তু অলীক যাদু মাত্র! এবং আমরা আমাদের পূর্ব-পুরুষদের মধ্যে এমন শুনি নি’।
এবং ফির’আউন বললো, ‘হে সভাসদবর্গ! আমি তোমাদের জন্য আমি ব্যতীত অন্য কোন খোদা আছে বলে জানি না! সুতরাং হে হামান! আমার জন্য কাদা পোড়ায়ে একটা প্রাসাদ তৈরী করো; হয় তো আমি মূসার খোদাকে উকি মেরে দেখে আসব; এবং নিশ্চয় আমার ধারণায় তো সে মিথ্যাবাদী’।
এবং নিশ্চয় আমি মূসাকে কিতাব দান করেছি এর পর যে, পূর্ববর্তী বহু মানব গোষ্ঠীকে ধ্বংস করে দিয়েছি, যেটার মধ্যে মানব-জাতির অন্তরের চোখগুলো খুলে দেয় এমন বাণীসমূহ, হিদায়ত এবং দয়া (রয়েছে), যেন তারা উপদেশ মান্য করে।
কিন্তু হয়েছে এটাই যে, আমি মানবগোষ্ঠীসমূহ সৃষ্টি করেছি, তারপর তাদের উপর দীর্ঘকাল অতিবাহিত হয়ে গেছে; এবং না আপনি মাদ্য়ানবাসীদের মধ্যে বসবাসরত ছিলেন তাদের নিকট আমার আয়াতসমূহ আবৃত্তিকারী অবস্থায়; হাঁ, আমিই রসূল প্রেরণকারী ছিলাম।
এবং না আপনি তূর পর্বতের পার্শ্বে ছিলেন, যখন আমি আহ্বান করেছি; হাঁ, আপনার রবের দয়া রয়েছে (যে, আপনাকে অদৃশ্যের জ্ঞান প্রদান করেছেন), যাতে আপনি এমন সম্প্রদায়কে সতর্ক করেন যার নিকট আপনার পূর্বে কোন সতর্ককারী আসেনি, এ আশা করে যে, তাদের উপদেশ হবে।
এবং যদি তাদের ওই কর্মের জন্য তাদেরকে (কখনো) কোন বিপদ স্পর্শ না করতো, যা তাদের হাতগুলো অগ্রে প্রেরণ করেছে, (তবে আমি তাদের প্রতি রসূল প্রেরণ করতাম না।) তখন তারা বলতো, ‘হে আমাদের রব! তুমি আমাদের প্রতি কোন রসূল কেন প্রেরণ করো নি, যাতে আমরা তোমার নিদর্শনসমূহের অনুসরণ করতাম এবং ঈমান আনতাম?’
অতঃপর যখন তাদের নিকট সত্য এলো আমার নিকট থেকে, তখন বললো, ‘তাকে কেন প্রদান করা হয়নি যা মূসাকে প্রদান করা হয়েছে?’ তারা কি অস্বীকার করতো না যা পূর্বে মূসাকে প্রদান করা হয়েছে? তারা বললো, উভয়ই যাদুকর, একে অপরকে সমর্থন করে;’ এবং তারা বললো, ‘আমরা এ উভয়কে অস্বীকার করি’।
আপনি বলুন, ‘সুতরাং আল্লাহ্র নিকট থেকে এমন কোন কিতাব নিয়ে এসো, যা ওই দু’টি কিতাব অপেক্ষা অধিক হিদায়তের হয়, আমি সেটার অনুসরণ করবো, যদি তোমরা সত্যবাদী হও’।
অতঃপর যদি তারা আপনার এ বাণী গ্রহণ না করে, তবে জেনে নিন যে, ব্যাস! তারা নিজেদের খেয়াল-খুশীরই অনুসরণ করছে। এবং তার চেয়ে অধিক পথভ্রষ্ট আর কে, যে আপন খেয়াল-খুশীরই অনুসরণ করে, আল্লাহ্র হিদায়ত থেকে পৃথক হয়ে? নিশ্চয় আল্লাহ্ হিদায়ত করেন না যালিম লোকদেরকে।
এবং যখন তাদের উপর এসব আয়াত পাঠ করা হয় তখন তারা বলে, ‘আমরা এর উপর ঈমান এনেছি। নিশ্চয় এটাই সত্য আমাদের রবের নিকট থেকে; আমরা এর পূর্বেই আত্নসমর্পণ করেছিলাম’।
তাদেরকে তাদের প্রতিদান দু’বার দেওয়া হবে বিনিময়ে তাদের ধৈর্যের। এবং তারা ভালো দ্বারা মন্দকে দূরীভূত করে এবং আমার প্রদত্ত (সম্পদ) থেকে কিছু আমার পথে ব্যয় করে।
এবং যখন অযথা কথাবার্তা শুনে তখন তা থেকে তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়। আর বলে, ‘আমাদের জন্য আমাদের কর্ম, তোমাদের জন্য তোমাদের কর্ম। ব্যাস! তোমাদের প্রতি সালাম! আমরা অজ্ঞলোকদের চাই না’।
এবং তারা বলে, ‘যদি আমরা আপনার সাথে হিদায়তের অনুসরণ করি তবে লোকেরা আমাদের দেশ থেকে আমাদেরকে উৎখাত করবে’। আমি কি তাদেরকে নিরাপদ হেরমে স্থান দিই নি, যেটার প্রতি সব বস্তুর ফলমূল আমদানী করা হয়, আমার নিকট থেকে জীবিকাস্বরূপ? কিন্তু তাদের মধ্যে অধিকাংশের জ্ঞান নেই।
এবং কত শহরকে আমি ধ্বংস করে দিয়েছি যারা নিজেদের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের উপর অহঙ্কারী হয়েছে। সুতরাং এ-ই হচ্ছে তাদের ঘরবাড়ী যে, তাদের পর সেগুলোতে বসবাস হয় নি, কিন্তু সামান্য এবং আমিই (চূড়ান্ত) মালিকানার অধিকারী।
এবং আপনার রব শহরগুলোকে ধ্বংস করেন না, যতক্ষণ পর্যন্ত না সেগুলোর মূল কেন্দ্রস্থলে রসূল প্রেরণ করেন যিনি তাদের নিকট আমার আয়াতসমূহ পাঠ করেন এবং আমি শহরগুলোকে ধ্বংস করি না, কিন্তু তখনই, যখন সেগুলোর বাসিন্দারা যালিম হয়।
এবং যে কোন বস্তুই তোমাদেরকে প্রদান করা হয়েছে তা হচ্ছে পার্থিব জীবনের ভোগ সামগ্রী ও সেটার সাজসজ্জ্বা মাত্র। এবং যা আল্লাহ্র নিকট রয়েছে তা উত্তম ও অধিক স্থায়ী। তবে কি তোমাদের বিবেক নেই?
তবে কি ওই ব্যক্তি, যাকে আমি উত্তম প্রতিশ্রুতি দিয়েছি অতঃপর সে সেটার সাক্ষাৎ পাবে, (সে) ওই ব্যক্তির ন্যায়, যাকে আমি পার্থিব জীবনের ভোগ-সামগ্রী ভোগ করতে দিয়েছি, অতঃপর তাকে ক্বিয়ামতের দিনে গ্রেফতার করে হাযির করা হবে?
বলবে ওই সব লোক, যাদের উপর (শাস্তির) বাণী অবধারিত হয়েছে, ‘হে আমাদের রব! এরাই হচ্ছে তারা, যাদেরকে আমরা পথভ্রষ্ট করেছি। আমরা তাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছি যেমনিভাবে আমরা নিজেরাই পথভ্রষ্ট হয়েছিলাম। আমরা তাদের থেকে পৃথক হয়ে তোমারই প্রতি প্রত্যাবর্তন করছি। তারা আমাদের পূজা করতোই না’।
আপনি বলূন, ‘ভালো দেখো তো! যদি আল্লাহ্ সর্বদা তোমাদের উপর ক্বিয়ামত পর্যন্ত রাতকে স্থায়ী করেন, তবে আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কোন খোদা আছে যে তোমাদেরকে আলো এনে দেবে? তবে কি তোমরা শুনতে পাচ্ছো না?’
আপনি বলুন, ‘ভালো দেখো তো! যদি আল্লাহ্ ক্বিয়ামত পর্যন্ত সর্বদা দিন রেখে দেন, তবে আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কোন খোদা রয়েছে, যে তোমাদের নিকট রাত এনে দেবে, যার মধ্যে তোমরা আরাম করবে? তবে কি তোমরা ভেবে দেখো না?’
এবং প্রত্যেক সম্প্রদায় থেকে আমি একজন সাক্ষী বের করে বলবো, ‘তোমাদের প্রমাণ হাযির করো’। তখন তারা জানতে পারবে যে, হক্ব আল্লাহ্রই এবং তাদের নিকট থেকে হারিয়ে যাবে যেসব বানোয়াট তারা করতো’।
নিশ্চয় কারূন মূসার সম্প্রদায়ভুক্ত ছিলো, অতঃপর সে তাদের উপর অত্যাচার করেছে; এবং আমি তাকে এত ধন-ভাণ্ডার দান করেছি, যেগুলোর চাবি একটা বলবান দলের উপরও ভারী ছিলো; যখন তাকে তার সম্প্রদায় বললো, ‘দম্ভ করো না। নিশ্চয় আল্লাহ্ দাম্ভিকদের পছন্দ করেন না।
এবং আল্লাহ্ যে সম্পদ তোমাকে প্রদান করেছেন তা দ্বারা আখিরাতের আবাস অনুসন্ধান করো এবং দুনিয়ার মধ্যে নিজ অংশ ভুলো না আরপরোপকার করো যেমন আল্লাহ্ তোমার উপর অনুগ্রহ করেছেন এবং পৃথিবীতে অশান্তি চেওয়া না। নিশ্চয় আল্লাহ্ অশান্তি সৃষ্টিকারীদের ভালোবাসেন না’।
সে বললো, ‘এ তো আমি এক জ্ঞান থেকে লাভ করেছি যা আমার নিকট রয়েছে’। এবং তার কি এ কথা জানা নেই যে, আল্লাহ্ তার পূর্বে ওই সব মানবগোষ্ঠীকে ধ্বংস করেছেন যাদের ক্ষমতা তার চেয়ে প্রবল ছিলো এবং সম্পদ তার চেয়ে অধিক? এবং অপরাধীদেরকে তাদের পাপগুলো সম্পর্কে প্রশ্ন করা হবে না।
অতঃপর আপন সম্প্রদায়ের সম্মুখে উপস্থিত হলো নিজ জাকজমকের মধ্যে, বললো ওই সব লোক, যারা পার্থিব জীবন চায়, ‘হায়, কোন মতে আমরাও যদি তেমনি পেতাম যেমন পেয়েছে কারূন! নিশ্চয় তার বড় সৌভাগ্য!’
এবং বললো ওই সব লোক যাদেরকে জ্ঞান প্রদান করা হয়েছে, ‘তোমাদের ধ্বংস হোক! আল্লাহ্র পুরস্কার উত্তম ওই ব্যক্তির জন্য, যে ঈমান এনেছে এবং সৎকর্ম করে; আর এটা তারাই পায়, যারা ধৈর্যশীল’।
অতঃপর আমি তাকে এবং তার প্রাসাদকে ভূ-গর্ভে ধ্বসিয়ে দিলাম, অতঃপর তার নিকট কোন মানব গোষ্ঠী ছিলো না, যে আল্লাহ্ থেকে বাচানোর জন্য তার সাহায্য করতো; এবং না সে তার বদলা নিতে পারতো।
এবং গতকাল যারা তার মতো মর্যাদা কামনা করেছিলো সকালে তারা বলতে লাগলো, ‘আশ্চর্যজনক কথা! আল্লাহ্ রিয্ক প্রশস্ত করেন আপন বান্দাদের মধ্যে যার জন্য চান এবং সংকুচিত করেন। যদি আল্লাহ্ আমাদের উপর অনুগ্রহ না করতেন, তবে আমাদেরকেও ধ্বসিয়ে ফেলতেন। হে আশ্চর্য! কাফিরদের জন্য সাফল্য নেই’।
নিশ্চয় যিনি আপনার উপর ক্বোরআনকে ফরয (অপরিহার্য) করেছেন তিনি আপনাকে ফিরিয়ে নিয়ে যাবেন যেখানে আপনি ফিরে যেতে চান! আপনি বলুন, ‘আমার রব ভালো জানেন তাকে, যিনি হিদায়ত এনেছে এবং (তাকেও) যে স্পষ্ট ভ্রান্তিতে রয়েছে’।
এবং কখনো তারা যেন আপনাকে আল্লাহ্র আয়াতসমূহ থেকে বিমুখ না রাখে এরপর যে, সেগুলো আপনার প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে; এবং আপনার রবের প্রতি আহ্বান করুন, আর কিছুতেই যেন অংশীবাদীদের অন্তর্ভুক্ত না হোন।
এবং আল্লাহ্র সাথে অন্য উপাস্যের পূজা করো না’ তিনি ব্যতীত অন্য কোন খোদা নেই; প্রত্যেক কিছু ধ্বংসশীল তারই সত্তা ব্যতীত। নির্দেশ তারই এবং তারই প্রতি ফিরে যাবে।