এবং যারা ঈমান এনেছে ও সৎ কাজ করেছে আমি অবশ্যই তাদের মন্দকর্মগুলো মিটিয়ে দেবো এবং অবশ্যই তাদেরকে ওই কর্মের উপর পুরস্কার দেবো, যা তাদের সমস্ত কর্মের মধ্যে উত্তম ছিলো।
এবং আমি মানুষকে তাকীদ দিয়েছি আপন পিতা মাতার প্রতি সদাচরণ করতে; এবং যদি তারা তোমার উপর (শক্তি প্রয়োগের) চেষ্টা করে যেন তুমি তাকে আমার শরীক স্থির করো, যার সম্বন্ধে তোমার জ্ঞান নেই, তবে তাদের কথা অমান্য করো। আমারই প্রতি তোমাদের প্রত্যাবর্তন করতে হবে, অতঃপর আমি তোমাদেরকে বলে দেবো যা তোমরা করছিলে।
এবং কিছু লোক বলে, ‘আমরা আল্লাহ্র উপর ঈমান এনেছি’, অতঃপর যখন আল্লাহ্র পথে তাদেরকে কোন কষ্ট দেওয়া হয়, তখন লোকদের উৎপীড়নকে আল্লাহ্র শাস্তিরই সমতুল্য মনে করে। আর যদি আপনার রবের নিকট থেকে সাহায্য আসে, তবে অবশ্যই বলবে, ‘আমরা তো তোমাদেরই সাথে ছিলাম। আল্লাহ্ কি সম্যক অবহিত নন সে সম্পর্কে, যা কিছু সমস্ত বিশ্ববাসীর অন্তঃকরণে রয়েছে?’
এবং নিশ্চয় নিশ্চয় তারা নিজেদের বোঝা বহন করবে এবং নিজেদের বোঝাসমূহের সাথে আরো বোঝা। এবং নিশ্চয় ক্বিয়ামত দিবসে জিজ্ঞাসা করা হবে সেই অপবাদ সম্পর্কে যা তারা রটনা করে আসছিলো।
এবং নিশ্চয় আমি নূহকে তার সম্প্রদায়ের প্রতি প্রেরণ করেছি। সুতরাং সে তাদের মধ্যে হাজার বছর থেকে পঞ্চাশ বছর কম অবস্থান করেছে। অতঃপর তাদেরকে প্লাবন গ্রাস করলো এবং তারা অত্যাচারী ছিলো।
তোমরা তো আল্লাহ্ ব্যতীত প্রতিমার পূজা করছো এবং নিছক মিথ্যা রচনা করছো। নিশ্চয় তারা, যাদের তোমরা আল্লাহ্ ব্যতীত পূজা করছো, তোমাদের জীবিকার কিছুরই মালিক নয়। সুতরাং তোমরা আল্লাহ্র নিকট জীবিকা তালাশ করো এবং তারই ইবাদত করো ও তার অনুগ্রহ স্বীকার করো। তোমাদেরকে তার দিকে প্রত্যাবর্তন করতে হবে।
এবং যারা আমার নিদর্শনসমূহ ও আমার সাক্ষাতকে অস্বীকার করেছে তারাই হচ্ছে ওই সব লোক, যাদের আমার অনুগ্রহ লাভের আশা নেই এবং তাদের জন্য বেদনাদায়ক শাস্তি রয়েছে।
সুতরাং তার সম্প্রদায়ের পক্ষে কোন উত্তর দেওয়া সম্ভব হয় নি, কিন্তু এতটুকু বললো, তাকে হত্যা করে ফেলো অথবা জ্বালিয়ে দাও’। অতঃপর আল্লাহ্ তাকে আগুন থেকে রক্ষা করেছেন। নিশ্চয় তাতে অবশ্য নিদর্শনসমূহ রয়েছে ঈমানদারদের জন্য।
এবং ইব্রাহীম বললেন, ‘তোমরা তো আল্লাহ্ ব্যতীত এ মূর্তিগুলো তৈরী করে নিয়েছো, যেগুলোর সাথে তোমাদের ভালোবাসা এ দুনিয়ার জীবন পর্যন্ত। অতঃপর ক্বিয়ামত দিবসে তোমাদের মধ্যে একে অপরের সাথে কুফর করবে এবং একে অপরের প্রতি অভিসম্পাত করবে আর তোমাদের সবার ঠিকানা হচ্ছে জাহান্নাম এবং তোমাদের সাহায্যকারী নেই’।
এবং আমি তাকে ইসহাক্ব ও ইয়া’ক্বূবকে দান করেছি এবং আমি তার বংশধরদের মধ্যে নুবূয়ত ও কিতাব রেখেছি; আর আমি দুনিয়ার মধ্যে এর প্রতিদান তাকে দান করেছি এবং নিশ্চয় সে আখিরাতে আমার একান্ত নৈকট্যের উপযোগী বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত।
তোমরা কি পুরুষের সাথে বলাৎকার করছো এবং ডাকাতি করছো ও নিজেদের মজলিসে ঘৃণ্য কাজ করছো? সুতরাং তার সম্প্রদায়ের কোন জবাব ছিলো না, কিন্তু এ যে, তারা বললো, ‘আমাদের উপর আল্লাহ্র শাস্তি আনয়ন করো যদি তুমি সত্যবাদী হও!’
বললো, ‘তাতে তো লূত রয়েছে’। ফিরিশ্তাগণ বললো, ‘আমরা ভালোভাবে জানি তাতে কে রয়েছে। অবশ্যই আমরা তাকে এবং তার পরিবার-পরিজনকে রক্ষা করবো, কিন্তু তার স্ত্রীকে; সে পশ্চাতে অবস্থানকারী লোকদের অন্তর্ভুক্ত থাকবে'।
আর যখন আমার ফিরিশ্তাগণ লূতের নিকট এলো, তখন তাদের আগমন তার নিকট বিস্বাদ অনুভূত হলো এবং তাদের কারণে তার অন্তর সঙ্কুচিত হলো আর তারা বললো, ‘ভয় করবেন না এবং দুঃখও করবেন না! নিশ্চয় আমরা আপনাকে ও আপনার পরিবার-পরিজনকে রক্ষা করবো, আপনার স্ত্রী ব্যতীত। সে পশ্চাতে অবস্থানকারীদের অন্তর্ভুক্ত।
মাদ্য়ানের প্রতি তাদের সম্প্রদায়ের শু’আয়বকে প্রেরণ করেছি। সুতরাং সে বললো, ‘হে আমার সম্প্রদায়! আল্লাহ্র ইবাদত করো এবং শেষ দিবসের আশা রাখো! আর পৃথিবীতে অশান্তি বিস্তার করে বেড়িয়ো না!’
আর ‘আদ ও সামূদকে ধ্বংস করেছি এবং তোমাদের নিকট তাদের বস্তিসমূহ সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়েছে। এবং শয়তান তাদের কৃতকর্ম তাদের দৃষ্টিতে সুশোভিত করে দেখিয়েছে আর তাদেরকে সৎপথ থেকে নিবৃত্ত রেখেছে এবং তাদের মধ্যে বোধশক্তি ছিলো।
আর ক্বারূন, ফির’আউন ও হামানকে; এবং নিশ্চয় মূসা তাদের নিকট সুস্পষ্ট নিদর্শনাদি নিয়ে এসেছে। অতঃপর তারা ভূ-পৃষ্ঠে অহঙ্কার করেছে এবং তারা আমার আয়ত্ত থেকে বের হয়ে যাবার মতো ছিলো না।
অতঃপর তাদের প্রত্যেককে আমি তাদের পাপের জন্য পাকড়াও করেছি; সুতরাং তাদের মধ্যে কারো উপর আমি পাথর বর্ষণ করেছি; এবং তাদের কাউকে ভয়ানক ধ্বনি পেয়ে বসেছে, আর তাদের মধ্যে কাউকে ভূ-গর্ভে ধ্বসিয়ে ফেলেছি, এবং তাদের মধ্যে কাউকে ডুবিয়ে মেরেছি। এবং আল্লাহ্র জন্য শোভা পেতো না যে, তিনি তাদের প্রতি যুল্ম করতেন; হাঁ, তারা নিজেরাই নিজেদের আত্নার প্রতি যুল্ম করছিলো।
তাদের উপমা, যারা আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য মালিক স্থির করেছে, মাকড়সার ন্যায়; সে জালের ঘর তৈরী করেছে; এবং নিশ্চয় সমস্ত ঘরের মধ্যে দুর্বলতম ঘর হচ্ছে মাকড়সার ঘর; কতোই উত্তম হতো যদি তারা জানতো!
হে মাহবূব! পাঠ করুন যে কিতাব আপনার প্রতি ওহী করা হয়েছে এবং নামায ক্বায়েম করুন! নিশ্চয় নামায অশ্লীল ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে এবং নিশ্চয় আল্লাহ্র স্মরণ সর্বাপেক্ষা বড় এবং আল্লাহ্ জানেন যা তোমরা করো।
এবং হে মুসলমানগণ তোমরা উত্তম পন্থা ব্যতীত কিতাবীদের সাথে বিতর্ক করো না, তবে তাদের সাথে করতে পার যারা তাদের মধ্যে যুল্ম করেছে। আর বলো, ‘আমরা ঈমান এনেছি সেটারই উপর, যা আমাদের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে এবং যা তোমাদের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে আর আমাদের তোমাদের একই উপাস্য এবং আমরা তার সামনে আত্নসমর্পণকারী’।
এবং হে মাহবূব! অনুরূপভাবে আপনার প্রতি কিতাব অবতীর্ণ করেছি, সুতরাং ওই সব লোক, যাদেরকে আমি কিতাব প্রদান করেছি, সেটার প্রতি ঈমান আনে। আর এদের থেকেও কিছুলোক এমন রয়েছে, যারা সেটার উপর ঈমান আনে; এবং আমার নিদর্শনসমূহকে কেউ অস্বীকার করে না, কিন্তু কাফিরগণ।
এবং বললো, ‘তার উপর তার রবের নিকট থেকে কেন কিছু নিদর্শন অবতীর্ণ হয় না?’ আপনি বলুন, ‘নিদর্শনগুলো তো আল্লাহ্রই নিকট রয়েছে। আর আমি তো এই স্পষ্ট সতর্ককারী’।
আপনি বলুন, ‘আল্লাহ্ যথেষ্ট আমার ও তোমাদের মধ্যে সাক্ষী হিসেবে, তিনি জানেন যা কিছু আসমানসমূহ ও যমীনের মধ্যে রয়েছে এবং ওই সব লোক, যারা অসত্যের উপর দৃঢ় বিশ্বাস রেখেছে এবং আল্লাহ্কে অস্বীকার করেছে তারাই ক্ষতিগ্রস্ত’।
এবং তারা আপনার নিকট শাস্তি তাড়াতাড়ি চাচ্ছে; আর যদি একটা নির্ধারিত সময়সীমা না থাকতো, তবে অবশ্যই তাদের উপর শাস্তি এসে যেতো এবং নিশ্চয় তাদের উপর হঠাৎ করে এসে যাবে যখন তারা অনবহিত থাকবে।
এবং নিশ্চয় যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকর্ম করেছে, অবশ্যই আমি তাদেরকে জান্নাতের সুউচ্চ প্রাসাদসমূহে স্থান দেবো, যেগুলোর পাদদেশে নহরসমূহ প্রবহমান থাকবে, তারা তাতে স্থায়ীভাবে থাকবে। কতোই উত্তম পুরস্কার সৎকর্মশীলদের!
এবং যদি আপনি তাদেরকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘কে সৃষ্টি করেছেন আসমান ও যমীন এবং কাজে লাগিয়েছেন সূর্য ও চন্দ্রকে?’ তবে তারা অবশ্যই বলবে, ‘আল্লাহ্’। তাহলে, তারা কোথায় যাচ্ছে মুখ নিচু করে?
এবং যদি আপনি তাদেরকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘কে অবতীর্ণ করেছেন আসমান থেকে পানি; অতঃপর তা দ্বারা যমীনকে জীবিত করেন সেটার মৃত্যুর পর?’ তবে অবশ্যই বলেব, ‘আল্লাহ্’। আপনি বলুন, ‘সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্র জন্য; ‘বরং তাদের মধ্যে অধিকাংশ বিবেকহীন।
অতঃপর যখন নৌযানে আরোহন করে, তখন আল্লাহ্কে আহ্বান করে একমাত্র তারই প্রতি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস রেখে; অতঃপর যখন তিনি তাদেরকে স্থলের দিকে উদ্ধার করে আনেন তখনই শির্ক করতে আরম্ভ করে;
এবং তারা কি এটা দেখে নি যে, আমি সম্মানিত ও ভূ-খণ্ডকে নিরাপদ আশ্রয়স্থল করেছি এবং তাদের চতুর্পাশ্বে অবস্থানকারী লোকদেরকে অপহরণ করে নেওয়া হয়? তবে কি তারা অসত্যে বিশ্বাস করছে এবং আল্লাহ্ প্রদত্ত নি’মাতের প্রতি অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছে?