হে ঈমানদারগণ! স্বীয় অঙ্গীকার পূরণ করো। তোমাদের জন্য হালাল হলো বাকশক্তিহীন চতুষ্পদ জন্তু, কিন্তু (হালাল নয়) ওই সব (জন্তু), যেগুলোর কথা সামনে তোমাদেরকে শুনানো হবে, তবে শিকার হালাল মনে করো না যখন তোমরা ইহরামের মধ্যে থাকো। নিশ্চয় আল্লাহ্ আদেশ করেন যা চান।
হে ঈমানদারগণ! হালাল সাব্যস্ত করো না আল্লাহ্র নিদর্শনগুলোকে, না সম্মানিত মাসকে, না হেরমের প্রতি প্রেরিত ক্বোরবানীর পশুকে, না এমন সব পশুকেও, যেগুলোর গলায় চিহ্নসমূহ ঝুলানো হয়েছে এবং না সে সব লোকের সম্পদ ও মান-ইজ্জতকে, যারা সম্মানিত ঘরের উদ্দেশ্যে এসেছে, স্বীয় রবের দয়া ও তার সন্তুষ্টি লাভ করতে চায়। আর যখন তোমরা ইহ্রাম মুক্ত হবে তখন শিকার করতে পারো। আর তোমাদেরকে কোন গোত্রের এ শত্রুতা যে, ‘তোমাদেরকে তারা মসজিদে হারামে প্রবেশ করতে বাধা দিয়েছিলো’ যেন সীমালংঘনে প্ররোচিত না করে এবং সৎ ও খোদাভীরুতার কাজে তোমরা পরস্পরকে সাহায্য করো আর পাপ ও সীমালংঘণ একে অন্যের সাহায্য করো না এবং আল্লাহ্কে ভয় করতে থাকো নিশ্চয় আল্লাহ্র শাস্তি কঠোর।
তোমাদের উপর হারাম করা হয়েছে মড়া, রক্ত, শূকরের মাংস, ওই পশু যা যবেহ করার সময় আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কারো নাম উচ্চারন করা হয়েছে, ওই জন্তু যা শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা পড়েছে, ওই পশু যাকে ধারাল নয় এমন বস্তু দিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে, যা উপর থেকে পড়ে মারা গেছে, যে পশুকে অন্য পশু শিং দ্বারা আঘাত করে হত্যা করেছে, যেটাকে অন্য কোন হিংস্র পশু খেয়ে ফেলেছে, তবে যেগুলোকে তোমরা যবেহ্ করে নিয়েছো তা’ ব্যতীত, যা মূর্তি পূজার বেদীর উপর বলি দেয়া হয়েছে এবং জুয়ার তীর দ্বারা ভাগ নির্ণয় করা। এটা পাপ কাজ। আজ কাফিরগণ তোমাদের দ্বীন থেকে হতাশ হয়ে গেছে; সুতরাং তাদেরকে ভয় করো না এবং আমাকেই ভয় করো। আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পরিপূর্ণ করে দিলাম এবং তোমাদের উপর আমার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করলাম আর তোমাদের জন্য ইসলামকে দ্বীন মনোনীত করলাম। সুতরাং যে ব্যক্তি ক্ষুধা পিপাসার তীব্রতায় বাধ্য হয়, এভাবে যে, পাপের দিকে ধাবিত হয় না, তবে নিশ্চয় আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
হে মাহ্বূব! আপনাকে জিজ্ঞাসা করছে যে, তাদের জন্য কী হালাল করা হয়েছে। আপনি বলে দিন, ‘তোমাদের জন্য হালাল করা হয়েছে পবিত্র বস্তুসমূহ; এবং যে শিকারী জন্তুকে তোমরা শিকার শিক্ষা দিয়েছো সেগুলোকে শিকারের দিকে ধাবিত করে, যে জ্ঞান তোমাদেরকে আল্লাহ্ শিক্ষা দিয়েছেন তা থেকে সেগুলোকে শিক্ষা দিয়ে। সুতরাং তোমরা আহার করো তা থেকেই যা সেগুলো মেরে তোমাদের জন্য রেখে দেয়, এবং সেটার উপর আল্লাহ্র নাম নাও আর আল্লাহ্কে ভয় করতে থাকো। নিশ্চয় হিসাব করতে আল্লাহ্র বেশি সময় লাগে না।
আজ তোমাদের জন্য পবিত্র বস্তুসমূহ হালাল করা হলো এবং কিতাবীদের খাদ্যদ্রব্য তোমাদের জন্য হালাল। আর তোমাদের খাদ্যদ্রব্য তাদের জন্য বৈধ। এবং চরিত্রবতী মুসলিম নারীগণ আর চরিত্রবতী নারীগণ তাদেরই থেকে, যাদেরকে তোমাদের পূর্বে কিতাব দেওয়া হয়েছে-যখন তোমরা তাদেরকে তাদের মহর প্রদান করবে, বিবাহ বন্ধনে আনার জন্য, ব্যভিচারের জন্য নয় এবং উপপত্নী বানানোর জন্যও নয়। আর যে মুসলমান কাফির হয় তার কী রইলো? সব বিনষ্ট হয়ে গেলো এবং সে পরকালে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত।
হে ঈমানদারগণ! যখন তোমরা নামাযের জন্য দাঁড়াতে চাও তখন নিজ মুখমণ্ডল ধৌত করো এবং কনুই পর্যন্ত হাতও; আর মাথা মসেহ করো; এবং পায়ের গিঁঠ ধৌত করো। আর যদি তোমাদের গোসল করার প্রয়োজন হয়, তবে বিশেষভাবে পবিত্র হও; এবং তোমরা যদি পীড়িত হও অথবা সফরে থাকো অথবা তোমাদের থেকে কেউ পায়খানা-প্রস্রাবের স্থান থেকে আগমন করে অথবা তোমরা স্ত্রীর সাথে সঙ্গম করো এবং এ সমস্ত অবস্থায় পানি না পাও, তবে পবিত্র মাটি দ্বারা ‘তায়াম্মুম’ করো। তখন আপন মুখ ও হাতগুলো তা’দ্বারা মসেহ করো। আল্লাহ্ চান না যে, তোমাদের কোন কষ্ট হোক; হাঁ, এটাই চান যে, তোমাদেরকে অতিমাত্রায় পবিত্র করবেন এবং স্বীয় অনুগ্রহ তোমাদের প্রতি সম্পূর্ণ করে দেবেন, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করো।
এবং স্মরণ করো আল্লাহ্র অনুগ্রহকে তোমাদের উপর এবং ওই অঙ্গীকারকে, যা তিনি তোমাদের নিকট থেকে নিয়েছেন, যখন তোমরা বলেছিলে, ‘আমরা শুনেছি এবং মেনে নিয়েছি;’ আর আল্লাহ্কে ভয় করো। নিশ্চয় আল্লাহ্ অন্তরসমূহের কথা জানেন।
হে ঈমানদারগণ! আল্লাহর আদেশের উপর খুব অটল হয়ে যাও ন্যায় সহকারে সাক্ষ্য দিতে, তোমাদেরকে কোন সম্প্রদায়ের শত্রুতা যেন এর প্রতি প্ররোচিত না করে যে, সুবিচার করবে না। সুবিচার করো। তা আত্নসংযমের অতি নিকটতর এবং আল্লাহ্কে ভয় করো! বস্তুতঃ আল্লাহ্ তোমাদের কৃতকর্মের খবর রাখেন।
হে ঈমানদারগণ, তোমাদের উপর আল্লাহ্র অনুগ্রহকে স্মরণ করো যখন একটা সম্প্রদায় চেয়েছে যে, তোমাদের বিরুদ্ধে হস্ত সম্প্রসারণ করবে। তখন তিনি তাদের হাত তোমাদের উপর থেকে রুখে দিয়েছেন; এবং আল্লাহ্ক ভয় করো। আর মুসলমানদেরকে আল্লাহ্রই উপর ভরসা করা চাই।
এবং নিঃসন্দেহে আল্লাহ্ বনী ইস্রাঈলের নিকট থেকে অঙ্গীকার গ্রহণ করেছেন; এবং আমি তাদের মধ্য থেকে বারোজন নেতা নিযুক্ত করেছি; আল্লাহ্ এরশাদ করেছেন, ‘নিশ্চয় আমি তোমাদের সাথে আছি’। অবশ্যই তোমরা যদি নামায কায়েম রাখো, যাকাত প্রদান করো, আমার রসূলগণের উপর ঈমান আনো, তাদের প্রতি সম্মান আনো, তাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করো এবং আল্লাহ্কে উত্তম ঋণ প্রদান করো, তবে আমি অবশ্যই তোমাদের পাপ মোচন করবো এবং অবশ্যই তোমাদেরকে বেহেশ্তসমূহে নিয়ে যাবো, যেগুলোর পাদদেশে নহরসমূহ প্রবাহিত। অতঃপর এ অঙ্গীকারের পর তোমাদের মধ্যে যে ‘কুফর’ করেছে সে অবশ্যই সরল পথ থেকে বিচ্যুত হয়েছে।
অতঃপর তাদের এ কেমনই অঙ্গীকার ভঙ্গের কারণে আমি তাদেরকে অভিসম্পাত করেছি এবং তাদের হৃদয়ে কঠিন করেছি; তারা আল্লাহ্র বাণীসমূহকে সেগুলোর যথাস্থান থেকে বিকৃত করে; এবং ভুলে বসেছে ওই সব নসীহতের এক বিরাট অংশকে, যেগুলো তাদেরকে দেওয়া হয়েছে। এবং আপনি সর্বদা তাদের একটা না একটা প্রতারণা সম্বন্ধে অবহিত হতে থাকবেন অল্প সংখ্যক লোক ব্যতীত; সুতরাং তাদেরকে ক্ষমা করুন এবং উপেক্ষা করুন। নিশ্চয় সৎকর্মপরায়ণগণ আল্লাহ্র প্রিয়পাত্র।
এবং যে সব লোক দাবী করেছিলো, ‘আমরা খৃষ্টান’, আমি তাদের নিকট থেকে অঙ্গীকার নিয়েছি, তখন তারাও ভুলে গিয়েছে ওই সব উপদেশের একটা বিরাট অংশকে, যেগুলো তাদেরকে দেয়া হয়েছে। সুতরাং আমি তাদের পরস্পরের মধ্যে কিয়ামত দিবস পর্যন্ত শত্রুতা ও বিদ্বেষ ঢেলে দিয়েছি; এবং অবিলম্বে আল্লাহ্ তাদেরকে জানিয়ে দেবেন যা কিছু তারা করতো।
হে কিতাবীরা! নিশ্চয় তোমাদের নিকট আমার এ রসূল তাশ্রীফ এনেছেন, যিনি তোমাদের নিকট প্রকাশ করে দেন সেসব বস্তু থেকে এমন অনেক কিছু, যেগুলো তোমরা কিতাবের মধ্যে গোপন করে ফেলেছিলে এবং অনেক কিছু ক্ষমা করে থাকেন। নিশ্চয় তোমাদের নিকট আল্লাহ্র পক্ষ থেকে একটা ‘নূর’ এসেছে এবং স্পষ্ট কিতাব।
আল্লাহ্ তা দ্বারা সরল পথ প্রদর্শন করেন তাকেই, যে আল্লাহ্র সন্তুষ্টি মোতাবেক চলে, নিরাপত্তার পথে এবং তাদেরকে অন্ধকাররাশি থেকে (বের করে) আলোর দিকে নিয়ে যান স্বীয় নির্দেশে; এবং তাদেরকে সোজা পথ দেখান।
নিশ্চয় কাফির হয়েছে ওই সব লোক যারা বলেছে, ‘আল্লাহ্ মরিয়ম-তনয় মসীহ্ই।’ আপনি বলে দিন! ‘অতঃপর আল্লাহ্র কে কী করতে পারে, যদি তিনি এটাই চান যে, ধ্বংস করে দেবেন মরিয়ম তনয় মসীহ্ ও তার মাতা এবং সমস্ত দুনিয়াবাসীকে?’ আল্লাহ্র জন্যই রাজত্ব আসমানসমূহের ও যমীনের এবং সে দু’টির মধ্যবর্তীর (সবকিছুর)। যা চান সৃষ্টি করেন এবং আল্লাহ্ সব কিছু করতে পারেন।
এবং ইহুদী ও খৃষ্টানগণ বলেছে, ‘আমরা আল্লাহ্র পুত্র এবং তার প্রিয়’। আপনি বলে দিন, ‘অতঃপর তিনি তোমাদেরকে কেন তোমাদের পাপগুলোর উপর শাস্তি দেন? বরং তোমরা মানুষ, তার সৃষ্টি কূল থেকে। যাকে চান ক্ষমা করেন এবং যাকে চান শাস্তি দেন আর আল্লাহ্রই রাজত্ব আসমানসমূহের ও যমীনের এবং এ দু’টির মাঝখানের (সবকিছুর)। আর তারই দিকে প্রত্যাবর্তন করতে হবে’।
হে কিতাবীগণ! নিঃসন্দেহে তোমাদের নিকট আমার এ রসূল তাশরীফ এনেছেন, যিনি তোমাদের নিকট আমার বিধানসমূহ সুস্পষ্টরূপে বর্ণনা করেন, এরপর যে, রসূলগণের আগমন বহুদিন বন্ধ ছিলো, যাতে কখনো একথা না বলতে পারো যে, ‘আমাদের নিকট কোনসুসংবাদদাতা ও সাবধানকারী আসেনি।’সুতরাং এ সুসংবাদদাতা ও সাবধানকারী তোমাদের নিকট তাশরীফ এনেছেন এবং আল্লাহ্র নিকট সর্বশক্তি রয়েছে।
এবং যখন মূসা নিজ সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্যে বললো, ‘হে আমার সম্প্রদায়! তোমাদের উপর আল্লাহ্র অনুগ্রহ স্মরণ করো যে, তিনি তোমাদের মধ্য হতে পয়গাম্বর করেছেন, তোমাদেরকে বাদশাহ্ করেছেন এবং তোমাদেরকে তাই দিয়েছেন যা আজ সমগ্র জাহানের মধ্যে কাউকেও দেন নি।’
তারা বললো, ‘হে মূসা! এর মধ্যে তো বড় ক্ষমতাবান লোকেরা রয়েছে এবং আমরা তাঁতে কখনো প্রবেশ করবো না যতক্ষণ না তারা সেখানে থেকে বের হয়ে যাবে। হাঁ, তারা সেখান থেকে বের হয়ে গেলে আমরা সেখানে যাবো।’
দু’জন লোক, যারা আল্লাহ্র ভয় সম্পন্নদের অন্তর্ভুক্ত ছিলো, আল্লাহ্ তাদের প্রতি অনুগ্রহ করেছেন, বললো, ‘তোমরা জোর করেই প্রবেশদ্বারের মধ্যে তাদের উপর প্রবেশ করো। যদি তোমরা প্রবেশ-দ্বারে প্রবেশ করো, তবে বিজয় তোমাদেরই; এবং আল্লাহ্রই উপর নির্ভর করো যদি তোমাদের মধ্যে ঈমান থাকে।’
তারা বললো, ‘হে মূসা! আমরা তো সেখানে কখনো যাবো না যতক্ষণ পর্যন্ত তারা সেখানে থাকবে। সুতরাং আপনি যান এবং আপনার রব। আপনারা উভয়েই যুদ্ধ করুন।আমরা এখানেই বসে থাকবো।’
(আল্লাহ্) বললেন, ‘তবে ওই ভূমি তাদের উপর নিষিদ্ধ রইলো চল্লিশ বছর পর্যন্ত। তারা এ ভূ-খণ্ডের মধ্যে হতাশার সাথে ঘুরে বেড়াবে’। সুতরাং আপনি এ নির্দেশ অমান্যকারীদের জন্য দুঃখ করবেন না।
এবং তাদেরকে পড়ে শুনান, আদমের দু’পুত্রের সত্য সংবাদ; যখন তারা উভয়ে এক একটা ক্বোরবানী পেশ করলো; তখন একজনের (ক্বোরবানী) কবূল হলো এবং অন্য জনের কবূল হলো না। সে বললো, ‘শপথ রইলো, আমি তোমাকে হত্যা করবো।’(অপরজন) বললো, ‘আল্লাহ্ তাদের থেকেই কবূল করেন, যাদের মধ্যে (আল্লাহ্র) ভয় আছে।
নিশ্চয়, যদি তুমি তোমার হাত আমার দিকে বাড়াও আমাকে হত্যা করার জন্য, তবে আমি আপন হাত তোমার দিকে বাড়াবো না (এ জন্য) যে, তোমাকে হত্যা করবো। আমি আল্লাহ্কে ভয় করি, যিনি সমগ্র বিশ্বের মালিক।
অতঃপর আল্লাহ্ একটা কাক পাঠালেন, যা মাটি খনন করছিলো, যাতে তাকে দেখিয়ে দেয় সে কীভাবে তার ভাইয়ের লাশ পুঁতে ফেলবে। সে বললো, ‘হায়রে সর্বনাশ! আমি তো এই কাকের মতোও হতে পারলাম না যে, আমি আমার ভাইয়ের লাশ পুঁতে ফেলতাম! অতঃপর সে অনুতপ্ত হয়েই রইলো।’
এ কারণেই আমি বনী ইস্রাঈলের উপর (এ বিধান) লিখে দিলাম যে, যে ব্যক্তি প্রাণ হত্যা করলো কোন প্রাণ হত্যার বদলা ও পৃথিবী পৃষ্ঠে ফ্যাসাদ করা ছাড়াই, তখন সে যেন সকল মানুষকেই হত্যা করলো। আর যে ব্যক্তি একটা প্রাণ বাচালো, সে যন সকল মানুষকেই জীবিত রাখলো।নিশ্চয় তাদের নিকট আমার রসূলগণ স্পষ্ট প্রমাণাদি সহকারে এসেছেন। অতঃপর নিশ্চয় তাদের মধ্যে অনেকে এরপরও পৃথিবীতে সীমালংঘনকারী হয়ে রয়েছে।
যারা আল্লাহ্ এবং তার রাসূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে এবং রাজ্যের মধ্যে ধ্বংসাত্নক কাজ করে বেড়ায়, তাদের শাস্তি এই যে, তাদেরকে গুনে গুনে হত্যা করা হবে অথবা ক্রুশবিদ্ধ করা হবে অথবা তাদের একদিকের হাত ও অপরদিকের পা কেটে ফেলা হবে অথবা তাদেরকে দেশ থেকে নির্বাসিত করা হবে। এটা দুনিয়ার মধ্যে তাদের জন্য লাঞ্ছনা এবং পরকালে তাদের জন্য মহা শাস্তি রয়েছে;
নিশ্চয় ওই সব লোক, যারা কাফির হয়েছে, যা কিছু দুনিয়ায় রয়েছে সবটুকু এবং এরই সমপরিমাণ আরো কিছুও যদি তাদের মালিকানায় থাকে এ জন্য যে, তা (পণ স্বরূপ) দিয়ে কিয়ামতের শাস্তি থেকে নিজেদের প্রাণ বাচাবে, তবুও তাদের নিকট গ্রহণ করা হবে না; এবং তাদের জন্য কষ্টদায়ক শাস্তি রয়েছে।
আর যে পুরুষ কিংবা নারী চোর (সাব্যস্ত) হয়, তবে তার হাত কর্তন করো; এটা তাদের কৃতকর্মের ফল, আল্লাহ্র পক্ষ থেকে শাস্তি; এবং আল্লাহ্ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
সুতরাং যে ব্যক্তি যুল্ম করার পর তাওবা করে এবং নিজেকে সংশোধন করে নেয়, তবে আল্লাহ্ আপন অনুগ্রহ সহকারে তার প্রতি ফিরে চান। নিঃসন্দেহে আল্লাহ্ ক্ষমাশিল, দয়ালু।
তুমি কি জানো না যে, আল্লাহ্রই জন্য আসমানসমূহের বাদশাহী এবং যমীনের? শাস্তি দেন যাকে চান এবং ক্ষমা করে দেন যাকে ইচ্ছা করেন। আর আল্লাহ্ সবকিছু করতে পারেন।
হে রসূল, আপনাকে যেন দুঃখিত না করে সেসব লোক, যারা কুফরের উপর দৌঁড়ায়- কিছু লোক এমন রয়েছে, যারা নিজ মুখেবলে থাকে, ‘আমরা ঈমান এনেছি;’ অথচ তাদের অন্তর মুসলমান নয়; এবং কিছু সংখ্যক ইহুদী মিথ্যা খুব শুনে এবং ঐ সব লোকের কথা খুব শুনে যারা আপনার নিকট হাযিয় হয় নি। আল্লাহ্র বাণীগুলোকে সেগুলোর ঠিকানাসমূহে স্থির হবার পর পরিবর্তন করে দেয়। তারা বলে, ‘এ নির্দেশ পেলে তা মান্য করো এবং যদি না পাও তবে বর্জন করো’! আর আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করতে চান, তবে কখনো তুমি আল্লাহ্র নিকট তার জন্য কিছুই করতে পারবে না। এরা হচ্ছে ওই সবলোক, যাদের অন্তরকে আল্লাহ্ বিশুদ্ধ করতে চান নি। তাদের জন্য দুনিয়ায় রয়েছে লাঞ্ছনা আর তাদের জন্য আখিরাতে রয়েছে মহাশাস্তি।
(তারা) বড় মিথ্যা শ্রবণকারী, বড়ই হারামখোর। সুতরাং তারা যদি আপনার নিকট হাযির হয় তবে তাদের মধ্যে মীমাংসা করুন অথবা তাদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিন। এবং যদি তাদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন, তবে তারা আপনার কোন ক্ষতি করতে পারবে না। আর যদি তাদের মধ্যে মীমাংসা করেন তবে ন্যায়ের সাথে মীমাংসা করুন। নিশ্চয় ন্যায়বিচারককে আল্লাহ্ ভালবাসেন।
এবং তারা আপনার নিকট কি করে বিচার চাইবে, অথচ তাদের নিকট তাওহীদ রয়েছে, যার মধ্যে আল্লাহ্র নির্দেশ রয়েছে। এতদ্সত্ত্বেও তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে এবং তারা ঈমান আনয়নকারী নয়।
. নিশ্চয় আমি তাওরীত অবতীর্ন করেছি- তাঁতে হিদায়ত এবং আলো রয়েছে; সেটার বিধানানুযায়ী ইহুদীদেরকে নির্দেশ দিতেন আমার অনুগত নবীগণ, আলিমগণ ও ফিক্বহ্শাস্ত্রবিদগণ; এজন্য যে, তাদের থেকে আল্লাহ্র কিতাবের রক্ষণাবেক্ষণ চাওয়া হয়েছিলো; এবং তারা সেটারপক্ষে সাক্ষী ছিলো। সুতরাং মানুষকে ভয় করো না এবং আমাকেই ভয় করো; আর আমার আয়াতগুলোর পরিবর্তে হীন মূল্য নিও না এবং যে সব লোক আল্লাহ্ যা অবতীর্ণ করেছেন তদনুযায়ী নির্দেশ দেয় না, তারাই কাফির।
এবং আমি তাওরীতের মধ্যে তাদের উপর ওয়াজিব করেছি যে, প্রাণের বদলে প্রাণ, চোখের বদলে চোখ, নাকের বদলে নাক, কানের বদলে কান, দাঁতের বদলে দাঁত এবং যখমসমূহের বদলে অনুরূপ বদলা। অতঃপর যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় আত্নসমর্পণের মাধ্যমে ‘ক্বিসাস’ গ্রহণ করে তবে তা তার গুনাহ মোচন করে দেবে; এবং যেসব লোক আল্লাহ্র অবতীর্ণ বিধান অনুযায়ী নির্দেশ দেয় না, তবে তারা যালিম।
এবং আমি ওই নবীগণের পশ্চাতে তাদের পদচিহ্নের উপর মরিয়ম তনয় ঈসাকে এনেছি তাওরীতের সমর্থকরূপে, যা তার পূর্বে ছিলো এবং আমি তাকে ইন্জীল দান করেছি, যার মধ্যে পথপ্রদর্শন ও আলো রয়েছে এবং সমর্থন করছে তাওরীতের, যা তার পূর্বে ছিলো আর হিদায়াত ও উপদেশ খোদাভীরুদের জন্য।
এবং এটাই উচিত যে, ইন্জীলের অনুসারীরা নির্দেশ দেবে তদনুযায়ীই, যা আল্লাহ্ সেটার মধ্যে অবতারণ করেছেন। এবং যারা আল্লাহ্ যা অবতীর্ণ করেছেন তদনুযায়ী নির্দেশ দেয় না, তবে তারাই ফাসিক্ব (আল্লাহ্র নির্দেশ অমান্যকারী)।
এবং হে মাহবূব! আমি আপনার প্রতি সত্য কিতাব অবতীর্ন করেছি পূর্ববর্তি কিতাবগুলোর সমর্থকরূপে এবং সেগুলোর সংরক্ষক ও সাক্ষীরূপে। সুতরাং আল্লাহ্ যা অবতীর্ন করেছেন তা’ অনুসারে তাদের মধ্যে ফয়সালা করুন এবং হে শ্রোতা! তাদের খেয়াল খুশীর অনুসরণ করো না নিজের নিকট আগত সত্যকে ত্যাগ করে। আমি তোমাদের সবার জন্য এক একটা শরীয়ত (বিধান) এবং পথ রেখেছি আর যদি আল্লাহ্ চাইতেন, তবে তোমাদের সবাইকে একটা মাত্র উম্মতে (জাতি) পরিণত করে দিতেন; কিন্তু এটাই সাব্যস্ত হলো যে, যা কিছু তোমাদেরকে প্রদান করেছেন তা দ্বারা তোমাদেরকে পরীক্ষা করবেন। সুতরাং সৎকার্যাদির দিকে তোমরা প্রতিযোগিতা করো! আল্লাহ্রই দিকে তোমাদের সকলের প্রত্যাবর্তন। অতঃপর তিনি তোমাদেরকে বলে দেবেন যে বিষয়ে তোমরা মতভেদ করছিলে।
এবং এ’যে, হে মুসলামান! আল্লাহ্ যা অবতীর্ণ করেছেন তদানুযায়ী বিচার নিষ্পত্তি করো এবং তাদের খেয়াল খুশীর অনুসরণ করো না আর তাদের থেকে বাচতে থাকো, যাতে কখনো তারা তোমার পদস্থুলন না ঘটায় কোন বিধানের মধ্যে, যা তোমার প্রতি আল্লাহ্ অবতীর্ন করেছেন। অতঃপর তারা যদি মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে জেনে রেখো যে, আল্লাহ্ তাদের কোন গুনাহ্র শাস্তি তাদেরকে ভোগ করাতে চান; এবং নিশ্চয় অনেক লোক নির্দেশ অমান্যকারী।
হে ঈমানদারগণ! তোমরা ইহুদী ও খৃষ্টানদেরকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করো না। তারা পরস্পরের বন্ধু এবং তোমাদের মধ্য থেকে যে কেউ তাদের সাথে বন্ধুত্ব রাখে সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত। বস্তুতঃ আল্লাহ্ অন্যায়কারীদেরকে পথ দেখান না।
এখন আপনি তাদেরকে দেখবেন যাদের অন্তরে ব্যাধি রয়েছে, তারা ইহুদী ও খৃষ্টানদের প্রতি ধাবিত হচ্ছে এ বলে যে, ‘আমরা আশঙ্কা করছি যে, আমাদের উপর কোন বিপদ এসে যাবে’। সুতরাং এটা নিকটে যে, আল্লাহ্ বিজয় এনে দিবেন অথবা নিজের নিকট থেকে কোন নির্দেশ; অতঃপর ঐ সব জিনিষের উপর, যেগুলো তারা তাদের অন্তরসমূহের মধ্যে গপন করছিলো, অনুশোচনা করতে থাকবে।
এবং ঈমানদারগণ বলছে, ‘এরা কি তারাই, যারা আল্লাহ্র নামে (এ মর্মে) শপথ করেছিলো, স্বীয় শপথের মধ্যে পূর্ণ প্রচেষ্টা সহকারে যে, তারা তোমাদের সাথেই আছে’? তাদের কী রইলো? সবইতো বিনষ্ট হলো। সুতরাং তারা ক্ষতির মধ্যেই রয়ে গেলো।
হে ঈমানদারগণ! তোমাদের মধ্যে যে কেউ স্বীয় দ্বীন থেকে ফিরে যাবে, তখন অনতিবিলম্বে আল্লাহ্ এমন সব লোককে নিয়ে আসবেন, যারা আল্লাহ্র প্রিয়পাত্র এবং আল্লাহ্ও তাদের নিকট প্রিয়; তারা মুসলমানদের প্রতি কোমল এবং কাফিরদের প্রতি কঠোর। তারা আল্লাহ্র পথে জিহাদ করবে এবং কোন নিন্দুকের নিন্দার ভয় করবে না; এটা আল্লাহ্র অনুগ্রহ, যাকে চান তিনি দান করেন এবং আল্লাহ্ বিস্তৃতিময়, সর্বজ্ঞ।
হে ঈমানদারগন! তোমাদের পূর্বে যাদেরকে কিতাব দেওয়া হয়েছে তাদের মধ্যে যারা তোমাদের দ্বীনকে হাসি-তামাশা ও ক্রীড়ার বস্তুরূপে গ্রহণ করেছে তাদেরকে ও কাফিরদেরকে তোমরা বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না এবং আল্লাহকে ভয় করতে থাকো যদি ঈমান রেখে থাকো।
আপনি বলে দিন, ‘হে কিতাবীরা! তোমাদের নিকট আমাদের কি মন্দ লেগেছে? এটা নয় কি যে, ‘আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহ্র উপর এবং সেটার উপর, যা আমাদের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে এবং সেটার উপর, যা পূর্বে অবতীর্ণ হয়েছে?’ এবং এইযে, তোমাদের মধ্যে অনেকেই হুকুম অমান্যকারী।
আপনি বলে দিন, ‘আমি কি তোমাদেরকে বলে দেবো যা আল্লাহ্র নিকট এ থেকে আরো নিকৃষ্টতর পর্যায়ে আছে? ঐ সব লোক, যাদেরকে আল্লাহ্ অভিসম্পাত করেছেন, যাদের উপর তিনি ক্রোধান্বিত হয়েছেন, যাদের কতেককে করেছেন বানর ও শূকর এবং শয়তানের পূজারীরা, তাদের ঠিকানা অত্যন্ত নিকৃষ্ট এবং তারা সরল পথ থেকে সর্বাধিক বিচ্যুত।’
এবং ইহুদীগণ বললো, ‘আল্লাহ্র হাত রুদ্ধ’, তাদের হাত রুদ্ধ হোক! এবং তাদের উপর এটা বলার কারণে অভিসম্পাত করা হয়েছে;বরং তার হাত প্রশস্ত; (তিনি) দান করেন যেভাবে চান। এবং হে মাহ্বূব! যা আপনারই প্রতি আপনার রবের নিকট থেকে অবতীর্ণ হয়েছে, তাঁতে তাদের মধ্যে অনেকের ধর্মদ্রোহীতা ও কুফরের উন্নতি হবে। এবং তাদের পরস্পরের মধ্যে আমি ক্বিয়ামত পর্যন্ত শত্রুতা ও বিদ্বেষ ঢেলে দিয়েছি, যখন তারা যুদ্ধের আগুন প্রজ্জ্বলিত করে তখন আল্লাহ্ তা নির্বাপিত করেন এবং তারা ভূ-পৃষ্ঠে ফ্যাসাদ করার জন্য দৌঁড়ে বেড়ায়। আর আল্লাহ্ ধ্বংস সাধনাকারীদেরকে ভালোবাসেন না।
এবং যদি তারা প্রতিষ্ঠিত রাখতো তাওরীত ও ইন্জীলকে এবং সেটাকেও যা কিছু তাদের প্রতি তাদের রবের নিকট থেকে অবতীর্ণ হয়েছে, তবে তারা জীবিকা পেতো উপরের দিকে থেকে এবং পায়ের নিচ থেকে। তাদের মধ্য থেকে এক দল মধ্যপন্থী রয়েছে; এবং তাদের মধ্যে অনেকে অত্যন্ত নিকৃষ্ট কাজ করছে।
হে রসূল! পৌঁছিয়ে দিন যা কিছু অবতীর্ণ করা হয়েছে আপনার প্রতি রবের নিকট থেকে; এবং যদি এমন না হয় তবে আপনি তার কোন সংবাদই পৌঁছালেন না। আর আল্লাহ্ আপনাকে রক্ষা করবেন মানুষ থেকে। নিঃসন্দেহে আল্লাহ্ কাফিরদের সুপথ প্রদান করেন না।
আপনি বলে দিন! হে কিতাবী সম্প্রদায়! তোমরা কিছুই নও যতক্ষণ না তোমরা প্রতিষ্ঠা করো তাওরীত ও ইন্জীলকে এবং সেটাকে যা কিছু তোমাদের প্রতি তোমাদের রবের নিকট থেকে অবতীর্ণ হয়েছে; এবং নিঃসন্দেহে, হে মাহ্বূব! যা আপনার প্রতি আপনার রবের পক্ষ থেকে অবতীর্ণ হয়েছে, তাঁতে তাদের মধ্যে অনেকের ঔদ্ধত্য ও কুফরের আরো উন্নতি হবে। সুতরাং আপনি কাফিরদের জন্য কোন দুঃখ করবেন না।
নিশ্চয় ঐ সব লোক, যারা নিজেদেরকে মুসলমান বলে এবং অনুরূপভাবে ইহুদী, নক্ষত্র-পূজারীগণ এবং খৃষ্টানগণ; তাদের মধ্যে যে কেউ সরল অন্তরে আল্লাহ্ ও ক্বিয়ামত দিবসের উপর ঈমান আনবে এবং সৎ কর্ম করবে, তবে তাদের না থাকবে কোন ভয়, না কোন দুঃখ।
নিশ্চয়, আমি বনী ইস্রাঈল থেকে অঙ্গীকার গ্রহণ করেছি এবং তাদের প্রতি রসূল প্রেরণ করেছি। যখনই কোন রসূল তাদের নিকট এমন কোন বাণী নিয়ে এসেছেন, যা তাদের মনঃপূত হয় নি তখন তারা একদলকে অস্বীকার করেছে এবং অন্য একদলকে তারা শহীদ করে।
এবং তারা মনে করেছে যে, ‘তাদের কোন শাস্তি হবে না’। ফলে তারা অন্ধ ও বধির হয়ে গেছে। অতঃপর আল্লাহ্ তাদের তাওবা কবূল করেন। পুনরায় তাদের মধ্যে অনেকে অন্ধ ও বধির হয়ে গেছে এবং আল্লাহ্ তাদের কার্যকলাপ দেখছেন।
নিঃসন্দেহে কাফির হচ্ছে ঐ সব লোক যারা একথা বলে যে, ‘আল্লাহ্ ওই মরিয়মের পুত্র মসীহ্ই’ এবং মসীহ্তো এটাই বলেছিলো, ‘হে বনী ইস্রাঈল! আল্লাহ্র ইবাদত করো, যিনি আমার রব’। নিশ্চয় যারা আল্লাহ্র সাথে (কাউকে) শরীক সাব্যস্ত করে, তবে আল্লাহ্ তার জন্য জান্নাত নিষিদ্ধ করে দিয়েছেন এবং তার ঠিকানা হচ্ছে জাহান্নাম; আর অত্যাচারীদের জন্য কোন সাহায্যকারী নেই।
নিঃসন্দেহে কাফির ঐ সব লোক, যারা একথা বলে, ‘আল্লাহ্ তিন খোদার মধ্যে তৃতীয়’; আর খোদাতো নেই, কিন্তু (আছেন) একমাত্র এবং যদি তারা যা বলে তা থেকে নিবৃত্ত না হয়, তবে তাদের মধ্যে যারা কাফিররুপে মৃত্যুবরণ করবে তাদের নিকট নিশ্চয় বেদনাদায়ক শাস্তি পৌঁছবে।
মরিয়ম-তনয় মসীহ্ নয়, কিন্তু একজন রসূল। তার পূর্বে বহু রসূল গত হয়েছে এবং তার মাতা ‘সিদ্দীক্বাহ্’ (সত্যনিষ্ঠা)।তারা উভয়ে খাদ্যাহার করতো। দেখোতো! আমি কেমন সুস্পষ্ট নিদর্শনসমূহ তাদের জন্য বর্ণনা করছি, অতঃপর দেখো তারা কিভাবে কুঁজোহয়ে চলে যাচ্ছে;
আপনি বলুন, ‘হে কিতাবীগণ! স্বীয় দ্বীনের মধ্যে অন্যায় বর্দ্ধিত করোনা। এবং এমন লোকদের খেয়াল-খুশির অনুসরণ করোনা; যারা ইতিপূর্বে পথভ্রষ্ট হয়েছে ও অনেককে পথভ্রষ্ট করেছে এবং সরল পথ থেকে দূরে সরে গেছে।
তাদের মধ্যে আপনি অনেককে দেখবেন যে, তারা কাফিরদের সাথে বন্ধুত্ব করছে। কতই নিকৃষ্ট বস্তু নিজেদের জন্য নিজেরা অগ্রে প্রেরণ করেছেযে, তাদের উপর আল্লাহ্ ক্রোধান্বিত হয়েছেন এবং তারা শাস্তির মধ্যে চিরদিন থাকবে।
এবং তারা যদি ঈমান আনতো আল্লাহ্ ও এ নবীর উপর এবং সেটার উপর, যা তার প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে, তবে কাফিরদের সাথে বন্ধুত্ব স্থাপন করতো না; কিন্তু তাদের মধ্যে তো অনেকে ফাসিক্ব।
নিশ্চয় আপনি মুসলমানদের সবচেয়ে বড় দুশমন ইহুদী ও অংশীবাদীদেরকে পাবেন; এবং নিশ্চয় আপনি মুসলমানদের সাথে বন্ধুত্বের ক্ষেত্রে সবচেয়ে নিকটতম তাদেরকেই পাবেন যারা বলতো, ‘আমরা খ্রীস্টান’। এটা এজন্য যে, তাদের মধ্যে জ্ঞানী ও দরবেশগণ রয়েছে আর এরা অহংকার করে না।
এবং তারা যখন শুনে সেটা, যা রসূলের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে, তখন তাদের চোখগুলো দেখো অশ্রুতে ভরে উঠছে, এ কারণে যে, তারা সত্যকে চিনে নিয়েছে। তারা বলে‘হেরব আমাদের! আমরা ঈমান এনেছি। সুতরাং আমাদেরকে সত্যের সাক্ষীগণের মধ্যে লিপিবদ্ধ করে নিন।’
‘এবং আমাদের কী হয়েছে যে, আমরা ঈমান আনবো না আল্লাহ্র উপর এবং সে সত্যের উপর যা আমাদের নিকট এসেছে? আর আমরা এ প্রত্যাশা করি যে, আমাদেরকে আমাদের রব সৎকর্মপরায়ণ লোকদের অন্তর্ভুক্ত করবেন।
অতঃপর আল্লাহ্ তাদের এ স্বীকারোক্তির বিনিময়ে তাদেরকে (এমন) জান্নাতসমূহ দিলেন, যেগুলোর নিচে নহরসমূহ প্রবহমান। (তারা) সেগুলোর মধ্যে সর্বদা অবস্থান করবে। এটাই পুরস্কার সৎ লোকদের।
হে ঈমানদারগণ! তোমরা হারাম করে নিও না ওই সব পবিত্র বস্তুকে, যেগুলো আল্লাহ্ তোমাদের জন্য হালাল করেছেন এবং সীমাতিক্রম করো না। নিশ্চয় সীমাতিক্রম কারীরা আল্লাহ্র নিকট পছন্দনীয় নয়।
আল্লাহ্ তোমাদেরকে পাকড়াও করবেন না তোমাদের ভুল বুঝে শপথ করার উপর, হাঁ, ঐ সব শপথের উপর পাকড়াও করবেন যেগুলোকে তোমরা সুদৃঢ় করেছো। তখন এমন শপথের প্রায়শ্চিত্ত হচ্ছে দশজন মিসকীনকে খাধ্য দেওয়া আপন পরিবারের লোকদেরকে যা আহার করাও তার মধ্যম ধরনের, অথবা তাদেরকে কাপড় দেওয়া, অথবা একজন ক্রীতদাস মুক্ত করে দেওয়া। অতঃপর যে ব্যক্তি এসবের কোনটার সামর্থ্য রাখে না তার জন্য তিন দিনের রোযা রাখা। এটা হচ্ছে প্রায়শ্চিত্ত তোমাদের শপথসমূহের, যখম তোমরা শপথকরবে এবং স্বীয় শপথসমূহ রক্ষা করে। এভাবে আল্লাহ্ তোমাদের জন্য তার নিদর্শনসমূহ বিশদভাবে বর্ণনা করেন, যেন তোমরা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করো।
শয়তান তো এটাই চায় যে, তোমাদের মধ্যে শত্রুতা ও বিদ্বেষ ঘটাবে মদ ও জুয়ার মাধ্যমে এবং তোমাদেরকে আল্লাহ্র স্মরন ও নামাযে বাধা দেবে। তবে কি তোমরা বিরত হবে?
এবং নির্দেশ মান্য করো আল্লাহ্র, আদেশ পালন করো রসূলের এবং সতর্ক থাকো। অতঃপর যদি তোমরা ফিরে যাও, তবে জেনে রেখো- আমার রসূলের দায়িত্ব হচ্ছে শুধু স্পষ্টভাবে নির্দেশ পৌঁছিয়ে দেওয়া।
যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে, তাদের উপর কোন গুনাহ্ নেই তাঁতে যা কিছুর স্বাদ তারা গ্রহণ করেছে, যখন (আল্লাহ্কে) ভয় করে এবং ঈমান রাখে ও সৎকার্যাদি করে; পুনরায় (আল্লাহ্কে) ভয় করে ও ঈমান রাখে, পুনরায় ভয় করে ও সৎভাবে থাকে এবং আল্লাহ্ সৎ ব্যক্তিদেরকে ভালবাসেন।
হে ঈমানদারগণ! অবশ্যই আল্লাহ্ তোমাদেরকে পরীক্ষা করবেন এমন কতেক শিকার-প্রাণী দ্বারা, যেগুলো পর্যন্ত তোমাদের হাত ও বর্শা পৌঁছবে, যাতে আল্লাহ্ পরিচয় করিয়ে দেন ঐসব লোকের, যারা তাকে না দেখে ভয় করে। অতঃপর, এর পরেও ভয় করে। অতঃপর এর পরেও যে ব্যক্তি সীমালংঘন করবে তার জন্য রয়েছে বেদনাদায়ক শাস্তি।
হে ঈমানদারগণ! তোমরা শিকার জন্তু হত্যা করো না যখন তোমরা ইহরাম অবস্থায় থাকো এবং তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি সেটা ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করবে তবে তার বদলা (প্রায়শ্চিত্ত) হচ্ছে অনুরূপ গবাদি পশু থেকে প্রদান করা, তোমাদের মধ্য থেকে দু’জন নির্ভরযোগ্য লোক সেটার নির্দেশ (ফয়সালা) করবে; এটা এমন ক্বোরবানী হবে, যা কা’বায় পৌঁছবে। অথবা কাফ্ফারা দেবে-কতিপয় দরিদ্রের অন্ন, কিংবা এর সমপরিমাণ রোযা, যাতে সে আপন কৃতকর্মের কুফল ভোগ করে। আল্লাহ্ ক্ষমা করেছেন যা গত হয়ে গেছে; আর এখন যে ব্যক্তি পুণরায় করবে আল্লাহ্ তার নিকট থেকে প্রতিশোধ নেবেন; এবং আল্লাহ্ পরাক্রমশালী, প্রতিশোধ গ্রহণকারী।
হালাল করা হয়েছে তোমাদের জন্য সমুদ্রের শিকার এবং তা ভক্ষণ করা, তোমাদের ও মুসাফিরদের উপকারার্থে; এবং স্থলের শিকার তোমাদের জন্য হারাম যতক্ষণ পর্যন্ত তোমরা ইহরাম অবস্থায় থাকবে আর আল্লাহ্কে ভয় করো, যাঁর দিকে তোমরা উত্থিত হবে।
আল্লাহ্ সম্মানিত ঘর কা’বাকে মানুষের স্থিতীশীলতার কারণ করেছেন এবং সম্মানিত মাস, হেরমে প্রেরিত ক্বোরবাণীর পশু ও গলায় ঝুলন্ত চিহ্নবিশিষ্ট জন্তুসমূহকেও। এটা এ জন্য যেন তোমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করো যে, আল্লাহ্ জানেন যা কিছু আসমানসমূহে রয়েছে, এবং যা কিছু যমীনে রয়েছে; আর এটাও যে, আল্লাহ্ সব কিছু জানেন।
আপনি বলে দিন, ‘অপবিত্র এবং পবিত্র সমান নয় যদিও অপবিত্রের প্রাচুর্য তোমাকে চমৎকৃত করে। সুতরাং আল্লাহ্কে ভয় করতে থাকো হে বোধশক্তি সম্পন্নরা, যাতে তোমরা সাফল্য পাও’।
হে ঈমানদারগণ! তোমরা এমন সব বিষয়ে প্রশ্ন করো না, যেগুলো তোমাদের উপর প্রকাশ করা হলে তোমাদের খারাপ লাগবে; এবং যদি ঐ সব বিষয়ে সে সময় প্রশ্ন করো, যখন ক্বোরআন অবতীর্ণ হচ্ছে, তবে তোমাদের উপর প্রকাশ করে দেওয়া হবে। আল্লাহ্ সেগুলো ক্ষমা করে দিয়েছেন; এবং আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, সহনশীল।
আল্লাহ্ নির্ধারণ করেনি কানচেরা উষ্ট্রীকে, না মানস হিসেবে ছেড়ে দেওয়া উষ্ট্রীকে, না সাতটা বাচ্চার জননী ছাগীকে, না দশটা বাচ্চার জন্মদাতা উষ্ট্রকে। হাঁ, কাফিরগণ আল্লাহ্র প্রতি মিথ্যা রচনা করে; এবং তাদের মধ্যে অনেকে নিরেট বোধশক্তিহীন।
এবং যখন তাদেরকে বলা হয়, ‘এসো সেটার প্রতি, যা আল্লাহ্ অবতীর্ণ করেছেন; এবং রসূলের প্রতি’। (তখন) তারা বলে, ‘আমাদের জন্য সেটাই যথেষ্ট, যার উপর আমরা আমাদের পিতৃপুরুষকে পেয়েছি’। কী! যদিও তাদের পিতৃপুরুষ কিছুই না জানে এবং না থাকে সৎপথের উপর তবুও?
হে ঈমানদারগণ! তোমরা নিজেদের চিন্তা-ভাবনা রাখো। তোমাদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না ওই ব্যক্তি, যে পথভ্রষ্ট হয়েছে যখন তোমরা সৎপথে থাকো। তোমাদের সবার প্রত্যাবর্তন আল্লাহ্রই দিকে। অতঃপর তিনি তোমাদেরকে বলে দেবেন যা তোমরা করছিলে।
হে ঈমানদারগণ! তোমাদের পরস্পরের সাক্ষ্য হচ্ছে, যখন তোমাদের মধ্যে কারো নিকট মৃত্যু উপস্থিত হয়, ওসীয়ত করার সময়, তোমাদের মধ্য থেকে দু’জন নির্ভরযোগ্য ব্যক্তি অথবা তোমাদের ব্যতীত অন্য লোকদের মধ্য থেকে দু’জন, যখন তোমরা ভূ-পৃষ্ঠে সফরে যাও, অতঃপর তোমাদের নিকট মৃত্যুর বিপদ এসে পৌঁছে। ঐ দু’জনকে নামাযের পর আটক করো। তখন তারা আল্লাহ্র নামে শপথ করে বলবে, যদি তোমাদের কোনরূপ সন্দেহ হয়, এ মর্মে যে, ‘আমরা শপথের বিনিময়ে কোন সম্পদ ক্রয় করবো না, যদি সে নিকট আত্নীয়ও হয় এবং আল্লাহ্র সাক্ষ্যকে গোপন করবোনা; এমন করলে আমরা অবশ্যই পাপীদের অন্তর্ভুক্ত হবো।
অতঃপর যদি এটার হদিস মিলে যে, তারা (দু’জন) কোন অপরাধে অপরাধি হয়েছে, তবে তাদের স্থলে অপর দু’জন লোক স্থলাভিষিক্ত হবে ঐ সব লোকের মধ্য থেকে, যাদেরকে এ অপরাধ অর্থাৎ মিথ্যা সাক্ষ্য তাদের হক নিয়ে তাদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, যারা মৃত ব্যক্তির অধিক নিকটের হয়। অতঃপর তারা আল্লাহ্র শপথ করে বলবে, ‘আমাদের সাক্ষ্য অধিকতর সত্য ঐ দু’জন লোকের সাক্ষ্যের চেয়ে এবং আমরা সীমালংঘন করিনি; এমন করলে আমরা যালিমদের অন্তর্ভুক্ত হবো।’
এ (পদ্ধিতি)টা অধিকতর কাছাকাছি এ কথার যে, সাক্ষ্য যেমন হওয়া চাই তেমনিভাবে আদায় করবে, অথবা এরই ভয় করবে যে, কিছু কিছু শপথ বাতিল করে দেয়া হবে তাদের শপথগুলোর পর, এবং আল্লাহ্কে ভয় করো ও নির্দেশ শ্রবণ করো; আর আল্লাহ্ আদেশ অমান্যকারীদেরকে সরল পথ দেখান না।
যেদিন আল্লাহ্ একত্রিত করবেন রসূলগণকে অতঃপর বলবেন, ‘তোমরা কি জবাব পেয়েছো’? (তারা) আরয করবেন, ‘আমাদের কোন জ্ঞান নেই, নিঃসন্দেহে আপনিই সমস্ত অদৃশ্য সম্বন্ধে খুব জ্ঞাত’।
যখন আল্লাহ্ বলবেন, ‘হে মরিয়ম তনয় ঈসা! স্মরণ করো আমার করুণাকে তোমার উপর ও তোমার মায়ের উপর যখন আমি ‘পবিত্র আত্না’ দ্বারা তোমাকে সাহায্য করেছিলাম; তুমি মানুষের সাথে কথা বলতে দোলনায় থাকাবস্থায় ও পরিপক্ক বয়সে; এবং যখন আমি তোমাকে শিক্ষা দিয়েছি কিতাব, তাওরীত এবং ইন্জীল; আর যখন তুমি মাটির দ্বারা পাখী সদৃশ আকৃতি আমার নির্দেশে তৈরী করতে অতঃপর সেটার মধ্যে ফুঁৎকার দিতে, তখন সেটা আমার নির্দেশে উড়তে আরম্ভ করতো; এবং তুমি জন্মান্ধ ও কুষ্ঠ ব্যাধিগ্রস্তকে আমার নির্দেশে নিরাময় করতে; আর যখন তুমি মৃতদেরকে আমার নির্দেশে জীবিত বের করতে এবং যখন আমি বনী ইস্রাঈলকে তোমাকে শহীদ করা থেকে নিবৃত্ত রেখেছি; যখন তুমি তাদের নিকট উজ্জ্বল নিদর্শনসমূহ নিয়ে এসেছিলে, তখন তাদের মধ্য থেকে কাফিরগণ বললো, ‘এ তো নয়, কিন্তু সুস্পষ্ট যাদু’।
এবং যখন আমি হাওয়ারীদের অন্তরে এ প্রেরণা সৃষ্টি করেছিলাম আমার উপর এবং আমার রসূলের উপর ঈমান আনো! (তখন তারা) বললো, ‘আমরা ঈমান এনেছি এবং সাক্ষী থাকো যে, আমরা মুসলমান’।
যখন হাওয়ারীগণ বললো, ‘হে মরিয়ম তনয় ঈসা! আপনার রব কি এমন করবেন আমাদের প্রতি আকাশ থেকে একটা ‘খাদ্য ভর্তি খাঞ্চা অবতারণ করবেন?’ তিনি বললেন, ‘তোমরা আল্লাহ্কে ভয় করো, যদি ঈমান রাখো।’
(তারা) বললো, ‘আমরা চাই যে, তা থেকে আহার করবো এবং আমাদের অন্তর প্রশান্তি লাভ করবে আর আমরা সচক্ষে দেখে নেবো যে, আপনি আমাদেরকে সত্য বলেছেন এবং আমরা সেটার উপর সাক্ষী হয়ে যাবে’।
মরিয়ম তনয় ঈসা আরয করলেন, ‘হে আল্লাহ্, হে রব! আমাদের উপর আকাশ থেকে একটা ‘খাদ্য-ভর্তি খাঞ্চা’ অবতারণ করুন, যা আমাদের জন্য ঈদ (আনন্দ-উৎসব) হবে আমাদের পূর্ববর্তী ও পরবর্তীদের জন্য এবং আপনার নিকট থেকে নিদর্শন; এবং আমাদেরকে রিয্ক্ব দান করুন, আর আপনি তো সর্বশ্রেষ্ঠ জীবিকদাতা।’
আল্লাহ্ বললেন, ‘আমি তোমাদের প্রতি সেটা অবতারণ করবো। অতঃপর এখন তোমাদের মধ্য থেকে যে কেউ কুফর করবে তখন আমি তাকে এমন শাস্তি দেবো যা সমগ্র বিশ্বের মধ্যে কাউকেও দেবোনা।’
এবং যখন আল্লাহ্ বলবেন, ‘হে মরিয়ম তনয় ঈসা! তুমি কি জনগণকে বলেছিলে- তোমরা আল্লাহ্ ব্যতীত আমাকে ও আমার জননীকে দু’খোদারূপে গ্রহণ করো?’ তখন তিনি আরয করবেন, ‘পবিত্রতা আপনারই। আমার জন্য শোভা পায় না যে, ঐ কথা বলবো, যা বলার অধিকার আমার নেই, যদি আমি এমন বলতাম, তবে তা অবশ্যই আপনার জানা থাক্তো।আপনি জানেন যা আমার অন্তরে রয়েছে এবং আমি জানি না যা আপনার জ্ঞানে রয়েছে। নিঃসন্দেহে আপনিই সমস্ত অদৃশ্য সম্বন্ধে খুব জ্ঞাত।
আমি তো তাদেরকে বলিনি, কিন্তু তা-ই যা বলার আপনি আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন। তা হচ্ছে-‘তোমরা আল্লাহ্রই ইবাদত করো, যিনি আমারও রব এবং তোমাদেরও রব আর আমি তাদের সম্বন্ধে অবগত ছিলাম যতদিন যাবৎ আমি তাদের মধ্যে ছিলাম। অতঃপর যখন আপনি আমাকে উঠিয়ে নিয়েছেন তখন আপনিই তো তাদের প্রতি দৃষ্টি রাখতেন; এবং প্রতিটি বস্তু আপনার সামনে উপস্থিত।
আল্লাহ্ এরশাদ করেছেন, ‘এটা হচ্ছে ঐ দিন, যার মধ্যে সত্যবাদীদের সততা তাদের কাজে আসবে। তাদের জন্য রয়েছে জান্নাতসমূহ, যেগুলোর নিম্নদেশে নহরসমূহ প্রবহমান। তারা সদা সর্বদা সেগুলোর মধ্যে থাকবে। আল্লাহ্ তাদের উপর সন্তুষ্ট এবং তারাও আল্লাহ্র উপর সন্তুষ্ট। এটা হচ্ছে বড় সাফল্য।