সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্রই জন্য, যিনি আস্মান ও যমীন সৃষ্টি করেছেন এবং অন্ধকাররাশি ও আলো সৃষ্টি করেছেন; অতঃপর কাফিরগণ তাদের প্রতিপালকের সমকক্ষ দাঁড় করায়।
তিনিই হন, যিনি তোমাদেরকে মাটি হতে সৃষ্টি করেছেন অতঃপর একটা নির্দিষ্ট কালের হুকুম রেখেছেন এবং একটা নির্ধারিত প্রতিশ্রুতি তারই নিকট রয়েছে; অতঃপর তোমরা সন্দেহ করছো।
অতঃপর নিঃসন্দেহে তারা সত্যকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে যখন তাদের নিকট এসেছে। সুতরাং অদূর ভবিষ্যতে তাদের নিকট খবর আসবে ঐ বিষয়ে যা নিয়ে তারা ঠাট্টা বিদ্রুপ করতো।
তারা কি দেখে নি যে, আমি তাদের পূর্বে কতো মানবগোষ্ঠীকে বিনাশ করেছি? তাদেরকে আমি দুনিয়ায় ঐ প্রতিষ্ঠা দান করেছি যা তোমাদেরকে দান করিনি এবং তাদের উপর মুষলধারে বৃষ্টি বর্ষণ করেছি আর তাদের নিম্নদেশে নহরসমূহ প্রবাহিত করেছি; অতঃপর তাদেরকে তাদের পাপরাশির কারণে ধ্বংস করেছি এবং তাদের পরে অন্য নতুন মানবগোষ্ঠি সৃষ্টি করেছি।
এবং যদি আমি আপনার উপর কাগজের মধ্যে লিখিত কিছু অবতারণ করতাম, অতঃপর তারা তা তাদের হাত দ্বারা স্পর্শ করতো তবুও কাফিরগণ বলতো যে, ‘এটা তো নয়, কিন্তু স্পষ্ট যাদু’
এবং (তারা) বললো, ‘তার উপর কোন ফিরিশ্তা কেন অবতারণ করা হয় নি?’ এবং যদি আমি ফিরিশ্তা অবতারণ করতাম, তবে চূড়ান্ত ফয়সালাই হয়ে যেতো অতঃপর তাদেরকে কোন অবকাশ দেওয়া যেতো না।
এবং নিশ্চয়, হে মাহবূব! আপনার পূর্বে রসূলগণের সাথেও ঠাট্টা বিদ্রূপ করা হয়েছে। সুতরাং ঐ সব লোক, যারা তাদের ঠাট্টা-বিদ্রূপ করতো, তাদের ঠাট্টা-বিদ্রূপ তাদেরকেই পেয়ে বসেছে।
আপনি বলুন, ‘কার, যা কিছু আস্মানসমূহ এবং যমীনের মধ্যে রয়েছে?’ আপনি বলুন, ‘আল্লাহ্র’। তিনি নিজ করুণার দায়িত্বে রহমত লিপিবদ্ধ করে নিয়েছেন। নিঃসন্দেহে তোমাদেরকে ক্বিয়ামত দিবসে একত্রিত করবেন, এর মধ্যে কোন সন্দেহ নেই। ঐ সব লোক, যারা আপন প্রাণকে ক্ষতিতে ফেলেছে তারা ঈমান আনে না।
আপনি বলুন, ‘আল্লাহ্ ব্যতীত কি অন্য কাউকে অভিভাবক রূপে গ্রহণ করবো? ঐ আল্লাহ্ যিনি আস্মান ও যমীন সৃষ্টি করেছেন এবং তিনি আহার করান নিজে আহার থেকে পবিত্র’। আপনি বলুন, ‘আমি আদিষ্ট হয়েছি যেন সবার আগে আমিই আত্নসমর্পণ করি এবং যেন কখনো অংশীবাদীদের অন্তর্ভুক্ত না হই’।
আপনি বলুন, ‘সর্বশ্রেষ্ঠ সাক্ষ্য কার?’ আপনি বলে দিন! ‘আল্লাহ্ সাক্ষী আমার ও আমার প্রতি এ ক্বোরআনের ওহী এসেছে যেন আমি তা দ্বারা তোমাদেরকে সতর্ক করি এবং যে যে লোকের নিকট এটা পৌছে তাদেরকেও’। তাহলে তোমরা কি এ সাক্ষ্য দিচ্ছো যে, ‘আল্লাহ্র সাথে অন্য খোদাও রয়েছে?’ আপনি বলুন! ‘আমি এ সাক্ষ্য দিই না’। আপনি বলুন, ‘তিনি তো একমাত্র মা’বুদ এবং আমি অসন্তুষ্ট ঐগুলো থেকে যেগুলোকে তোমরা শরীক সাব্যস্ত করছো।
এবং সেই ব্যক্তির চেয়ে অধিক যালিম কে? যে আল্লাহ্ সম্বন্ধে মিথ্যা রচনা করে, অথবা তার নিদর্শনসমূহকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে। নিঃসন্দেহে যালিম সাফল্য পাবে না।
এবং তাদের মধ্যে কতেক এমন রয়েছে, যারা আপনার দিকে কান পেতে রাখে; আর আমি তাদের অন্তরসমূহের উপর আবরণ পরিয়ে দিয়েছি যেন তারা তা উপলব্ধি করতে না পারে এবং তাদের কানের মধ্যে বধিরতা; এবং যদি তারা সমস্ত নিদর্শন দেখে নেয় তবুও সেগুলোর উপর ঈমান আনবে না। এমনকি তারা যখন আপনার নিকট আপনার সাথে বিতর্ক করতে উপস্থিত হয় তখন কাফিরগণ বলে, ‘এ’তো নয়, কিন্তু পূর্ববর্তী লোকদের গল্প কাহিনী মাত্র’।
এবং আপনি যদি কখনো দেখতেন যখন তাদেরকে আগুনের উপর দাঁড় করানো হবে, তখন তারা বলবে, ‘কোন প্রকারে যদি আমাদেরকে পুনরায় প্রেরণ করা হতো এবং আপন প্রতিপালকের নিদর্শন সমূহকে মিথ্যা প্রতিপন্ন না করতাম ও মুসলমান হয়ে যেতাম’!
বরং তাদের নিকট প্রকাশ পেয়েছে যা তারা পূর্বে গোপন করতো; এবং যদিও তাদেরকে পুনরায় প্রেরণ করা হয় তবুও তারা তাই করবে যা থেকে তাদেরকে বারন করা হয়েছিলো এবং নিঃসন্দেহে তারা মিথ্যুক।
এবং কখনো আপনি যদি দেখেন, যখন তাদেরকে তাদের প্রতিপালকের সম্মুখে দাঁড় করানো হবে, (তিনি) বলবেন, ‘এটা কি সত্য নয়?’ (তারা) বলবে, ‘কেন নয়? আমাদের প্রতিপালকের শপথ!’ (তিনি) বলবেন, ‘অতঃপর এখন শাস্তি ভোগ করো তোমাদের কুফরের পরিণাম স্বরূপ’।
নিঃসন্দেহে, ক্ষতির মধ্যে রয়েছে ঐ সব লোক, যারা আপন প্রতিপালকের সাথে সাক্ষাতকে অস্বীকার করেছে, এমনকি যখন তাদের উপর ক্বিয়ামত আকস্মিকভাবে এসে গেলো, তখন তারা বললো, ‘হায় আফ্সোস আমাদের! এজন্য যে, তা মেনে নেওয়ার বিষয়কে আমরা কম গুরুত্ব দিয়েছি’। এবং তারা নিজেদের বোঝা নিজেদের পিঠের উপর বহন করে আছে। ওহে, তারা কতোই নিকৃষ্ট বোঝা বহন করে আছে!
এবং আপনার পূর্বেও রসূলগণকে অস্বীকার করা হয়েছে। তখন তারা ধৈর্যধারণ করেছিলেন এ অস্বীকার করা ও কষ্ট পাওয়ার উপর, যে পর্যন্ত তাদের নিকট আমার সাহায্য এসেছে; এবং আল্লাহ্র বাণীগুলোকে পরিবর্তনকারী কেউ নেই আর আপনার নিকট রসূলগণের খবরাদি এসেই গেছে।
এবং যদি তাদের মুখ ফিরিয়ে নেয়া আপনার নিকট কষ্টকর হয় তাহলে যদি আপনার জন্য সম্ভবপর হয়, তবে ভূ-গর্ভে কোন সুড়ঙ্গ তালাশ করুন কিংবা আসমানে কোন সিড়ি; অতঃপর তাদের জন্য নিদর্শন নিয়ে আসুন! এবং আল্লাহ্ ইচ্ছা করলে তাদেরকে হিদায়তের উপর একত্রিত করতেন। সুতরাং, হে শ্রোতা! তুমি কখনো মূর্খ হয়ো না!
এবং বললো, ‘তার উপর তার প্রতিপালকের নিকট থেকে কোন নিদর্শোন কেন অবতীর্ণ হয়নি?’ আপনি বলুন, ‘আল্লাহ্ সক্ষম এর উপর যে, তিনি কোন নিদর্শন নাযিল করবেন;’কিন্তু তাদের মধ্যে অনেকে নিরেট মূর্খ রয়েছে।
এবং নেই কোন ভূ-পৃষ্ঠে বিচরণকারী এবং নেই কোন পাখী, যা আপন ডানার সাহায্যে ওড়ে, কিন্তু সবই তোমাদের মতো উম্মত। আমি এ কিতাবের মধ্যে কোন কিছু লিপিবদ্ধ করতে ত্রুটি করি নি। অতঃপর স্বীয় প্রতিপালকের দিকে উঠানো হবে।
আপনি বলুন, ‘হাঁ, তোমরা বলো, যদি তোমাদের উপর আল্লাহ্র শাস্তি আসে অথবা কিয়ামত অনুষ্ঠিত হয়, তবে কি তোমরা আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কাউকে ডাকবে?’ যদি তোমরা সত্যবাদী হও!
এবং নিশ্চয় আমি আপনার পূর্বেও বহু জাতির প্রতি রসূল প্রেরণ করেছি; অতঃপর তাদেরকে কঠোরতা ও কষ্ট দিয়ে পাকড়াও করেছি, যাতে তারা কোন মতে হীনতা ও বিনয়ের সাথে প্রার্থনা করে।
সুতরাং কেন (এমন) হলো না যে, যখন তাদের উপর আমার শাস্তি এলো, তখন যদি অত্যন্ত বিনয়ের সাথে প্রার্থনা করতো! কিন্তু তাদের অন্তর তো কঠিন হয়ে গেছে; এবং শয়তান তাদের পর্যায়ক্রমকে তাদের দৃষ্টিতে ভাল করে দেখিয়েছে।
অতঃপর যখন তারা ভুলে গেলো ঐ সব উপদেশ যেগুলো তাদেরকে দেওয়া হয়েছিলো, তখন আমি তাদের জন্য প্রতিটি বস্তুর দ্বারগুলো উন্মুক্ত করে দিয়েছি; এমনকি, যখন তারা আনন্দিত হলো সেটার উপর, যা তারা পেয়েছিল তখন আমি অকস্মাৎ তাদেরকে পাকড়াও করলাম; তখন তারা নিরাশ হয়ে রইলো।
আপনি বলুন, ‘আচ্ছা বলোতো, ‘যদি আল্লাহ্ তোমাদের কান ও চোখ কেড়ে নেন এবং তোমাদের অন্তরগুলোর উপর মোহর করে দেন, তবে আল্লাহ্ ব্যতীত কোন খোদা আছে, যে তোমাদের এসব বস্তু এনে দেবে?’ দেখো, কী কী রূপে আমি আয়াতসমূহ বিশদভাবে বর্ণনা করি। অতঃপর তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়।
এবং আমি প্রেরণ করি না রসূলগণকে কিন্তু সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপেই; সুতরাং যারা ঈমান আনে এবং সংশোধন করে, তাদের জন্য না আছে কোন আশঙ্কা, না আছে কোন দুঃখ।
আপনি বলে দিন, ‘আমি তোমাদেরকে একথা বলি না যে, আমার নিকট আল্লাহর ধন ভাণ্ডার আছে এবং না একথা বলছি যে, আমি নিজে নিজেই অদৃশ্য বিষয়ে জেনে নিই। আর না তোমাদেরকে এটা বলছি যে, আমি ফিরিশ্তা হই। আমি তো সেটারই অনুসারী, যা আমার নিকট ওহী আসে। ‘আপনি বলুন, ‘তবে কি সমান হয়ে যাবে অন্ধ ও চক্ষুষ্মান? তবে কি তোমরা গভীরভাবে চিন্তা ভাবনা করো না ?’
এবং এ ক্বোরআন দ্বারা তাদেরকেই সতর্ক করুন, যাদের এ ভয় আছে যে, তাদেরকে তাদের প্রতিপালকের প্রতি এভাবে উঠানো হবে যে, আল্লাহ্ ব্যতীত তাদের না কোন রক্ষকারী থাকবে, না থাকবে কোন সুপারিশকারী; এ আশায় যে, তারা পরহেয্গার হয়ে যাবে।
এবং বিতাড়িত করবেন না তাদেরকে, যারা আপন প্রতিপালককে ডাকে প্রাতঃকালে ও সন্ধ্যায়, তার সন্তুষ্টি চায়। আপনার উপর তাদের হিসাব নিকাশের কিছুই নেই এবং তাদের উপরও আপনার হিসাবের কিছুই নেই; অতঃপর তাদেরকে আপনি বিতাড়িত করলে এ কাজ ন্যায় বিচার বহির্ভূত হবে।
এবং এভাবে আমি তাদের মধ্যে এককে অপরের জন্য ফিত্না রূপে স্থির করেছি যে, ধনবান কাফির দরিদ্র মুসলমানদেরকে দেখে বলবে, ‘কী এরাই, যাদের উপর আল্লাহ্ অনুগ্রহ করেছেন আমাদের মধ্য থেকে?’ আল্লাহ্ কি ভালই জানেন না সত্য মান্যকারীদেরকে?
এবং যখন আপনার নিকট তারা উপস্থিত হবে, যারা আমার নিদর্শনসমূহের উপর বিশ্বাস স্থাপন করে, তখন তাদেরকে আপনি বলুন, ‘তোমাদের উপর শাস্তি! তোমাদের প্রতিপালক নিজ করুণার দায়িত্বে রহমত অবতীর্ণ করে যে, তোমাদের মধ্যে যে কেউ মূর্খতাবশতঃ কোন মন্দকাজ করে বসে, অতঃপর এর পরে তাওবা করে নেয় এবং সৎ হয়ে যায়, তবে নিঃসন্দেহে আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, দয়ালু’।
আপনি বলুন, ‘আমাকে নিষেধ করা হয়েছে ঐ সবের ইবাদত করতে, যাদের তোমরা আল্লাহ ব্যতীত উপাসনা করো’। আপনি বলুন, ‘আমি তোমাদের কু-প্রবৃত্তির অনুসরণ করি না; এমন হলে আমি পথভ্রষ্ট হয়ে যাবো এবং সঠিক পথের উপর থাকবো না।
আপনি বলুন, ‘আমি তো আপন প্রতিপালকের নিকট থেকে স্পষ্ট প্রমাণের উপর রয়েছি এবং তোমরা সেটাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করছো। আমার নিকট নেই যা তোমরা শীঘ্রই চাচ্ছো। নির্দেশ নেই, কিন্তু আল্লাহ্র। তিনি সত্য বিবৃত করেন এবং তিনি সবচেয়ে উত্তম ফয়সালাকারী’।
আপনি বলুন, ‘যদি আমার নিকট থাকতো ঐ বস্তু, যার জন্য তোমরা তাড়াহুড়া করছো, তবে আমার ও তোমাদের মধ্যেকার মতভেদের পরিসমাপ্তি ঘটতো এবং আল্লাহ্ ভালভাবে জানেন অত্যাচারীদেরকে’।
আর তারই নিকট রয়েছে অদৃশ্য ভাণ্ডারের চাবিসমূহ। সেগুলো একমাত্র তিনিই জানেন; এবং জানেনে যা কিছু স্থলে ও জলে রয়েছে; আর যে পাতাটা ঝরে পড়ে তিনি সেটা সম্বন্ধেও অবগত। এবং এমন কোন শস্যকণা নেই যমীনের অন্ধকাররাশির মধ্যে আর না আছে এমন কোন তাজা ও শুষ্ক বস্তু, যা একটা সুস্পষ্ট কিতাবে লিপিবদ্ধ নেই।
এবং তিনিই হন, যিনি রাত্রিকালে তোমাদের রূহসমূহ হনন করেন এবং জানেন যা কিছু দিনের বেলায় অর্জন করো। অতঃপর তোমাদেরকে দিনে উঠান, যাতে নির্ধারিত সময়সীমা পরিপূর্ণ হয়। অতঃপর তারই দিকে তোমাদের প্রত্যাবর্তন হবে। অতঃপর তিনি বলে দেবেন যা তোমরা করতে।
এবং তিনিই পরাক্রমশালী আপন বান্দাদের উপর আর তোমাদের উপর রক্ষক প্রেরণ করেন; অবশেষে যখন তোমাদের মধ্য থেকে কারো নিকট মৃত্যু উপস্থিত হয়, তখন আমার ফিরিশ্তাগণ তার রূহ্ হনন করে এবং তারা ত্রুটি করে না।
আপনি বলুন! ‘তিনি কে হন, যিনি তোমাদেরকে রক্ষা করেন স্থল ও সমুদ্রের বিপদাপদ থেকে , যাকে তোমরা ডাকছো কাতরভাবে এবং নীরবে যে, ‘যদি তিনি আমাদেরকে তা থেকে রক্ষা করেন, তবে আমরা অবশ্যই কৃতজ্ঞতা স্বীকার করবো’।
আপনি বলুন, ‘তিনিই সক্ষম তোমাদের প্রতি শাস্তি প্রেরণ করতে তোমাদের উপর থেকে কিংবা তোমাদের পায়ের নিচে থেকে, অথবা তোমাদেরকে বিভিন্ন দলে বিভক্ত করে দিতে এবং এককে অপররের কঠোর নিপীড়নের আস্বাদ গ্রহন করাতে’। দেখো, আমি কীভাবে বিভিন্ন প্রকারে আয়তগুলো বিবৃত করছি, যাতে কখনো তাদের বোধশক্তির উদয় হয়।
এবং হে শ্রোতা! যখন তুমি তাদেরকে দেখবে, যারা আমার নিদর্শনসমূহের মধ্যে লেগে আছে, তখন তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে যে পর্যন্ত না তারা অন্য প্রসঙ্গে লিপ্ত হয়, এবং যখনই তোমাকে শয়তান ভুলিয়ে দেবে, অতঃপর স্মরণে আসতেই যালিমদের নিকটে বসো না!
এবং বর্জন করো তাদেরকে, যারা নিজেদের দ্বীনকে খেলা তামাশারূপে গ্রহণ করেছে আর তাদেরকে পার্থিব জীবন প্রতারিত করেছে; এবং ক্বোরআন থেকে তাদেরকে উপদেশ দাও যাতে কখনো কোন প্রাণ নিজের কৃতকর্মের জন্য গ্রেফতার না হয়। আলাহ ব্যতীত তার জন্য না কোন অভিভাবক থাকবে, না কোন সুপারিশকারী; আর যদি নিজের বিনিময়ে সবকিছুও দেয় তবুও তার নিকট থেকে গ্রহণ করা হবে না। এরা হচ্ছে তারাই; যাদেরকে তাদের কৃতকর্মের উপর পাকড়াও করা হয়েছে। তাদের জন্য রয়েছে অত্যুষ্ণ পানিয় এবং বেদনাদায়ক শাস্তি, তাদের কুফরের বদলা স্বরূপ।
আপনি বলুন, ‘আমরা কি আল্লাহ্ ব্যতীত এমন কিছুর উপাসনা করবো, যা আমাদের না কোন উপকার করতে পারে, না অপকার? এবং আমাদেরকে কি পশ্চাদপদে ফিরিয়ে দেওয়া হবে এর পরে যে, আল্লাহ্ আমাদেরকে সৎপথ দেখিয়েছেন তারই মতো, যাকে শয়তান যমীনের মধ্যে পথ ভুলিয়ে দিয়েছে, হতবুদ্ধি হয়ে আছে?’ তার সাথী তাকে পথের দিকে আহ্বান করছে, ‘এদিকে এসো!’ আপনি বলুন, ‘আল্লাহ্র হিদায়তই হিদায়ত এবং আমাদেরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যেন আমরা তার জন্য গর্দান ঝুঁকিয়ে দিই, যিনি প্রতিপালক সমগ্র বিশ্বের’।
এবং তিনিই, যিনি আস্মান ও যমীনকে যথাযথভাবে সৃষ্টি করেছেন; আর যেদিন প্রতিটি ধ্বংসপ্রাপ্ত বস্তুর উদ্দেশ্যে বলবেন, ‘হয়ে যাও!’ সেটা তখনই হয়ে যাবে। তার বাণী সত্য; এবং তারই রাজত্ব হবে যেদিন শিঙ্গায় ফুঁৎকার দেওয়া হবে; প্রতিটি গোপন ও প্রকাশ্য সম্বন্ধে জ্ঞান। এবং তিনিই প্রজ্ঞাময়, অবহিত।
এবং স্মরণ করুন, যখন ইব্রাহিম আপন পিতা আযরকে বললো, ‘তুমি কি মূর্তিগুলোকে খোদা বানাচ্ছো? নিঃসন্দেহে আমি তোমাকে ও তোমার সম্প্রদায়কে সুস্পষ্ট ভ্রান্তির মধ্যে পাচ্ছি’।
অতঃপর যখন তার উপর রাতের অন্ধকার নেমে এলো তখন একটা নক্ষত্র দেখলেন। বললেন, ‘এটাকেই কি আমার প্রতিপালক স্থির করছো?’ অতঃপর যখন তা অস্তমিত হলো তখন বললেন, ‘আমি পছন্দ করি না যা অস্তমিত হয়’।
অতঃপর যখন চাদকে চমকিত অবস্থায় দেখলেন তখন বললেন, ‘এটাকেই কি আমার প্রতিপালক স্থির করছো?’ অতঃপর যখন তা অস্তমিত হলো, তখন বললেন, ‘যদি না আমাকে আমার প্রতিপালক হিদায়ত করতেন, তবে আমিও সেই পথভ্রষ্টদের অন্তর্ভুক্ত হতাম’।
অতঃপর যখন সূর্যকে ঝিলিমিলি করতে দেখলেন তখন বললেন, ‘এটাকে কি আমার প্রতিপালক বলছো? এটাতো সেগুলো অপেক্ষা বড়’। অতঃপর যখন সেটা অস্তমিত হলো, তখন বললেন, ‘হে আমার সম্প্রদায়। আমি অসন্তুষ্ট ঐ সব বস্তুর প্রতি, যেগুলোকে তোমরা শরীক স্থির করছো।
এবং তার সম্প্রদায় তার সাথে বিতর্ক করতে লাগলো। (তিনি) বললেন, ‘তোমরা কি আল্লাহ্ সম্বন্ধে আমার সাথে বিতর্ক করছো? তিনি তো আমাকে পথ বাতলিয়ে দিয়েছেন এবং আমার নিকট ঐ সবের ভয় নেই, যেগুলোকে তোমরা (তার) শরীক বলছো; হাঁ, কোন বিষয়ে আমারই প্রতিপালক যা চান। আমার প্রতিপালকের জ্ঞান সব কিছুকে পরিবেষ্টনকারী, তোমরা কি উপদেশ মানবে না?
আমি তোমাদের শরীকদেরকে কীভাবে ভয় করবো? আর তোমরা (এতে) ভয় করছো না যে, তোমরা আল্লাহ্র শরীক ওটাকেই স্থির করছো, যার সম্পর্কে তোমাদের উপর তিনি কোন সনদ অবতীর্ণ করেন নি। সুতরাং দু’দলের মধ্যে নিরাপত্তার অধিক উপযোগী কে? যদি তোমরা জানো।
এবং এটা আমার দলীল যে, আমি ইব্রাহীমকে তার সম্প্রদায়ের মোকাবেলায় দান করেছি। আমি যাকে চাই বহু মর্যাদায় উন্নীত করি। নিঃসন্দেহে, আপনার প্রতিপালক জ্ঞান ও প্রজ্ঞার অধিকারী।
এবং আমি তাকে ইসহাক্ব ও ইয়া’কুবকে দান করেছি। তাদের সবাইকে আমি সৎপথ দেখিয়েছি এবং তাদের পূর্বে নূহকে সৎপথ প্রদর্শন করেছি আর তার সন্তানদের মধ্য থেকে দাঊদ, সুলায়মান, আইয়ূব, ইয়ূসুফ, মূসা এবং হারূনকেও;এবং আমি অনুরূপভাবে প্রতিদান দিয়ে থাকি সৎকর্মপরায়ণদেরকে।
এরা হচ্ছে ঐ সব লোক, যাদেরকে আমি কিতাব, ফয়সালা করার ক্ষমতা ও নুবূয়ত প্রদান করেছি; অতঃপর যদি এসব লোক তা অস্বীকার করে, তবে আমি সেটার জন্য এমন একটা জনগোষ্ঠীকে নিয়োজিত রেখেছি যারা অস্বীকারকারী নয়।
এরা হচ্ছে এমন সব লোক, যাদেরকে আল্লাহ্ হিদায়াত করেছেন। সুতরাং আপনি তাদেরই পথে চলুন। আপনি বলে দিন, ‘আমি ক্বোরআনের জন্য তোমাদের নিকট কোন পারিশ্রমিক চাইনা’। তাতো নয়, কিন্তু উপদেশ সমগ্র বিশ্বের জন্য।
এবং ইহুদীগন আল্লাহ্র প্রকৃত মর্যাদা জানে নি যেমন জানা উচিত ছিলো। যখন তারা বললো, ‘আল্লাহ্ কোন মানুষের উপর কিছুই অবতারণ করেন নি। আপনি বলুন, ‘কে অবতারণ করলো সেই কিতাব, যা মূসা নিয়ে এসেছিলো, আলো ও মানুষের জন্য হিদায়তরূপে; যার তোমরা পৃথক পৃথক কপি তৈরী করে নিয়েছো; সেগুলোকে প্রকাশ করছো এবং অনেক কিছু গোপন করছো আর তোমাদেরকে সেটাই শিক্ষা দেওয়া হয় যা না তোমাদের জানা ছিলো, না তোমাদের পিতৃপুরুষদের’? ‘আল্লাহ্’ বলুন! অতঃপর, তাদেরকে ছেড়ে দিন তাদের অনর্থক কাজের মধ্যে খেলতে।
এবং এটা বরকতময় কিতাব, যা আমি অবতারণ করেছি, প্রত্যায়নকারী ঐ সব কিতাবের যেগুলো পূর্বে ছিলো; এবং এ জন্য যে, আপনি সতর্ক করবেন ‘সমস্ত বস্তির সরদার’কে এবং তাকে যে সমগ্র জাহানে সেটার চতুর্পাশে রয়েছে; এবং যারা পরকালের উপর ঈমান আনে তারা ঐ কিতাবের উপর ঈমান আনে এবং নিজেদের নামাযের সংরক্ষণ করে।
এবং তার চেয়ে বড় যালিম কে, যে আল্লাহ্ সম্বন্ধে মিথ্যা রচনা করে? অথবা বলে, ‘আমার প্রতি ওহী হয়েছে’; অথচ তার প্রতি কোন ওহী হয় নি; এবং যে বলে, ‘এখনই আমি অবতীর্ন করছি তেমনি, যেমন আল্লাহ্ অবতীর্ণ করেছেন;’ এবং কখনো আপনি দেখতে পাবেন, যখন যালিম মৃত্যু যন্ত্রণা ভুগতে থাকে এবং ফিরিশ্তাগণ হাত বিস্তার করে রয়েছেন ‘বের করো নিজেদের প্রাণসমূহ আজ তোমাদেরকে লাঞ্ছনার শাস্তি দেওয়া হবে এর পরিণামস্বরূপ যে, আল্লাহ্র উপর মিথ্যারোপ করছিলে এবং তার আয়াতগুলো থেকে অহংকার করতে’।
এবং নিশ্চয় তোমরা আমার নিকট নিঃসঙ্গ অবস্থায় এসেছো যেমন আমি তোমাদেরকে প্রথমবার সৃষ্টি করেছিলাম; আর পৃষ্ঠ-পশ্চাতে ফেলে এসেছো যে ধন সম্পদ আমি তোমাদেরকে দিয়েছিলাম; এবং আমি তোমাদের সাথে তোমাদের ঐ সুপারিশকারীদেরকে দেখছি না, যাদেরকে তোমরা নিজেদের মধ্যে শরীক মনে করতে। নিশ্চয় তোমাদের পরস্পরের মধ্যেকার সম্পর্কের রশি কেটে গেছে এবং তোমাদের নিকট থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে যা দাবী করছিলে।
নিশ্চয় আল্লাহ্ শস্যবীজ ও আটি ভেদ করে অঙ্কুর উৎপাদনকারী, জীবন্তকে মৃত থেকে এবং মৃতকে জীবন্ত থেকে নির্গতকারী। ইনিই হন আল্লাহ্; তোমরা কোথায় উল্টো দিকে যাচ্ছো?
এবং তিনিই হন, যিনি তোমাদের জন্য নক্ষত্ররাজি সৃষ্টি করেছেন যেন সেগুলো দ্বারা সঠিক পথের দিশা পাও স্থল ও সমুদ্রের অন্ধকারে। আমি নিদর্শনসমূহ বিশদভাবে বিবৃত করেছি জ্ঞানীদের জন্য।
এবং তিনিই হন,যিনি তোমাদেরকে একই প্রাণ (সত্ত্বা) থেকে সৃষ্টি করেছেন অতঃপর কোথাও তোমাদেরকে অবস্থান করতে হবে এবং কোথাও গচ্ছিত থাকতে হবে। নিশ্চয় আমি বিশদভাবে নিদর্শনসমূহ বিবৃত করেছি বুদ্ধিসম্পন্ন লোকদের জন্য।
এবং তিনিই হন, যিনি আস্মান থেকে বারি বর্ষণ করেছেন। অতঃপর আমি তা দ্বারা প্রতিটি উদ্ভিদ উদ্গম করেছি; অনন্তর তা থেকে উদ্গত করেছি; সব্জি, যা থেকে শস্যদানা উৎপাদন করি একটা অপরের উপর চড়াবস্থায়; এবং খেজুরের মাথি থেকে পাশাপাশি গুচ্ছ; এবং আঙ্গুরের বাগান; এবং যায়তূন ও আনার কোন কোন বিষয়ে সদৃশ ও কোন কোন বিষয়ে বিসদৃশ। সেটার ফলের দিকে লক্ষ্য করো যখন ফলবান হয় এবং সেটার পরিপক্ক হবার প্রতি। নিশ্চয় এর মধ্যে নিদর্শনসমূহ রয়েছে ঈমানদারদের জন্য।
এবং তারা আল্লাহ্র শরীক স্থির করেছে জিন্দেরকে, অথচ তিনিই তাদেরকে সৃষ্টি করেছেন এবং তার জন্য পুত্র ও কন্যা সন্তান গড়ে নিয়েছে মূর্খতাবশতঃ তিনি পবিত্র ও ঐ সব কথাবার্তার ঊর্ধ্বে, যেগুলো তারা বলে থাকে।
কোন নমূনা ব্যতিরেকেই আস্মানসমূহ ও যমীনের স্রষ্টা; তার সন্তান হবে কোত্থেকে? অথচ তার কোন স্ত্রী নেই; এবং তিনি প্রত্যেক বস্তু সৃষ্টি করেছেন আর তিনি সবকিছু জানেন।
তোমাদের নিকট, চোখ খুলে দেয় এমন প্রমাণাদি এসেছে তোমাদের প্রতিপালকের নিকট থেকে; সুতরাং যে ই দেখেছে তা তার নিজেরই মঙ্গলার্থে দেখেছে এবং যে অন্ধ হয়েছে সে নিজেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে; এবং আমি তোমাদের রক্ষক নই।
এবং আমি এমনভবে নিদর্শনসমূহ বিভিন্ন ভাবে বর্ণনা করি এবং এই জন্য যে, কাফিরগণ বলে উঠবে, ‘আপনি তো অধ্যয়ন করেছেন, ‘এবং এ জন্য যে, সেটাকে জ্ঞানীদের সম্মুখে সুস্পষ্ট করে দিই।
এবং তোমরা ঐ সবকে গালি দিও না, যে গুলোর তারা আল্লাহ্ ব্যতীত পূজা করছে; কেননা, তারা আল্লাহ্র শানে বেয়াদবী করবে সীমালঙ্ঘন ও মূর্খতাবশতঃ। এভাবে প্রত্যেক সম্প্রদায়ের দৃষ্টিতে আমি তাদের কার্যকলাপকে সুশোভন করেছি; অতঃপর, তাদের প্রতিপালকের নিকট তাদেরকে প্রত্যাবর্তন করতে হবে; এবং তিনি তাদেরকে বলে দেবেন যা তারা করতো।
এবং তারা আল্লাহ্র নামে শপথ করেছে, নিজেদের শপথের মধ্যে পূর্ণ প্রচেষ্টা সহকারে, এ মর্মে যে, যদি তাদের নিকট কোন নিদর্শন আসে, তবে অবশ্যই যেন সেটার উপর ঈমান আনে। আপনি বলে দিন যে, নিদর্শনসমূহ তো আল্লাহ্রই নিকট; এবং তোমাদের কি জানা আছে যে, যখন সেগুলো আসবে তখন তারা ঈমান আনবে না?
এবং যদি আমি তাদের প্রতি ফিরিশ্তা অবতারণ করতাম এবং তাদের সাথে মৃতরা কথা বলতো আর আমি সকল বস্তুকে তাদের সম্মুখে উঠিয়ে আন্তাম তবুও তারা ঈমান আনয়নকারী ছিলো না, কিন্তু আল্লাহ্ ইচ্ছা করলে; কিন্তু তাদের মধ্যে অনেকেই নিরেট মূর্খ।
এবং এরূপে, আমি প্রত্যেক নবীর শত্রু করেছি মানবকুল ও জিন্দের মধ্যেকার শয়তানকে, তাদের মধ্যে একে অপরকে প্রতারনার উদ্দেশ্যে বানোয়াট কথাবার্তার প্ররোচিত করে আর আপনার প্রতিপালক ইচ্ছা করলে তারা এমন করতো না। সুতরাং তাদেরকে তাদের মিথ্যা রচনার উপর ছেড়ে দিন।
তবে কি আমি আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কারো মীমাংসা চাইবো? এবং তিনিই হন,যিনি তোমাদের প্রতি বিশদভাবে কিতাব অবতীর্ন করেছেন; আর যাদেরকে আমি কিতাব দিয়েছি তারা জানে যে, এটা তোমার প্রতিপালকের নিকট থেকে সত্য অবতীর্ণ হয়েছে। সুতরাং হে শ্রোতা! তুমি কখনো সন্দিহানদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না।
এবং হে শ্রোতা, ভূ-পৃষ্ঠে অধিকাংশ লোক এমনই রয়েছে যে, যদি তুমি তাদের কথা মতো চলো, তবে তারা তোমাকে আল্লাহ্র পথে থেকে বিচ্যুত করে ফেলবে। তারা তো শুধু অনুমানের পেছনে রয়েছে এবং নিরেট কল্পনার ঘোড়া দৌঁড়াচ্ছে।
তোমাদের কী হয়েছে যে, তা থেকে আহার করছোনা, যার উপর আল্লাহ্র নাম উচ্চারণ করা হয়েছে? তিনি তো তোমাদের নিকট বিশদভাবে বিবৃত করেছেন যা কিছু তোমাদের উপর হারাম হয়েছে, কিন্তু যখন তোমরা তাঁতে নিরুপায় হও; এবং নিঃসন্দেহে অনেকে নিজেদের খেয়াল খুশী দ্বারা বিপথগামী করেদেয় অজ্ঞানবশতঃ; নিশ্চয় তোমার প্রতিপালক সীমা-লঙ্ঘনকারীদেরকে খুব জানেন।
এবং সেটা আহার করোনা,যার উপর আল্লাহ্র নাম উচ্চারণ করা হয়নি এবং সেটা নিশ্চয় নির্দেশ অমান্য করা এবং নিশ্চয় শয়তান স্বীয় বন্ধুদের অন্তরে এ প্ররোচনা দেয় যেন তোমাদের সাথে বিবাদ করে এবং তোমরা যদি তাদের কথা মান্য করো তবে তখন তোমরা অংশীবাদী হবে।
এবং যে ব্যক্তি মৃত ছিলো, অতঃপর আমি তাকে জীবিত করেছি এবং তার জন্য একটা আলো সৃষ্টি করে দিয়েছি, যা দ্বারা সে মানুষের মধ্যে চলাফেরা করে সে কি ঐ ব্যক্তির ন্যায় হয়ে যাবে, যে অন্ধকাররাজিতে রয়েছে, তা থেকে বের হবার নয়? এভাবে কাফিরদের দৃষ্টিতে তাদের কৃতকর্মসমূহ শোভন করে দেয়া হয়েছে।
এবং সেভাবে, প্রত্যেক জনপদে আমি সেটার অপরাধীদের সর্দার করেছি, যেন তারা সেখানে চক্রান্ত করে। আর, তারা চক্রান্ত করে না কিন্তু নিজেদের আত্নার বিরুদ্ধে; এবং তাদের উপলব্ধি নেই।
এবং যখন তাদের নিকট কোন নিদর্শন আসে তখন বলে, ‘আমরা কখনো ঈমান আনবো না যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদেরকেও তেমনি দেওয়া হবে না, যেমন আল্লাহ্র রসূলগণকে দেওয়া হয়েছে; আল্লাহ্ ভালো জানেন কোথায় আপন রিসালতকে স্থাপন করবেন; অনতিবিলম্বে অপরাধীদের প্রতি আল্লাহ্র নিকট লাঞ্ছনা পৌঁছাবে এবং কঠোর শাস্তি, তাদের চক্রান্তের বদলা হিসেবে।
এবং যাকে আল্লাহ্ সৎপথ দেখাতে চান তার বক্ষদেশকে ইসলামের জন্য প্রশস্ত করে দেন আর যাকে পথভ্রষ্ট করতে চান তার বক্ষকে সংকীর্ণ, খুব সংকোচিত করে দেন, যেন (সে) কারো দ্বারা জোরপূর্বক আস্মানের উপর আরোহন করছে। আল্লাহ্ এরূপে শাস্তি আপতিত করেন তাদের উপর, যারা ঈমান আনে না।
এবং যেদিন তিনি তাদের সবাইকে উঠাবেন আর বলবেন, ‘হে জিন্ সম্প্রদায়! তোমরা অনেক মানুষকে পরিবেষ্টিত করে নিয়েছো’ এবং তাদের বন্ধু মানুষগণ আরয করবে, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের মধ্যে একে অপরের দ্বারা লাভবান হয়েছে এবং আমরা আমাদের ঐ সময়সীমায় পৌছে গেছি যা আপনি আমাদের জন্য নির্ধারন করেছেন’। (আল্লাহ্) বলবেন, ‘আগুন তোমাদের ঠিকানা, সর্বদা সেটার মধ্যে থাকো; কিন্তু যাকে আল্লাহ্ চান। হে মাহ্বূব! নিঃসন্দেহে আপনার প্রতিপালক প্রজ্ঞাময়, জ্ঞানী।
হে জিন ও মানব সম্প্রদায়! তোমাদের নিকট কি তোমাদের মধ্য থেকে রসূলগণ আসেন নি, যারা তোমাদের উপর আমার আয়াতসমূহ পাঠ করতেন এবং তোমাদেরকে এ দিনের সাক্ষাৎ সম্বন্ধে সতর্ক করতেন? (তারা) বলবে, ‘আমরা আমাদের আত্নাগুলোর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছি; এবং তাদেরকে পার্থিব জীবন প্রতারিত করেছে এবং নিজেরা নিজেদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে যে, তারা কাফির ছিলো।
এবং হে মাহ্বূব! আপনার প্রতিপালক বেপরোয়া দয়াশীল। হে লোকেরা! তিনি ইচ্ছা করলে তোমাদেরকে অপসারিত করতে পারেন এবং যাকে চান তোমাদের স্থলাভিষিক্ত করতে পারেন, যেমনিভাবে তোমাদেরকে অন্যান্যদের বংশ থেকে সৃষ্টি করেছেন।
বলুন, ‘হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা আপন স্থানে কাজ করতে থাকো, আমিও আমার কাজ করছি। সুতরাং এখন তোমরা জানতে চাচ্ছো কার জন্য থাকছে আখিরাতের ঘর; নিঃসন্দেহে যালিম সাফল্য পায় না’।
এবং আল্লাহ্ যে ক্ষেত ও গবাদি পশু সৃষ্টি করেছেন, সেটার মধ্যে তারা তাকে একটা অংশের প্রাপক সাব্যস্ত করেছে, তখন বললো, ‘এটা আল্লাহ্রই, তাদের ধারণার মধ্যে এবং এটা আমাদের শরীকদের (দেবতার)’। সুতরাং সেটা, যা তাদের শরীকদের জন্য,তাতো আল্লাহ্র কাছে পৌঁছে না এবং যা আল্লাহ্র জন্যই তা তাদের শরীকদের নিকট পৌছে। তারা কতোই মন্দ ফয়সালা দিচ্ছে।
এবং এরূপে বহু অংশীবাদীর দৃষ্টিতে তাদের শরীকগণ সন্তান হত্যাকে শোভন করে দেখিয়েছে যেন তাদেরকে ধ্বংস কর দেয় এবং তাদের ধর্মকে তাদের নিকট সন্দেহপূর্ণ করে তোলে; এবং আল্লাহ্ ইচ্ছা করলে তারা এমন করতো না। সুতরাং আপনি তাদেরকে ছেড়ে দিন তারা থাকুক আর তাদের মিথ্যা রচনা।
এবং তারা বললো, ‘এসব গবাদি পশু ও ক্ষেত নিষিদ্ধ; এগুলোকে তারাই খাবে, যাকে আমরা ইচ্ছা করি,’ তাদের মিথ্যা ধারণা অনুসারে। এবং কতেক গবাদি পশু রয়েছে, যেগুলোর পৃষ্ঠে আরোহন করা হারাম সাব্যস্ত করেছে; আর কতেক পশু যবেহ করার সময় তারা আল্লাহ্র নাম বলে না; এসবই হচ্ছে আল্লাহ্র নামে মিথ্যা রচনা করা। অনতিবিলম্বে তিনি তাদেরকে প্রতিফল প্রদান করবেন তাদের মিথ্যা রচনাদির।
এবং তারা বলে, ‘যা এসব গবাদি পশুর গর্ভে রয়েছে, তা শুধু আমাদের পুরুষদের জন্যই এবং তা আমাদের স্ত্রীদের জন্য হারাম। আর যদি মৃত অবস্থায় বের হয় তবে তারা সবাই তাঁতে অংশীদার। শীঘ্রই আল্লাহ্ তাদেরকে তাদের এসব উক্তির প্রতিফল দেবেন। নিশ্চয় তিনি প্রজ্ঞাময়, জ্ঞানী।
নিশ্চয় ধ্বংস হয়েছে তারাই, যারা নিজেদের সন্তানদেরকে হত্যা করে নির্বুদ্ধিতাসুলভ মূর্খতাবশতঃ এবং হারাম সাব্যস্ত করে ঐ বস্তুকে, যা আল্লাহ্ তাদেরকে জীবিকা দিয়েছেন আল্লাহ্ সম্পর্কে মিথ্যা রচনার উদ্দেশ্যে। নিঃসন্দেহে তারা বিপথগামী হয়েছে এবং পথ পায়নি।
এবং তিনিই হন, যিনি সৃষ্টি করেছেন উদ্যানসমূহ, কিছু যমীনের উপর ছাইয়ে নেই আর খেজুরবৃক্ষ ও ক্ষেত, যাতে রয়েছে রং বেরং এর খাদ্য এবং যায়তূন ও আনার কোন কোন বিষয়ে একে অন্যের সাথে সদৃশ এবং কোন কোন বিষয়ে বিসদৃশও। আহার করো সেটার ফল যখন ফলবান হয় আর সেটার প্রাপ্য প্রদান করো যেদিন তা কাটবে এবং অযথা ব্যয় করো না। নিশ্চয়, অযথা ব্যয়কারীগণ তার পছন্দনীয় নয়।
আর গবাদি পশুর মধ্যে কতেক ভারবাহী এবং কতেক যমীনের উপর বিছানো; আহার করো তা থেকে, যা আল্লাহ্ তোমাদেরকে জীবিকা দিয়েছেন এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। নিঃসন্দেহে সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।
আটটা নর ও মাদি এক জোড়া ভেড়ার এবং এক জোড়া ছাগলের। আপনি বলুন, ‘তিনি কি নর দু’টিকে হারাম করেছেন কিংবা মাদি দু’টিকে, অথবা ওটাকে, যা মাদি দু’টি গর্ভে ধারণ করেছে? কোন জ্ঞান দ্বারা বলো যদি তোমরা সত্যবাদী হও’।
এবং এক জোড়া উটের এবং এক জোরা গরুর। আপনি বলুন, ‘তিনি কি নর দু’টি হারাম করেছেন, না মাদি দু’টিকে, কিংবা ওটাকে, যা মাদি দু’টি গর্ভে ধারণ করেছে? তোমরা কি উপস্থিত ছিলে যখন আল্লাহ্ তোমাদেরকে এ নির্দেশ দিয়েছেন?’ সুতরাং তার চেয়ে বড় যালিম আর কে, যে আল্লাহ্ সম্বন্ধে মিথ্যা রচনা করে, যেন লোকদেরকে নিজ মূর্খতা দ্বারা পথভ্রষ্টতা করে? নিঃসন্দেহে আল্লাহ্ যালিমদেরকে পথ দেখান না।
আপনি বলুন! ‘আমার প্রতি যে ওহী হয়েছে তা’তে কোন আহারকারীর উপর আমি কোন খাদ্য নিষিদ্ধ পাচ্ছি না কিন্তু মৃত হলে, অথবা শিরা উপশিরা থেকে প্রবহমান রক্ত, অথবা শূকরের মাংস ওটা অপবিত্র, অথবা ঐ অবাধ্যতার পশু, যাকে যবেহ করার সময় আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কারো নাম উচ্চারণ করা হয়েছে’। সুতরাং, যে নিরুপায় হয়েছে, এমন নয় যে, নিজেই তাঁতে আগ্রহ প্রকাশ করে এবং এমনও নয় যে, প্রয়োজনীয়তার সীমালঙ্ঘন করে; তাহলে নিশ্চয় আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
এবং ইহুদীদের জন্য আমি হারাম করেছি প্রত্যেক নখ বিশিষ্ট পশু এবং গরু ও ছাগলের চর্বিও তাদের জন্য নিষিদ্ধ করেছিলাম; কিন্তু যা সেগুলোর পিঠের মধ্যে লেগে থাকে, অথবা অন্ত্র কিংবা অস্থির সাথে সংলগ্ন থাকে। আমি এটা তাদেরকে তাদের অবাধ্যতার প্রতিফল দিয়েছি এবং নিশ্চয় নিশ্চয় আমি সত্যবাদী।
এখন মুশরিকগণ বলবে, ‘আল্লাহ্ ইচ্ছা করলে না আমরা শির্ক করতাম, না আমাদের পিতৃপুরুষগণ; না আমরা কোন কিছু হারাম সাব্যস্ত করতাম’। এ রূপেই, তাদের পূর্ববর্তীগণ মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছিলো। শেষ পর্যন্ত আমার শাস্তি ভোগ করেছে। আপনি বলুন, ‘তোমাদের নিকট কি কোন জ্ঞান আছে যে, তা আমার নিকট পেশ করতে পারো? তোমরা তো নিছক কল্পনারই অনুসরণ করছো; এবং তোমরা এভাবেই অনুমান করছো’।
আপনি বলুন, ‘হাযির করো নিজেদের ঐ সব সাক্ষীকে, যারা এ মর্মে সাক্ষ্য দেবে যে, আল্লাহ সেটা নিষিদ্ধ করেছেন’। অতঃপর যদি তারা সাক্ষ্য দিয়ে বসে, তবে হে শ্রোতা! তুমি তাদের সাথে সাক্ষ্য দিও না এবং তাদের কু-প্রবৃত্তির অনুসরণ করো না, যারা আমার আয়াতগুলোকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে, যারা আখিরাতের উপর ঈমান আনে না এবং নিজেদের প্রতিপালকের সমকক্ষ দাঁড় করায়।
আপনি বলুন, ‘এসো! আমি তোমাদেরকে পড়ে শুনাবো যা তোমাদের উপর তোমাদের প্রতিপালক হারাম করেছেন; তোমরা তার কোন শরীক করবে না; এবং মাতাপিতার সাথে সদ্ব্যবহার করো ও তোমাদের সন্তানদেরকে হত্যা করো না দারিদ্রের কারণে; আমি তোমাদেরকে এবং তাদের সবাইকে জীবিকা দেবো; আর অশ্লীল কাজকর্মের নিকটে যেও না, যা সেগুলোর মধ্যে প্রকাশ্য রয়েছে এবং যা গোপন; আর যেই জীবের হত্যা আল্লাহ্ নিষিদ্ধ করেছেন সেটাকে অন্যায়ভাবে হত্যা করো না’। এটা তোমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন যেন তোমাদের মধ্যে শুভ বুদ্ধির উদয় হয়।
এবং এতিমদের সম্পত্তির নিকটে যেও না, কিন্তু (যাবে) খুব উত্তম পন্থায় যে পর্যন্ত সে যৌবনে উপনীত হয়; এবং পরিমাপ ও ওজন ন্যায়সঙ্গন্ত পূর্ণ করো; আমি কোন ব্যক্তির উপর বোঝা অর্পণ করি না, কিন্তু তার সাধ্য পরিমাণ; এবং তোমরা যখন কথা বলবে তখন ন্যায্যই বলবে যদিও তোমাদের স্বজনের মামলা হয়; আর আল্লাহ্রই অঙ্গীকার পূর্ণ করো; এটা তোমাদেরকে তাকীদ দিয়েছেন যাতে তোমরা উপদেশ গ্রহণ করো;
আর এও যে, এটা হচ্ছে আমার সরল পথ। সুতরাং সেটার অনুসরন করো এবং ভিন্ন পথে চলো না; যাতে তা তোমাদেরকে তার পথ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়। তিনি তোমাদেরকে এ নির্দেশ দিয়েছেন যেন তোমরা খোদাভীতি অর্জন করো।
অতঃপর আমি মূসাকে কিতাব দান করেছিলাম পূর্ণ অনুগ্রহ করার উদ্দেশ্যে তারই উপর, যে সৎকর্মপরায়ণ এবং প্রত্যেক কিছুর বিশদ বিবরণ, পথ নির্দেশনা দয়ারূপে; যেন তারা তাদের প্রতিপালকের সাথে সাক্ষাতের উপর ঈমান আনে।
অথবা বলবে যে, ‘যদি আমাদের উপর কিতাব অবতীর্ণ হতো তবে আমরা তাদের চেয়ে অধিক সঠিক পথের উপর থাকতাম’। অতঃপর তোমাদের নিকট তোমাদের প্রতিপালকের স্পষ্ট দলীল, পথ নির্দেশনা ও দয়া এসেছে। অতঃপর তার চেয়ে বড় যালিম কে, যে আল্লাহ্র নিদর্শনগুলোকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে এবং সেগুলো থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়? অবিলম্বে ঐ সব লোক, যারা আমার নিদর্শনগুলো থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, আমি তাদেরকে মন্দ আযাবের সাজা দেবো, প্রতিফল স্বরূপ তাদের মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার।
(তারা) কিসের অপেক্ষায় রয়েছে? কিন্তু এরই যে, তাদের নিকট ফিরিশ্তারা আসবে; অথবা আপনার প্রতিপালকের শাস্তি, অথবা আপনার প্রতিপালকের একটা নিদর্শন আসবে। যেদিন আপনার প্রতিপালকের ঐ একটা নিদর্শন আসবে, সেদিন কোন ব্যক্তির ঈমান আনা কোন কাজে আসবে না, যে প্রথমে ঈমান আনে নি কিংবা স্বীয় ঈমানের মধ্যে কোন মঙ্গল অর্জন করে নি। আপনি বলুন, ‘অপেক্ষা করো, আমিও অপেক্ষা করছি’।
ঐ সব লোক, যারা আপন দ্বীনের মধ্যে পৃথক পৃথক রাস্তা বের করেছে এবং কয়েক দলে বিভক্ত হয়েছে, হে মাহবূব! তাদের সাথে আপনার কোন সম্পর্ক নেই। তাদের মামলা আল্লাহ্রই হাতে সোপর্দকৃত। অতঃপর তিনি তাদেরকে বলে দেবেন যা কিছু তারা করছিলো।
যে কেউ একটা সৎকর্ম করবে, তবে তার জন্য তদনুরূপ দশগুণ রয়েছে আর যে ব্যক্তি কোন পাপ কাজ করে, তবে তার প্রতিফল মিলবে না, কিন্তু সেটারই সমান; এবং তাদের উপর অত্যাচার করা হবে না।
আপনি বলুন, ‘আমি কি আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য প্রতিপালক খুজবো? অথচ তিনিই সবকিছুর প্রতিপালক। আর যে কেউ কিছু অর্জন করবে তা তারই যিম্মায় থাকবে; এবং কোন বোঝা বহনকারী ব্যক্তি অপরের বোঝা বহন করবে না। অতঃপর তোমাদেরকে তোমাদের প্রতিপালকের দিকে প্রত্যাবর্তন করতে হবে, তিনি তোমাদেরকে বলে দেবেন যে বিষয়ে তোমরা মতভেদ করে আসছিলে।
আর তিনিই হন, যিনি পৃথিবীতে তোমাদেরকে স্থলাভিষিক্ত করেছেন এবং তোমাদের মধ্যে এককে অপরের উপর বহু মর্যাদায় উন্নীত করেছেন যাতে তোমাদেরকে পরীক্ষা করেন ঐ সব বিষয়ের মধ্যে, যেগুলো তোমাদেরকে দান করেছেন; নিশ্চয় আপনার প্রতিপালকের বেশীক্ষণ সময় লাগে না শাস্তি প্রদানে এবং নিঃসন্দেহে তিনি অবশ্যই ক্ষমাশীল, দয়াময়।