যেই নারী ব্যভিচারিণী হয় এবং যে পুরুষ (হয় ব্যভিচারী) তবে তাদের প্রত্যেককে একশ’ কশাঘাত করো এবং তোমাদের যেন তাদের প্রতি দয়া না আসে আল্লাহ্র দ্বীনে যদি তোমরা ঈমান এনে থাকো আল্লাহ্ ও শেষ দিবসের উপর, এবং উচিত যে, তাদের শাস্তির সময় মুসলমানদের একটা দল উপস্থিত থাকবে।
ব্যভিচারী পুরুষ বিবাহ করবে না, কিন্তু ব্যভিচারিণীকে অথবা অংশীবাদীনীকে এবং ব্যভিচারিণীকে বিবাহ করবে না, কিন্তু ব্যভিচারী পুরুষ অথবা মুশরিক;আর এ কাজ ঈমানদারদের উপর হারাম।
এবং যারা পূন্যাত্না রমণীদের প্রতি অপবাদ আরোপ করবে, অতঃপর চারজন চাক্ষুষ সাক্ষী উপস্থিত করবে না, তবে তাদেরকে আশিটি কশাঘাত করো এবং তাদের কোন সাক্ষ্য কখনো গ্রহণ করো না এবং তারা ফাসিক্বই;
আর ওই সব লোক, যারা নিজেদের স্ত্রীর প্রতি অপবাদ দেয়, এবং তাদের নিকট নিজেদের বর্ণনা ছাড়া অন্য কোন সাক্ষী থাকে না, তবে (তাদের মধ্যে) এমন কোন ব্যক্তির সাক্ষ্য এ হবে যে, সে চারবার সাক্ষ্য দেবে আল্লাহ্র নামে এ মর্মে যে, সে সত্যবাদী।
নিশ্চয় ওই সব লোক, যারা এ ‘বড় অপবাদ’ নিয়ে এসেছে তারা তোমাদেরই মধ্যকার একটা দল; সেটাকে নিজেদের জন্য অনিষ্টকর মনে করো না; বরং তা তোমাদের জন্য কল্যাণকর। তাদের মধ্যে প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য ওই পাপ রয়েছে, সে অর্জন করেছে; এবং তাদের মধ্যে ওই ব্যক্তি, যে সর্বাপেক্ষা বড় অংশ নিয়েছে (প্রধান ভূমিকা পালন করেছে) তার জন্য মহা শাস্তি রয়েছে।
এবং যদি আল্লাহ্র অনুগ্রহ ও তার দয়া তোমাদের উপর দুনিয়া ও আখিরাতে না থাকতো, তাহলে যে চর্চায় তোমরা লিপ্ত হয়েছো তজ্জন্য কঠিন শাস্তি তোমাদেরকে স্পর্শ করতো;
যখন তোমরা এমন কথা একে অপরের নিকট শুনে নিজেদের মুখে নিয়ে আসছিলে এবং নিজেদের মুখ থেকে তা-ই বের করছিলে যে সম্পর্কে তোমাদের আদৌ জ্ঞান নেই এবং সেটা সহজ (তুচ্ছ) মনে করেছিলে; অথচ সেটা আল্লাহ্র নিকট বড় কথা।
এবং যদি আল্লাহ্র অনুগ্রহ ও তার দয়া তোমাদের প্রতি না থাকতো, তবে তোমরা সেটার কষ্টের স্বাদ অনুভব করতে আর আল্লাহ্ হন তোমাদের প্রতি অত্যন্ত দয়ার্দ্র, পরম দয়ালু।
হে ঈমানদারগণ! শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। এবং যে শয়তানদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে, তবে সে তো অশ্লীলতা ও মন্দ কাজেরই কথা বলবে। আর যদি আল্লাহ্র অনুগ্রহ ও তার দয়া তোমাদের প্রতি না থাকতো, তবে তোমাদের মধ্যে কেউই কখনো পবিত্র হতে পারতে না। হাঁ, আল্লাহ্ যাকে ইচ্ছা পবিত্র করে দেন এবং আল্লাহ্ শুনেন, জানেন।
এবং তোমাদের মধ্যে যারা মর্যাদাবান ও সামর্থ্যবান তারা যেন এ মর্মে শপথ না করে যে, আত্নীয়-স্বজন, অভাবগ্রস্ত এবং আল্লাহ্র পথে হিজরত কারীদেরকে প্রদান করবে না এবং তাদের উচিত যেন ক্ষমা করে দেয় এবং দোষ-ত্রুটি উপেক্ষা করে। তোমরা কি এ কথা পছন্দ করো না যে, আল্লাহ্ তোমাদেরকে ক্ষমা করবেন? এবং আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, দয়ালু।
অপবিত্র নারীরা অপবিত্র পুরুষদের জন্য এবং অপবিত্র পুরুষগণ অপবিত্র নারীদের জন্য; আর পবিত্র নারীগণ পবিত্র পুরষদের জন্য এবং পবিত্র পুরুষগণ পবিত্র নারীদের জন্য। তারা পবিত্র ওই সব উক্তি থেকে যেগুলো এসব লোক বলছে। তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও সম্মানজনক জীবিকা।
হে ঈমানদারগণ! তোমরা নিজেদের ঘর ব্যতীত অন্যান্য ঘরগুলোতে যেও না যতক্ষণ পর্যন্ত অনুমতি না নাও এবং সেগুলোর মধ্যে বসবাসকারীদের সালাম না করো। এটা তোমাদের জন্য শ্রেয়, যাতে তোমরা মনোযোগ দাও।
অতঃপর যদি সেগুলোর মধ্যে কাউকেও না পাও। তখনও মালিকদের অনুমতি ব্যতীত সেগুলোতে প্রবেশ করো না এবং যদি তোমাদেরকে বলা হয়, ‘ফিরে যাও!’ তবে ফিরে যাবে। এটা তোমাদের জন্য খুবই পবিত্র। আল্লাহ্ তোমাদের কার্যাদি সম্বন্ধে জানেন।
এতে তোমাদের কোন পাপ নেই যে, তোমরা ওই সব ঘরের ভিতর যাবে, যেগুলো বিশেষ করে কারো বসবাসের নয় এবং সেগুলো ভোগ করার ইখতিয়ার তোমাদের রয়েছে; আর আল্লাহ্ জানেন যা তোমরা প্রকাশ করো এবং যা তোমরা গোপন করো।
মুসলমান পুরুষদেরকে নির্দেশ দিন যেন তারা নিজেদের দৃষ্টিসমূহকে কিছুটা নিচু রাখে এবং নিজেদের লজ্জাস্থানগুলোর হেফাযত করে। এটা তাদের জন্য খুবই পবিত্র। নিঃসন্দেহে আল্লাহ্র নিকট তাদের কার্যাদির খবর রয়েছে।
এবং মসুলমান নারীদেরকে নির্দেশ দিন যেন তারা নিজেদের দৃষ্টিগুলোকে কিছুটা নিচু রাখে এবং নিজেদের সতীত্বকে হেফাযত করে আর নিজেদের সাজ-সজ্জাকে প্রদর্শন না করে, কিন্তু যতটুকু স্বাভাবিক ভাবেই প্রকাশ পায় এবং মাথার কাপড় যেন আপন গ্রীবা ও বক্ষদেশের প্রতি ঝুলানো থাকে আর আপন সাজ-সজ্জাকে যেন প্রকাশ না করে, কিন্তু নিজেদের স্বামীর নিকট অথবা আপন পিতা অথবা স্বামীর পিতা, অথবা আপন পুত্রগণ অথবা স্বামীর পুত্রগণ, অথবা আপন ভাই, অথবা আপন ভ্রাতুষ্পুত্রগণ অথবা আপন ভাগিনাগণ অথবা স্বধর্মীয় নারীগণ অথবা নিজেদের হাতের মালিকানাধীন দাসীগণ অথবা যৌন কামনাহীন চাকর অথবা ওই সব বালক (এর নিকট) যারা নারীদের গোপনাঙ্গ সম্বন্ধে অবগত নয়; এবং যেন মাটির উপর সজোরে পদক্ষেপণ না করে, যাতে জানা যায় তাদের গোপন সাজ-সজ্জা। এবং আল্লাহ্র দিকে তাওবা করো, হে মুসলমানগণ, তোমরা সকলেই! এ আশায় যে, তোমরা সফলতা অর্জন করবে।
এবং বিবাহ সম্পাদন করে দাও তোমাদের মধ্যে তাদেরই, যারা বিবাহ বিহীন রয়েছে আর নিজেদের উপযুক্ত দাস এবং দাসীদেরও। যদি তারা অভাবগ্রস্ত হয়, তবে আল্লাহ্ তাদেরকে অভাবমুক্ত করে দেবেন আপন অনুগ্রহ থেকে। এবং আল্লাহ্ প্রাচুর্যময়, জ্ঞানী।
এবং তারা যেন সংযত থাকে, যারা বিবাহের সামর্থ্য রাখে না এ পর্যন্ত যে, আল্লাহ্ আপন অনুগ্রহে তাদেরকে সামর্থ্যবান করে দেবেন। আর তোমাদের হাতের মালিকানাধীণ দাস দাসীদের মধ্য থেকে যারা এটা চায় যে, কিছু অর্থ রোজগারের শর্তের ভিত্তিতে তাদেরকে মুক্ত বলে লিখে দাও, তবে লিখে দেও যদি তাদের মধ্যে কোন মঙ্গল জানতে পারো এবং এ কথার উপর তাদেরকে সাহায্য করো আল্লাহ্র ওই সম্পদ থেকে, যা তোমাদেরকে প্রদান করেছেন এবং তোমাদের পার্থিব জীবনের কিছু ধন সম্পদের লালসায় নিজেদের দাসীদেরকে ব্যভিচার করতে বাধ্য করো না, যখন তারা সতীত্ব রক্ষা করতে চায়। আর যে ব্যক্তি তাদেরকে বাধ্য করবে, তবে তাদের উপর জবর-দস্তির পর, আল্লাহ্ তো ক্ষমাশীল, দয়ালু।
আল্লাহ্ নূর আসমানসমূহ ও যমীনের। তার নূরের উপমা এমনই যেমন একটা দীপাধার, যার মধ্যে রয়েছে প্রদীপ। ওই প্রদীপ একটা ফানুসের মধ্যে স্থাপিত। ওই ফানুস যেন একটি নক্ষত্র, মুক্তার মতো উজ্জ্বল হয় রবকতময় বৃক্ষ যায়তূন দারা, যা না প্রাচ্যের, না প্রতীচ্যের; এর নিকটবর্তী যে, সেটার তৈল প্রজ্জ্বলিত হয়ে উঠবে যদিও আগুন সেটাকে স্পর্শ না করে। নূরের উপর নূর। আল্লাহ্ আপন নূরের পথ বাত্লিয়ে দেন যাকে ইচ্ছা করেন; এবং আল্লাহ্ উপমাসমূহ বর্ণনা করেন মানুষের জন্য। আর আল্লাহ্ সবকিছু জানেন।
সেসব ঘরের মধ্যে, যেগুলোকে সমুন্নত করার জন্য আল্লাহ্র নির্দেশ দিয়েছেন এবং সেগুলোর মধ্যে তার নাম নেওয়া হয়, সেগুলোর মধ্যে আল্লাহ্র পবিত্রতা ঘোষণা করে সকলা ও সন্ধ্যায়,
ওই সব লোক, যাদেরকে অমনোযোগী করে না কোন ব্যবসা-বাণিজ্য, না বেচা-কেনা আল্লাহ্র স্মরণ থেকে এবং নামায কায়েম রাখা ও যাকাত প্রদান করা থেকে; তারা ভয় করে ওই দিনকে, যেদিন উল্টে যাবে অন্তর ও চোখসমূহ,
যাতে আল্লাহ্ তাদেরকে প্রতিদান দেন, তাদের সর্বাপেক্ষা উত্তম কাজের এবং আপন অনুগ্রহে তাদেরকে পুরস্কার বেশী দেন; আর আল্লাহ্ জীবিকা দান করেন যাকে চান অপরিমিত পরিমাণে।
এবং যারা কাফির হয়েছে তাদের কর্ম এমনই, যেমন কোন মরুভূমিতে রোদে চমকিত বালু পিপাসার্ত সেটাকে পানি মনে করে। শেষ পর্যন্ত যখন সেটার নিকট আসলো তখন দেখতে পেলো। সেটা কিছুই নয় এবং আল্লাহ্কে নিজের নিকটে পেলো। অতঃপর তিনি তার হিসাব পূর্ণমাত্রায় দিলেন; এবং আল্লাহ্ দ্রুত হিসাব গ্রহণ করেন;
অথবা যেমন অন্ধকাররাশি কোন সমুদ্রের জলাশয়ের মধ্যে, সেটার উপর ঢেউ, ঢেউয়ের উপর আরো ঢেউ, সেটার ঊর্ধ্বে মেঘপুঞ্জ; অন্ধকারপুঞ্জ রয়েছে একের উপর এক। যখন আপন হাত বের করে তখন তা দেখা যায় বলে মনে হয় না এবং আল্লাহ্ যাকে আলো দান করেন না, তার জন্য কোথাও আলো নেই।
আপনি কি দেখেন নি যে, আল্লাহ্র পবিত্রতা ঘোষণা করে যা কিছু আসমানসমূহে ও যমীনে রয়েছে এবং পাখীকুল পাখা সম্প্রসারিত করে? সবাই জেনে রেখেছে আপন নামায ও আপন পবিত্রতা ঘোষণার পদ্ধতি এবং আল্লাহ্ তাদের কর্মসমূহ জানেন।
তুমি কি দেখো নি যে, আল্লাহ্ ধীরে ধীরে সঞ্চালন করেন মেঘমালাকে, অতঃপর সেগুলোকে পরস্পর একত্র করেন, অতঃপর সেগুলোকে পুঞ্জীভূত করেন, অতঃপর তুমি দেখতে পাও যে, সেটার মধ্য থেকে বারিধারা বর্ষিত হয় এবং আসমান থেকে, তাতে যে বরফের পাহাড় রয়েছে, তা থেকে কিছু শিলা বৃষ্টি বর্ষণ করেন, অতঃপর সেগুলোকে যার উপর ইচ্ছা বর্ষণ করেন; এবং যার দিক থেকে ইচ্ছা করেন সেগুলোকে ফিরিয়ে দেন। সেটার বিদ্যুৎ ঝলক দৃষ্টি শক্তিকে কেড়ে নেওয়ার উপক্রম হয়।
এবং আল্লাহ্ ভূ-পৃষ্ঠে প্রত্যেক বিচরণকারী জীবজন্তকে পানি থেকে সৃষ্টি করেছেন, আর সেগুলোর মধ্যে কতেক নিজ পেটের উপর ভর দিয়ে চলে, এবং সেগুলোর মধ্যে কিছু সংখ্যক দু’পায়ে চলে, আর সেগুলোর মধ্যে কিছু চার পায়ে চলে। আল্লাহ্ সৃষ্টি করেন যা চান। নিঃসন্দেহে, আল্লাহ্ সবকিছু করতে পারেন।
এবং তারা বলে, ‘আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহ্ ও রসূলের উপর এবং নির্দেশ মান্য করেছি’। অতঃপর কিছু সংখ্যক লোক তাদের মধ্যে থেকে এরপর ফিরে যায় এবং তারা মুসলমান নয়।
মুসলমানদের উক্তি তো এই যখন আল্লাহ্ ও রসূলের দিকে আহ্বান করা হয়, এ জন্য যে, রসূল তাদের মধ্যে ফয়সালা করে দেবেন, তখন তারা আরয করে, ‘আমরা শ্রবণ করলাম এবং হুকুম মান্য করলাম’। আর এসব লোকই সফলকাম।
এবং তারা আল্লাহ্র শপথ করেছে, নিজেদের শপথ চূড়ান্ত প্রচেষ্টা সহকারে, এ মর্মে যে, আপনি যদি তাদেরকে নির্দেশ দেন তবে তারা অবশ্যই জিহাদে বের হবে। আপনি বলুন, ‘তোমরা শপথ করো না! শরীয়ত অনুযায়ী হুকুম পালন করা উচিত। আল্লাহ্ জানেন যা তোমরা করছো’।
আপনি বলুন, ‘নির্দেশ মান্য করো আল্লাহ্র এবং নির্দেশ মান্য করো রসূলের’। অতঃপর যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও, তবে রসূলের দায়িত্বে তাই রয়েছে, যা তার উপর অপরিহার্য করা হয়েছে এবং তোমাদের উপর তাই রয়েছে, যার ভার তোমাদের উপর অর্পিত হয়েছে।আর যদি রসূলের আনুগত্য করো, তবে সৎপথ পাবে। এবং রসূলের দায়িত্ব নয়,কিন্তু স্পষ্টভাবে পৌছিয়ে দেওয়া।
আল্লাহ্ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তাদেরকে, যারা তোমাদের মধ্যে ঈমান এনেছে এবং সৎ কর্ম করেছে যে, অবশ্যই তাদেরকে পৃথিবীতে খিলাফত প্রদান করবেন যেমনি তাদের পূর্ববর্তীদেরকে দিয়েছেন; এবং অবশ্যই তাদের জন্য সুদৃঢ় করে দেবন তাদের ওই দ্বীনকে, যা তাদের জন্য মনোনীত করেছেন এবং অবশ্যই তাদের পূর্ববর্তী ভয় ভীতিকে নিরাপত্তায় বদলে দেবেন। আমার ইবাদত করবে, আমার শরীক কাউকেও দাঁড় করাবে না। আর যারা এর পড়ে অকৃতজ্ঞ হবে, তবে সে সব লোকই নির্দেশ অমান্যকারি।
হে ঈমানদারগণ! তোমাদের হাতের সম্পদ দাস এবং ওই সব ছেলেমেয়ের, যারা তোমাদের মধ্যে এখনো যৌবনে পদার্পণ করেনি- তিনটি সময়ে, তোমাদের নিকট থেকে অনুমতি নেওয়া উচিতঃ ফজরের নামাযের পূর্বে এবং যখন তোমরা আপন পোশাক খুলে রাখো দ্বি-প্রহরে, আর এশা নামাযের পর। এ তিন সময় তোমাদের লজ্জার। এ তিন সময়ের পর তোমাদের উপর কোন পাপ নেই, না তাদের উপর; (তারা তো) আসা যাওয়া করে তোমাদের নিকট, একে অপরের নিকট।আল্লাহ্ এভাবে তোমাদের জন্য নিদর্শনসমূহ বর্ণনা করেন এবং আল্লাহ্ জ্ঞানময়, প্রজ্ঞাময়।
এবং যখন তোমাদের মধ্যে সন্তানরা যৌবনে পৌছে যায় তখন তারাও যেন অনুমতি প্রার্থণা করে যেমন তাদের পূর্ববর্তীগণ অনুমতি প্রার্থনা করেছে। আল্লাহ্ এভাবে তোমাদের নিকট আপন আয়াতসমূহ বর্ণনা করেন; এবং আল্লাহ্ জ্ঞান ও প্রজ্ঞাময়।
এবং বৃদ্ধা-ঘরে অবস্থানকারী নারীগণ, যাদের বিবাদের আশা নেই, তাদের উপর কোন পাপ নেই তাদের বহিরাভরণ খুলে রাখলে, যখন সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে। আর তা থেকেও বিরত থাকা তাদের জন্য আরো অধিক উত্তম। এবং আল্লাহ্ শুনেন, জানেন।
না অন্ধের জন্য বাধা বিপত্তি আছে, না খোড়ার জন্য বাধা বিপত্তি আছে, না রুগ্নের জন্য বাধা বিপত্তি আছে এবং না তোমাদের মধ্যে কারো জন্য (বাধা আছে) এতে যে, তোমরা আহার করবে আপন সন্তানদের ঘরে, অথবা আপন পিতার ঘরে, অথবা আপন মাতার ঘরে অথবা আপন ভাইয়ের নিকট অথবা আপন বোনদের নিকট অথবা আপন চাচাদের নিকট অথবা আপন ফুফুদের ঘরে অথবা আপন মামাদের নিকট অথবা আপন খালাদের ঘরে অথবা যেখানকার চাবিসমূহ তোমাদের হাতের মুঠোয় রয়েছে অথবা আপন বন্ধুদের নিকট; তোমাদের প্রতি কোন দোষারোপ নেই একত্রে আহার করলে অথবা পৃথক পৃথকভাবে; অতঃপর যখন কোন ঘরে প্রবেশ করো তখন আপন লোকদের প্রতি সালাম করো সাক্ষাতের সময় মঙ্গল কামনা স্বরূপ, (যা) আল্লাহ্র নিকট থেকে কল্যাণময়, পবিত্র। এভাবেই আল্লাহ্ তোমাদের নিকট আয়াতসমূহ বিশদভাবে বর্ণনা করেন, যাতে তোমরা বুঝতে পারো।
ঈমানদাররা হচ্ছে তারাই, যারা আল্লাহ্ ও তার রসূলের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস স্থাপন করেছে এবং যখন রসূলের নিকট এমন কোন কাজের ব্যাপারে হাযির হয়ে থাকে, যার জন্য তাদেরকে একত্র করা হয়, তখন সরে পড়ে না যতক্ষণ না তার নিকট থেকে অনুমতি নেয়। ওই সব লোক, যারা আপনার নিকট অনুমতি চাচ্ছে, তারাই ওই সব লোক, যারা আল্লাহ্ ও তার রসূলের উপর ঈমান আনে। অতঃপর যখন তারা আপনার নিকট অনুমতি চায় তাদের কোন কাজের জন্য, তখন আপনি তাদের মধ্য থেকে যাকে চান অনুমতি দিয়ে দিন এবং তাদের জন্য আল্লাহ্র নিকট ক্ষমাপ্রার্থনা করুন। নিশ্চয় আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, দয়ালু।
রসূলের আহ্বানকে তোমাদের পরস্পরের মধ্যে তেমনি স্থির করো না যেমন তোমরা একে অপরকে ডেকে থাকো। নিশ্চয় আল্লাহ্ জানেন যারা তোমাদের মধ্যে চুপে চুপে বের হয়ে যায় কোন কিছুর আড়াল গ্রহণ করে। সুতরাং যারা রসূলদের আদেশের বিরুদ্ধাচরণ করে তারা যেনো ভয় করে যে, কোন বিপর্যয় তাদেরকে পেয়ে বসবে, অথবা তাদের উপর বেদনাদায়ক শাস্তি আপতিত হবে।
শুনে নাও! নিশ্চয় আল্লাহ্রই যা কিছু আসমানসমূহ ও যমীনে রয়েছে। নিশ্চয় তিনি জানেন যে অবস্থায় তোমরা আছো এবং ওই দিনকে, যেদিন তারা তার প্রতি প্রত্যাবর্তিত হবে, অতঃপর তিনি তাদেরকে বলে দেবেন যা কিছু তারা করেছে এবং আল্লাহ্ সবকিছু জানেন।