আরয করলো, ‘হে আমার রব! আমার অস্থি দুর্বল হয়ে গেছে আর মাথা থেকে বার্ধক্যের শিক্ষা প্রকাশ পেয়েছে এবং হে আমার রব! তোমাকে আহ্বান করে আমি কখনো ব্যর্থ হই নি।
এবং আমার মনে আমার পরে আপন স্বজনদের সম্পর্কে আশঙ্কা রয়েছে; আর আমার স্ত্রী বন্ধ্যা; সুতরাং আমাকে তোমার নিকট থেকে এমন কাউকে দান করো যে আমার কাজ সম্পাদন করবে।
আরয করলো, ‘হে আমার রব! আমাকে কোন নিদর্শন দিয়ে দাও’। বললেন, ‘তোমার নিদর্শন এ যে, তুমি তিন রাত দিন মানুষের সাথে বাক্যালাপ করবে না একেবারে সুস্থ থাকা সত্ত্বেও।
অতঃপর আপন সম্প্রদায়ের নিকট মসজিদ থেকে বের হয়ে এলো, তাঁরপর তাদেরকে এলো, তাঁরপর তাদেরকে ইঙ্গিতে বললো, ‘সকল সন্ধ্যায় (আল্লাহ্র) পবিত্রতা ঘোষণা করতে থাকো’।
বললো, ‘এরূপই হবে’; তোমার রব বলেছেন, ‘এটা আমার জন্য সহজসাধ্য এবং এ জন্য যে, আমি তাকে মানুষের জন্য নিদর্শন করবো এবং আমার নিকট থেকে একটা অনুগ্রহ; আর এ বিষয় চূড়ান্ত হয়ে গেছে’।
অতঃপর তাকে প্রসব বেদনা একটা খেজুর বৃক্ষমুলে নিয়ে এলো। বললো, ‘হায়! এর পূর্বে কোন মতে আমি যদি মরে যেতাম এবং লোকের স্মৃতি থেকে সম্পূর্ণ বিলুপ্ত হয়ে যেতাম’।
সুতরাং তুমি আহার করো এবং পান করো আর চোখ জুড়াও। অতঃপর যদি তুমি কোন মানুষ দেখো তবে বলে দিও, ‘আমি আজ ‘রাহমান’ (পরম দয়ালু আল্লাহ্) এর উদ্দেশ্যে রোযার মান্নত করেছি, সুতরাং আজ কিছুতেই কোন মানুষের সাথে কথা বলবো না’।
আল্লাহ্র জন্য শোভা পায় না যে, তিনি কাউকে আপন সন্তান স্থির করবেন। পবিত্রতা তাঁরই। যখন কোন কাজের নির্দেশ দেন তখন এভাবেই সেটার উদ্দেশ্যে বলেন, ‘হয়ে যা!’ সেটা তৎক্ষণাৎ হয়ে যায়।
বললো, ‘তুমি কি আমার খোদাগুলো থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছো হে ইব্রাহীম? নিশ্চয়, যদি তুমি নিবৃত্ত না হও, তবে আমি তোমার উপর পাথর বর্ষণ করবো এবং আমার নিকট থেকে দীর্ঘকালের জন্য সম্পর্কহীন হয়ে যাও।
এবং আমি পৃথক হয়ে যাবো তোমাদের থেকে আর ওই সব থেকে, যেগুলোর তোমরা আল্লাহ্ ব্যতীত পূজা করছো এবং আমি আমার রবেরই ইবাদত করবো। এটা সন্নিকটে যে, আমি আমার রবের বন্দেগী দ্বারা হতভাগ্য হবো না’।
অতঃপর যখন তাদের থেকে এবং আল্লাহ্ ব্যতীত তাদের অন্যান্য উপাস্যগুলো থেকে পৃথক হয়ে গেলো তখন আমি তাকে ইসহাক্ব এবং ইয়া’ক্বূবকে দান করেছি আর প্রত্যেককে অদৃশ্যের সংবাদদাতা (নবী) করেছি।
এরা হচ্ছে তারাই, অদৃশ্যের সংবাদদাতাগণের মধ্য থেকে আদম সন্তানদের থেকে, যাদের উপর আল্লাহ্ অনুগ্রহ করেছেন এবং তাদের মধ্যে যাদেরকে আমি নূহের সাথে আরোহণ করিয়েছিলাম, এবং ইব্রাহীম ও ইয়া’কূবের বংশধরদের মধ্য থেকে আর তাদেরই মধ্য থেকে, যাদেরকে আমি পথ প্রদর্শন করেছি ও মনোনীত করে নিয়েছি, যখন তাদের নিকট রাহমানের আয়াতসমূহ পাঠ করা হয় তখন তারা সাজদায় লুটিয়ে পড়ে সাজদারত ও ক্রন্দনরত হয়ে।
অতঃপর তাদের পর তাদের স্থলে ওই অপদার্থ উত্তরাধিকারীগণ এলো, যারা নামাযগুলো নষ্ট করেছে এবং নিজেদের কুপ্রবৃত্তিগুলোর অনুসরণ করেছে, সুতরাং অবিলম্বে তারা দোযখের মধ্যে ‘গায়্য’ এর জঙ্গল পাবে;
এবং (জিব্রাইল মাহবূবের নিকট আরয করলো), ‘আমরা ফিরিশ্তারা অবতরণ করি না, কিন্তু হুযূরের রবের নির্দেশক্রমে যা কিছু আমাদের সামনে রয়েছে এবং যা আমাদের পেছনে রয়েছে আর যা এর মধ্যখানে রয়েছে তা তাঁরই; এবং হুযূরের রব ভুলে যান না।
আসমানসমূহ ও যমীণ এবং যা কিছু এ দু’এর মধ্যবর্তী রয়েছে সবকিছুরই মালিক; সুতরাং তাঁরই ইবাদিত করো এবং তাঁর বন্দেগীর উপর অবিচল থাকো। তুমি তাঁর নামের অন্য কাউকে জানো?
আপনি বলুন! যারা বিভ্রান্তিতে থাকে পরম করুণাময় তাদেরকে প্রচুর ঢেলে দেন এ পর্যন্ত যে, যখন তারা দেখে নেয় ওই বিষয়, যার তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়, তা শাস্তি হোক অথবা ক্বিয়ামত। অতঃপর শীঘ্রই জানতে পারবে-কে মর্যাদায় নিকৃষ্ট এবং কার সৈন্যদল দুর্বল।
এবং যারা সৎপথ পেয়েছে আল্লাহ্ তাদের জন্য হিদায়ত আরো বৃদ্ধি করবেন এবং চিরস্থায়ী সৎকর্মগুলোর সর্বোকৃষ্ট প্রতিদান ও সর্বাপেক্ষা উত্তম পরিণাম রয়েছে তোমার রবের নিকট।