তিনিই, যিনি ওই সব কাফির কিতাবীকে তাদের ঘরগুলো থেকে বহিষ্কার করেছেন তাদের প্রথম সমাবেশের জন্য। তোমাদের ধারণা ছিলো না যে, তারা বের হবে এবং তারা মনে করতো যে, তাদের দুর্গগুলো তাদেরকে আল্লাহ্ (এর শাস্তি) থেকে রক্ষা করবে। অতঃপর আল্লাহ্র নির্দেশ তাদের নিকট এসেছে যেখান থেকে তাদের নিকট ধারণাও ছিলো না। এবং তিনি তাদের অন্তরগুলোতে আতঙ্কের সঞ্চার করলেন। তারা আপন ঘরগুলো ধ্বংস করছে নিজেদের হাতে এবং মুসলমানদের হাতেও; সুতরাং শিক্ষা গ্রহণকরো হে দৃষ্টিশক্তিসম্পন্নরা!
এবং যদি এটা না হতো যে, আল্লাহ্ তাদের জন্য ঘরবাড়ী থেকে উৎখাত হওয়া লিপিবদ্ধ করে রেখেছিলেন, তবে পৃথিবীতেই তাদের উপর শাস্তি আপতিত করতেন এবং তাদের জন্য আখিরাতে আগুনের শাস্তি রয়েছে।
এটা এ জন্য যে, তারা আল্লাহ্ ও তাঁর রসূলের বিরুদ্ধাচরণ করে রয়েছে এবং যে ব্যক্তি আল্লাহ্ ও তাঁর রসূল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকে, তবে নিশ্চয় আল্লাহ্র শাস্তি বড়ই কঠিন।
যেই বৃক্ষগুলো তোমরা কেটেছো অথবা সেগুলোর মূলের উপর দণ্ডায়মান অবস্থায় ছেড়ে দিয়েছো? এ সবই আল্লাহ্র অনুমতিক্রমে ছিলো এবং এ জন্য যে, ফাসিক্বগণকে অপমানিত করবেন।
এবং আল্লাহ্ আপন রসুলকে তাদের নিকট থেকে যেই গনীমত প্রদান করিয়েছেন, অতঃপর তোমরা তো তাদের উপর না নিজেদের অশ্ব পরিচালনা করেছো এবং না উষ্ট্র। হাঁ, আল্লাহ্ আপন রসূলগণের আয়ত্বে দিয়ে দেন যাকে চান। এবং আল্লাহ্ সব কিছু করতে পারেন।
আল্লাহ্ আপন রসূলকে নগরবাসীর নিকট থেকে যেই গণীমত প্রদান করিয়েছেন, তা আল্লাহ্ ও রসূলের এবং নিকট আত্নীয়দের আর এতিম, মিসকীন ও মুসাফিরদের; যাতে তা তোমাদের ধনীদের সম্পদ না হয়ে যায় এবং যা কিছু তোমাদেরকে রসুল দান করেন তা গ্রহন করো। আর যা থেকে নিষেধ করেন তা থেকে বিরত থাকো। এবং আল্লাহ্কে ভয় করো! নিশ্চয় আল্লাহ্র শাস্তি কঠিন।
ওই দরিদ্র হিজরতকারীদের জন্য (এ সম্পদ) যাদেরকে আপন ঘরবাড়ি ও সম্পদ থেকে উৎখাত করা হয়েছে। তারা আল্লাহ্র অনুগ্রহ ও তাঁর সন্তুষ্টি চায় এবং আল্লাহ্ ও রসূলের সাহায্য করে। তারাই সত্যবাদী।
এবং যারা প্রথম থেকে এ শহর ও ঈমানের মধ্যে গৃহ নির্মাণ করেছে, তারা ভালোবাসে তাদেরকে, যারা তাদের প্রতি হিজরত করে গেছে এবং নিজেদের অন্তগুলোর মধ্যে কোন প্রয়োজন খুজে পায় না ওই বস্তুর, যা তাদেরকে প্রদান করা হয়েছে এবং নিজেদের প্রাণের উপর তাদেরকে প্রাধান্য দেয় যদিও তাদের অভাব অত্যন্ত প্রকট হয়, এবং যাকে আপন প্রবৃত্তির লোভ থেকে রক্ষা করা হয়েছে, সুতরাং তারাই সফলকাম।
এবং ওই সব লোক, যারা তাদের পরে এসেছে তারা আরয করে, ‘হে আমাদের রব! আমাদের ভাইদেরকেও, যারা আমাদের পূর্বে ঈমান এনেছে আর আমাদের অন্তরে ঈমানদারদের দিক থেকে হিংসা-বিদ্বেষ রেখোনা! হে আমাদের রব! নিশ্চয় তুমিই অতি দয়ার্দ্র, দয়াময়।
আপনি কি মুনাফিক্বদেরকে দেখেন নি, যারা তাদের কিতাবি কাফির ভাইদেরকে বলে, ‘যদি তোমরা নির্বাসিত হও তবে অবশ্য আমরাও তোমাদের সাথে বের হয়ে যাবো এবং অবশ্য তোমাদের ব্যাপারে কারো কথা মানবো না; আর তোমাদের সাথে যুদ্ধ বাধলে সাহায্য করবো? এবং আল্লাহ্ সাক্ষী রয়েছেন এ মর্মে যে, ‘তারা মিথ্যুক’।
যদি তারা নির্বাসিত হয় তবে এরা তাদের সাথে বের হবে না এবং তাদের সাথে যুদ্ধ বাধলে, তবে এরা তাদের সাহায্য করবে না, যদি তাদের সাহায্যও করতে আসে, তবে অবশ্য পৃষ্ঠ প্রদর্শন করে পলায়ন করবে। অতঃপর সাহায্য পাবে না।
এরা সবাই মিলেও তোমাদের সাথে যুদ্ধ করবে না; কিন্তু দূর্গ-ঘেরা নগরসমূহে অথবা প্রাচীরের পেছনে। পরস্পরের মধ্যে তাদের যুদ্ধ ভীষণ। তোমরা তাদেরকে ঐক্যবদ্ধ মনে করবে এবং তাদের অন্তরসমূহ পৃথক পৃথক। এটা এ জন্য যে, তারা বিবেকহীন লোক।
শয়তানের দৃষ্টান্ত; যখন সে মানুষকে বললো,,‘কুফর করো!’ অতঃপর যখন সে কুফর করে ফেলেছে, তখন বললো, ‘আমি তোমাদের নিকট থেকে পৃথক। আমি আল্লাহ্কে ভয় করি, যিনি সমগ্র বিশ্বের রব’।
হে ঈমানদারগণ! আল্লাহ্কে ভয় করো, এবং প্রত্যেকের দেখা উচিত যে, আগামীকালের জন্য সে কি অগ্রে প্রেরণ করেছে, এবং আল্লাহ্কে ভয় করো। নিশ্চয় আল্লাহ্ তোমাদের কার্যাদি সম্পর্কে অবহিত আছেন।
এবং তাদের মতো হয়ো না, যারা আল্লাহ্কে ভুলে বসেছে, অতঃপর আল্লাহ্ তাদেরকে বিপদের মধ্যে নিক্ষেপ করেছেন। ফলে নিজ প্রাণের কথাও তাদের স্মরণ নেই। তারাই ফাসিক্ব।
যদি আমি এ ক্বোরআনকে কোন পর্বতের উপর অবতীর্ণ করতাম, তবে অবশ্যই তুমি সেটাকে দেখতে অবনত, টুকরো টুকরো অবস্থায়, আল্লাহ্র ভয়ে। এবং এসব দৃষ্টান্ত মানুষের জন্য আমি বর্ণনা করি, যেন তারা চিন্তা ভাবনা করে।
তিনিই আল্লাহ্, যিনি ব্যতীত অন্য কোন উপাস্য নেই; বাদশাহ,অতি পবিত্র শান্তিদাতা, নিরাপত্তা প্রদানকারী, রক্ষাকারী, পরম সম্মানিত, মহত্বের অধিকারী, দম্ভশীল; আল্লাহ্ পবিত্র তাদের শির্ক থেকে।
তিনিই আল্লাহ্, স্রষ্টা, উদ্ভাবনকর্তা; প্রত্যেককে রূপদাতা; তারই রয়েছে সব ভালো নাম। তারই পবিত্রতা ঘোষণা করে যা কিছু আস্মানসমূহ ও যমীনে রয়েছে এবং তিনিই সম্মান ও প্রজ্ঞাময়।