সূরা ইয়াসীন -‏يس‎ 

~ সুরা পরিচিতি ~

---

 

Tafsir		36:1
يس
ইয়া-সী---ন।

 

Tafsir		36:2
وَالْقُرْآنِ الْحَكِيمِ
হিকমতময় ক্বোরআনের শপথ;

 

Tafsir		36:3
إِنَّكَ لَمِنَ الْمُرْسَلِينَ
নিশ্চয় আপনি প্রেরিত-

 

Tafsir		36:4
عَلَىٰ صِرَاطٍ مُّسْتَقِيمٍ
সরল পথের উপর।

 

Tafsir		36:5
تَنزِيلَ الْعَزِيزِ الرَّحِيمِ
সম্মানিত, দয়াময়ের অবতীর্ণ;

 

Tafsir		36:6
لِتُنذِرَ قَوْمًا مَّا أُنذِرَ آبَاؤُهُمْ فَهُمْ غَافِلُونَ
যাতে আপনি ওই সম্প্রদায়কে সতর্ক করেন, যার পিতৃপুরুষদেরকে সতর্ক করা হয় নি। সুতরাং তারা গাফিল।

 

Tafsir		36:7
لَقَدْ حَقَّ الْقَوْلُ عَلَىٰ أَكْثَرِهِمْ فَهُمْ لَا يُؤْمِنُونَ
নিশ্চয় তাদের অধিকাংশের উপর বাণী অবধারিত হয়েছে; সুতরাং তারা ঈমান আনবে না।

 

Tafsir		36:8
إِنَّا جَعَلْنَا فِي أَعْنَاقِهِمْ أَغْلَالًا فَهِيَ إِلَى الْأَذْقَانِ فَهُم مُّقْمَحُونَ
আমি তাদের ঘাড়সমূহে বেড়ী পরিয়ে দিয়েছি, সেগুলো থুতনী পর্যন্ত পৌঁছেছে, সুতরাং তারা ঊর্ধ্বমূখী হয়ে রয়েছে।

 

Tafsir		36:9
وَجَعَلْنَا مِن بَيْنِ أَيْدِيهِمْ سَدًّا وَمِنْ خَلْفِهِمْ سَدًّا فَأَغْشَيْنَاهُمْ فَهُمْ لَا يُبْصِرُونَ
আর আমি তাদের সম্মুখে প্রাচীর স্থাপন করেছি এবং তাদের পেছনে এবং তাদের পেছনে একটা প্রাচীর। আর তাদেরকে উপর থেকে আবৃত করে দিয়েছি; সুতরাং তারা কিছুই দেখতে পায় না।

 

Tafsir		36:10
وَسَوَاءٌ عَلَيْهِمْ أَأَنذَرْتَهُمْ أَمْ لَمْ تُنذِرْهُمْ لَا يُؤْمِنُونَ
এবং তাদের পক্ষে এক সমান আপনি তাদেরকে সতর্ক করুন অথবা না-ই করুন। তারা ঈমান আনার নয়।

 

Tafsir		36:11
إِنَّمَا تُنذِرُ مَنِ اتَّبَعَ الذِّكْرَ وَخَشِيَ الرَّحْمَٰنَ بِالْغَيْبِ ۖ فَبَشِّرْهُ بِمَغْفِرَةٍ وَأَجْرٍ كَرِيمٍ
আপনি তো তাকেই সতর্ক করছেন, যে উপদেশ অনুযায়ী চলে এবং রহমানকে না দেখে ভয় করে। সুতরাং তাকে ক্ষমা ও সম্মানজনক পুরস্কারের সুসংবাদ দিন।

 

Tafsir		36:12
إِنَّا نَحْنُ نُحْيِي الْمَوْتَىٰ وَنَكْتُبُ مَا قَدَّمُوا وَآثَارَهُمْ ۚ وَكُلَّ شَيْءٍ أَحْصَيْنَاهُ فِي إِمَامٍ مُّبِينٍ
নিশ্চয় আমি মৃতদেরকে জীবিত করবো এবং আমি লিপিবদ্ধ করছি যা তারা অগ্রে প্রেরণ করেছে আবং যে সব নিদর্শন পেছনে রেখে গেছে আর আমি প্রত্যেক বস্তু গণনা করে রেখেছি এক বর্ণনাকারী কিতাবে।

 

Tafsir		36:13
وَاضْرِبْ لَهُم مَّثَلًا أَصْحَابَ الْقَرْيَةِ إِذْ جَاءَهَا الْمُرْسَلُونَ
এবং তাদের নিকট নিদর্শনসমূহ বর্ণনা করো ওই শহরবাসীদের যখন তাদের নিকট প্রেরিত পুরুষগণ এসেছিলো।

 

Tafsir		36:14
إِذْ أَرْسَلْنَا إِلَيْهِمُ اثْنَيْنِ فَكَذَّبُوهُمَا فَعَزَّزْنَا بِثَالِثٍ فَقَالُوا إِنَّا إِلَيْكُم مُّرْسَلُونَ
যখন আমি তাদের প্রতি দু’জনকে পাঠিয়েছি, অতঃপর তারা তাদেরকে অস্বীকার করেছে, তারপর আমি তৃতীয় দ্বারা শক্তিশালী করেছি, এখন তারা সবাই বললো, ‘নিশ্চয় আমরা তোমাদের প্রতি প্রেরিত হয়েছি’।

 

Tafsir		36:15
قَالُوا مَا أَنتُمْ إِلَّا بَشَرٌ مِّثْلُنَا وَمَا أَنزَلَ الرَّحْمَٰنُ مِن شَيْءٍ إِنْ أَنتُمْ إِلَّا تَكْذِبُونَ
বললো, ‘তোমরা তো আমাদের মতোই মানুষ এবং রহমান কিছুই অবতীর্ণ করেন নি। তোমরা নিরেট মিথ্যুক।

 

Tafsir		36:16
قَالُوا رَبُّنَا يَعْلَمُ إِنَّا إِلَيْكُمْ لَمُرْسَلُونَ
তারা বললো, ‘আমাদের রব জানেন যে, নিঃসন্দেহে অবশ্য আমরা তোমাদের প্রতি প্রেরিত হয়েছি’।

 

Tafsir		36:17
وَمَا عَلَيْنَا إِلَّا الْبَلَاغُ الْمُبِينُ
এবং সুস্পষ্টরূপে পৌঁছিয়ে দেওয়াই আমাদের দায়িত্ব।

 

Tafsir		36:18
قَالُوا إِنَّا تَطَيَّرْنَا بِكُمْ ۖ لَئِن لَّمْ تَنتَهُوا لَنَرْجُمَنَّكُمْ وَلَيَمَسَّنَّكُم مِّنَّا عَذَابٌ أَلِيمٌ
তারা বললো, ‘আমরা তোমাদেরকে অমঙ্গলের কারণ মনে করি। নিশ্চয় যদি তোমরা ফিরে না আসো, তা’হলে অবশ্যই আমরা তোমাদেরকে পাথর মেরে হত্যা করবো এবং নিশ্চয় আমাদের হাতে তোমাদের উপর বেদনাদায়ক শাস্তি আপতিত হবে।

 

Tafsir		36:19
قَالُوا طَائِرُكُم مَّعَكُمْ ۚ أَئِن ذُكِّرْتُم ۚ بَلْ أَنتُمْ قَوْمٌ مُّسْرِفُونَ
তারা বললেন, ‘তোমাদের অমঙ্গল তো তোমাদের সাথে। তোমরা কি এরই উপর ক্ষেপে উঠছো যে, তোমাদেরকে উপদেশ দেওয়া হয়েছে? বরং তোমরা সীমালঙ্ঘনকারী লোক’।

 

Tafsir		36:20
وَجَاءَ مِنْ أَقْصَى الْمَدِينَةِ رَجُلٌ يَسْعَىٰ قَالَ يَا قَوْمِ اتَّبِعُوا الْمُرْسَلِينَ
এবং শহরের শেষ প্রান্ত থেকে একজন পুরুষ ছুটে আসলো, বললো, ‘হে আমার সম্প্রদায় প্রেরিত পুরুষদের অনুসরণ করো!

 

Tafsir		36:21
اتَّبِعُوا مَن لَّا يَسْأَلُكُمْ أَجْرًا وَهُم مُّهْتَدُونَ
এমন লোকদের অনুসরণ করো, যারা তোমাদের নিকট কোন প্রতিদান চান না এবং তারা সৎপথের উপর রয়েছেন।

 

Tafsir		36:22
وَمَا لِيَ لَا أَعْبُدُ الَّذِي فَطَرَنِي وَإِلَيْهِ تُرْجَعُونَ
এবং আমার কি হলো যে, তার ইবাদত করবো না, যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন? এবং তাঁরই দিকে তোমাদেরকে ফিরে যেতে হবে।

 

Tafsir		36:23
أَأَتَّخِذُ مِن دُونِهِ آلِهَةً إِن يُرِدْنِ الرَّحْمَٰنُ بِضُرٍّ لَّا تُغْنِ عَنِّي شَفَاعَتُهُمْ شَيْئًا وَلَا يُنقِذُونِ
আমি কি আল্লাহ্‌ ব্যতীত অন্য খোদাও স্থির করবো? যদি রাহমান আমার কোন ক্ষতি চান, তবে তাদের সুপারিশ আমার কোন কাজে আসবে না। এবং না তারা আমাকে বাচাতে পারবে;

 

Tafsir		36:24
إِنِّي إِذًا لَّفِي ضَلَالٍ مُّبِينٍ
নিশ্চয় তখন তো আমি সুস্পষ্ট পথভ্রষ্টতার মধ্যে হবো।

 

Tafsir		36:25
إِنِّي آمَنتُ بِرَبِّكُمْ فَاسْمَعُونِ
নিশ্চয় আমি তোমাদের রবের উপর ঈমান এনেছি। সুতরাং আমার কথা শোন।

 

Tafsir		36:26
قِيلَ ادْخُلِ الْجَنَّةَ ۖ قَالَ يَا لَيْتَ قَوْمِي يَعْلَمُونَ
তাকে বলা হলো, ‘জান্নাতে প্রবেশ করো’। বললো, ‘কোন মতে আমার সম্প্রদায় যদি জানতো-

 

Tafsir		36:27
بِمَا غَفَرَ لِي رَبِّي وَجَعَلَنِي مِنَ الْمُكْرَمِينَ
কীভাবে আমার রব আমাকে ক্ষমা করেছেন এবং আমাকে সম্মানিতদের অন্তর্ভুক্ত করেছেন!’

 

Tafsir		36:28
وَمَا أَنزَلْنَا عَلَىٰ قَوْمِهِ مِن بَعْدِهِ مِن جُندٍ مِّنَ السَّمَاءِ وَمَا كُنَّا مُنزِلِينَ
এবং আমি তারপর তার সম্প্রদায়ের উপর আসমান থেকে কোন বাহিনী অবতীর্ণ করি নি এবং না আমার সেখানে কোন বাহিনী অবতীর্ণ করার ছিলো।

 

Tafsir		36:29
إِن كَانَتْ إِلَّا صَيْحَةً وَاحِدَةً فَإِذَا هُمْ خَامِدُونَ
তা তো কেবল একটা বিকট শব্দ ছিলো, তখনি তারা নির্ধারিত হয়ে রয়ে গেলো।

 

Tafsir		36:30
يَا حَسْرَةً عَلَى الْعِبَادِ ۚ مَا يَأْتِيهِم مِّن رَّسُولٍ إِلَّا كَانُوا بِهِ يَسْتَهْزِئُونَ
এবং বলা হলো, ‘হায় আফসোস! ওই সব বান্দার জন্য, যখন তাদের নিকট কোন রসূল আসেন, তখন তারা তাদের সাথে ঠাট্টা-বিদ্রূপই করে।

 

Tafsir		36:31
أَلَمْ يَرَوْا كَمْ أَهْلَكْنَا قَبْلَهُم مِّنَ الْقُرُونِ أَنَّهُمْ إِلَيْهِمْ لَا يَرْجِعُونَ
তারা কি দেখে নি আমি তাদের পূর্বেকত সম্প্রদায়কে ধ্বংস করেছি? তারা এখন তাদের দিকে প্রত্যাবর্তনকারী নয়।

 

Tafsir		36:32
وَإِن كُلٌّ لَّمَّا جَمِيعٌ لَّدَيْنَا مُحْضَرُونَ
এবং যতো আছে সবাইকে আমারই সম্মুখে হাযির করা হবে।

 

Tafsir		36:33
وَآيَةٌ لَّهُمُ الْأَرْضُ الْمَيْتَةُ أَحْيَيْنَاهَا وَأَخْرَجْنَا مِنْهَا حَبًّا فَمِنْهُ يَأْكُلُونَ
এবং তাদের একটা নিদর্শন হচ্ছে মৃতভূমি; আমি সেটাক জীবিত করেছি এবং এরপর তা থেকে শস্য উৎপন্ন করেছি, অতঃপর তা থেকে তারা আহার করে।

 

Tafsir		36:34
وَجَعَلْنَا فِيهَا جَنَّاتٍ مِّن نَّخِيلٍ وَأَعْنَابٍ وَفَجَّرْنَا فِيهَا مِنَ الْعُيُونِ
আর আমি তাতে বাগান সৃষ্টি করেছি- খেজুর ও আঙ্গুরের এবং আমি তাতে কিছু সংখ্যক প্রস্রবণ প্রবাহিত করেছি;

 

Tafsir		36:35
لِيَأْكُلُوا مِن ثَمَرِهِ وَمَا عَمِلَتْهُ أَيْدِيهِمْ ۖ أَفَلَا يَشْكُرُونَ
যাতে সেটার ফলমূল থেকে আহার করতে পারে এব সেটা তাদের হাতের তৈরি নয়; তবুও কি তারা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে না?

 

Tafsir		36:36
سُبْحَانَ الَّذِي خَلَقَ الْأَزْوَاجَ كُلَّهَا مِمَّا تُنبِتُ الْأَرْضُ وَمِنْ أَنفُسِهِمْ وَمِمَّا لَا يَعْلَمُونَ
পবিত্রতা তাঁরই জন্য, যিনি সব জোড়া সৃষ্টি করেছেন ওই সব বস্তু থেকে, যেগুলোকে ভূমি উৎপন্ন করে এবং তাদের নিজেদের থেকে আর ওই সব বস্তু থেকে, যেগুলো সম্বন্ধে তাদের খবর নেই।

 

Tafsir		36:37
وَآيَةٌ لَّهُمُ اللَّيْلُ نَسْلَخُ مِنْهُ النَّهَارَ فَإِذَا هُم مُّظْلِمُونَ
এবং তাদের জন্য এক নিদর্শন হচ্ছে রাত; আমি সেটার উপর থেকে দিনকে অপসারিত করে নিই; তখনই তারা অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে;

 

Tafsir		36:38
وَالشَّمْسُ تَجْرِي لِمُسْتَقَرٍّ لَّهَا ۚ ذَٰلِكَ تَقْدِيرُ الْعَزِيزِ الْعَلِيمِ
এবং সূর্য ভ্রমণ করে আপন এক অবস্থানের দিকে; এটা হচ্ছে নির্দেশ পরাক্রমশালী, জ্ঞানময়ের।

 

Tafsir		36:39
وَالْقَمَرَ قَدَّرْنَاهُ مَنَازِلَ حَتَّىٰ عَادَ كَالْعُرْجُونِ الْقَدِيمِ
এবং চাদের জন্য আমি মানযিলসমূহ (তিথি) নির্ধারণ করেছি, অবশেষে তা পুনরায় (তেমনি) হয়ে গেলো যেমন খেজুরের পুরাতন শাখা।

 

Tafsir		36:40
لَا الشَّمْسُ يَنبَغِي لَهَا أَن تُدْرِكَ الْقَمَرَ وَلَا اللَّيْلُ سَابِقُ النَّهَارِ ۚ وَكُلٌّ فِي فَلَكٍ يَسْبَحُونَ
সূর্যের পক্ষে সম্ভব নয় চাদকে নাগালে পাওয়া এবং না রাতের পক্ষে সম্ভব দিনকে অতিক্রম করা এবং প্রত্যেকটা একেক বৃত্তের মধ্যে সন্তরণ করছে।

 

Tafsir		36:41
وَآيَةٌ لَّهُمْ أَنَّا حَمَلْنَا ذُرِّيَّتَهُمْ فِي الْفُلْكِ الْمَشْحُونِ
এবং তাদের জন্য একটা নিদর্শন এ যে, আমি তাদের পূর্ব-পুরুষদের পৃষ্ঠদেশের মধ্যে তাদেরকে বোঝাই নৌযানে আরোহণ করিয়েছি।

 

Tafsir		36:42
وَخَلَقْنَا لَهُم مِّن مِّثْلِهِ مَا يَرْكَبُونَ
এবং তাদের জন্য অনুরূপ নৌযানসমূহ সৃষ্টি করে দিয়েছি, যেগুলোতে তারা আরোহণ করছে।

 

Tafsir		36:43
وَإِن نَّشَأْ نُغْرِقْهُمْ فَلَا صَرِيخَ لَهُمْ وَلَا هُمْ يُنقَذُونَ
এবং আমি ইচ্ছা করলে তাদেরকে নিমজ্জিত করতে পারি, তখন এমন কেউ নেই, যে তাদের ফরিয়াদ শুনে সাড়া দেবে এবং না তাদেরকে রক্ষা করা হবে;

 

Tafsir		36:44
إِلَّا رَحْمَةً مِّنَّا وَمَتَاعًا إِلَىٰ حِينٍ
কিন্তু আমার নিকট থেকে দয়া ও একটা সময় পর্যন্ত ভোগ করতে দেওয়া।

 

Tafsir		36:45
وَإِذَا قِيلَ لَهُمُ اتَّقُوا مَا بَيْنَ أَيْدِيكُمْ وَمَا خَلْفَكُمْ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ
এবং যখন তাদেরকে বলা হয়, ‘তোমরা ভয় করো তাকে, যা তোমাদের সম্মুখে আছে এবং যা তোমাদের পেছনে আগমনকারী এ আশায় যে, তোমাদের প্রতি দয়া প্রদর্শন করা হবে;’ তখন তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়।

 

Tafsir		36:46
وَمَا تَأْتِيهِم مِّنْ آيَةٍ مِّنْ آيَاتِ رَبِّهِمْ إِلَّا كَانُوا عَنْهَا مُعْرِضِينَ
এবং যখনই তাদের রবের নিদর্শনসমূহ থেকে কোন নিদর্শন তাদের নিকট আসে, তখন তা থেকে তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়।

 

Tafsir		36:47
وَإِذَا قِيلَ لَهُمْ أَنفِقُوا مِمَّا رَزَقَكُمُ اللَّهُ قَالَ الَّذِينَ كَفَرُوا لِلَّذِينَ آمَنُوا أَنُطْعِمُ مَن لَّوْ يَشَاءُ اللَّهُ أَطْعَمَهُ إِنْ أَنتُمْ إِلَّا فِي ضَلَالٍ مُّبِينٍ
এবং যখন তাদেরকে বলা হয়, ‘আল্লাহ্‌ প্রদত্ত সম্পদ থেকে তার পথে কিছু ব্যয় করো’, তখন কাফিরগণ মুসলমানদেরকে বলে, ‘আমরা কি তাকেই আহার করাবো, যাকে আল্লাহ্‌ ইচ্ছা করলে আহার করাতেন?’ তোমরা তো সুস্পষ্ট পথভ্রষ্টতার মধ্যেই রয়েছো।

 

Tafsir		36:48
وَيَقُولُونَ مَتَىٰ هَٰذَا الْوَعْدُ إِن كُنتُمْ صَادِقِينَ
এবং বলে, ‘কবে আসবে এ প্রতিশ্রুতি, যদি তোমরা সত্যবাদী হও?’

 

Tafsir		36:49
مَا يَنظُرُونَ إِلَّا صَيْحَةً وَاحِدَةً تَأْخُذُهُمْ وَهُمْ يَخِصِّمُونَ
অপেক্ষা করছে না, কিন্তু একটা বিকট শব্দের, যা তাদেরকে পেয়ে বসবে যখন তারা দুনিয়ার বাক বিতন্দর মধ্যে ব্যস্ত থাকবে।

 

Tafsir		36:50
فَلَا يَسْتَطِيعُونَ تَوْصِيَةً وَلَا إِلَىٰ أَهْلِهِمْ يَرْجِعُونَ
তখন তারা না ওসীয়ত করতে পারবে, এবং না আপন ঘরে ফিরে যেতে পারবে।

 

Tafsir		36:51
وَنُفِخَ فِي الصُّورِ فَإِذَا هُم مِّنَ الْأَجْدَاثِ إِلَىٰ رَبِّهِمْ يَنسِلُونَ
এবং ফুঁৎকার দেওয়া হবে শিঙ্গায়, তখনই তারা কবরগুলো থেকে আপন রবের প্রতি ছুটে আসবে।

 

Tafsir		36:52
قَالُوا يَا وَيْلَنَا مَن بَعَثَنَا مِن مَّرْقَدِنَا ۜ ۗ هَٰذَا مَا وَعَدَ الرَّحْمَٰنُ وَصَدَقَ الْمُرْسَلُونَ
বলবে, ‘হায়, আমাদের দুর্ভোগ! কে আমাদেরকে নিদ্রা থেকে জাগ্রত করলো! এটা হচ্ছে তাই, যার প্রতিশ্রুতি রাহমান দিয়েছিলেন এবং রসূলগণ সত্য বলেছেন’।

 

Tafsir		36:53
إِن كَانَتْ إِلَّا صَيْحَةً وَاحِدَةً فَإِذَا هُمْ جَمِيعٌ لَّدَيْنَا مُحْضَرُونَ
তা’তো হবেনা, কিন্তু এক বিকট শব্দ, তখনই তারা সবাই আমার সম্মুখে হাযির হয়ে যাবে।

 

Tafsir		36:54
فَالْيَوْمَ لَا تُظْلَمُ نَفْسٌ شَيْئًا وَلَا تُجْزَوْنَ إِلَّا مَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ
সুতরাং আজ কোন আত্নার উপর কোন যুল্‌ম হবে না এবং তোমরা কেবল আপন কৃতকর্মের প্রতিফলই পাবে।

 

Tafsir		36:55
إِنَّ أَصْحَابَ الْجَنَّةِ الْيَوْمَ فِي شُغُلٍ فَاكِهُونَ
নিশ্চয় জান্নাতবাসীগণ আজ মনের আনন্দে শান্তি ভোগ করছে।

 

Tafsir		36:56
هُمْ وَأَزْوَاجُهُمْ فِي ظِلَالٍ عَلَى الْأَرَائِكِ مُتَّكِئُونَ
তারা এবং তাদের স্ত্রীগণ ছায়াসমূহে রয়েছে আসমানসমূহে হেলান দিয়ে।

 

Tafsir		36:57
لَهُمْ فِيهَا فَاكِهَةٌ وَلَهُم مَّا يَدَّعُونَ
তাদের জন্য তাতে ফলমূল রয়েছে এবং তাতে তাদের জন্য রয়েছে যা তারা চাইবে।

 

Tafsir		36:58
سَلَامٌ قَوْلًا مِّن رَّبٍّ رَّحِيمٍ
তাদের উপর হবে ‘সালাম’, বলা হবে- পরম দয়ালু রবের পক্ষ থেকে।

 

Tafsir		36:59
وَامْتَازُوا الْيَوْمَ أَيُّهَا الْمُجْرِمُونَ
আর ‘আজ পৃথক হয়ে যাও হে অপরাধীরা!’

 

Tafsir		36:60
أَلَمْ أَعْهَدْ إِلَيْكُمْ يَا بَنِي آدَمَ أَن لَّا تَعْبُدُوا الشَّيْطَانَ ۖ إِنَّهُ لَكُمْ عَدُوٌّ مُّبِينٌ
হে আদম সন্তানগণ! আমি কি তোমাদের নিকট থেকে অঙ্গীকার গ্রহণ করি নি- শয়তানকে পূজা করো না, নিশ্চয় সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু?

 

Tafsir		36:61
وَأَنِ اعْبُدُونِي ۚ هَٰذَا صِرَاطٌ مُّسْتَقِيمٌ
এবং আমার বন্দেগী করো। এটা সোজা পথ।

 

Tafsir		36:62
وَلَقَدْ أَضَلَّ مِنكُمْ جِبِلًّا كَثِيرًا ۖ أَفَلَمْ تَكُونُوا تَعْقِلُونَ
এবং নিশ্চয় সে তোমাদের মধ্যে অনেক সৃষ্টিকে পথভ্রষ্ট করে দিয়েছে। তবুও কি তোমাদের বিবেক ছিলো না?

 

Tafsir		36:63
هَٰذِهِ جَهَنَّمُ الَّتِي كُنتُمْ تُوعَدُونَ
এটা হচ্ছে ওই জাহান্নাম, যেটার প্রতিশ্রুতি তোমাদের সাথে ছিলো।

 

Tafsir		36:64
اصْلَوْهَا الْيَوْمَ بِمَا كُنتُمْ تَكْفُرُونَ
আজ সেটার মধ্যে যাও; নিজেদের কুফরের প্রতিফলস্বরূপ।

 

Tafsir		36:65
الْيَوْمَ نَخْتِمُ عَلَىٰ أَفْوَاهِهِمْ وَتُكَلِّمُنَا أَيْدِيهِمْ وَتَشْهَدُ أَرْجُلُهُم بِمَا كَانُوا يَكْسِبُونَ
আজ আমি তাদের মুখগুলোর উপর মোহর করে দেবো এবং তাদের হাত আমার সাথে কথা বলবে আর তাদের পা তাদের কৃতকর্মের সাক্ষ্য দেবে।

 

Tafsir		36:66
وَلَوْ نَشَاءُ لَطَمَسْنَا عَلَىٰ أَعْيُنِهِمْ فَاسْتَبَقُوا الصِّرَاطَ فَأَنَّىٰ يُبْصِرُونَ
এবং আমি যদি ইচ্ছা করতাম তবে তাদের চোখগুলোকে বিলীন করে দিতাম; অতঃপর তারা লম্ফ দিয়ে রাস্তার দিকে যেতো, তখন তারা কিছুই দেখতো না।

 

Tafsir		36:67
وَلَوْ نَشَاءُ لَمَسَخْنَاهُمْ عَلَىٰ مَكَانَتِهِمْ فَمَا اسْتَطَاعُوا مُضِيًّا وَلَا يَرْجِعُونَ
এবং আমি ইচ্ছা করলে তাদের ঘরে বসা অবস্থায় তাদের আকৃতিগুলো বিকৃত করে দিতাম তখন তারা না আগে বাড়তে পারতো, না পেছনে ফিরে আসতে পারতো।

 

Tafsir		36:68
وَمَن نُّعَمِّرْهُ نُنَكِّسْهُ فِي الْخَلْقِ ۖ أَفَلَا يَعْقِلُونَ
এবং যাকে আমি দীর্ঘায়ু প্রদান করি তাকে সৃষ্টিগত গঠনের মধ্যে উল্টো দিকে ফিরিয়ে দিই। তবুও কি তারা বুঝে না?

 

Tafsir		36:69
وَمَا عَلَّمْنَاهُ الشِّعْرَ وَمَا يَنبَغِي لَهُ ۚ إِنْ هُوَ إِلَّا ذِكْرٌ وَقُرْآنٌ مُّبِينٌ
এবং আমি তাকে কাব্য রচনা করা শেখাই নি এবং না তা শোভা পায় তার মর্যাদার জন্য। তা তো নয়, কিন্তু উপদেশ সুস্পষ্ট ক্বোরআনই;

 

Tafsir		36:70
لِّيُنذِرَ مَن كَانَ حَيًّا وَيَحِقَّ الْقَوْلُ عَلَى الْكَافِرِينَ
যাতে সতর্ক করে যে জীবিত থাকে তাকে; এবং (যাতে) কাফিরদের উপর বাণী অবধারিত হয়ে যায়।

 

Tafsir		36:71
أَوَلَمْ يَرَوْا أَنَّا خَلَقْنَا لَهُم مِّمَّا عَمِلَتْ أَيْدِينَا أَنْعَامًا فَهُمْ لَهَا مَالِكُونَ
এবং তারা কি দেখে নি যে, আমি আপন হাতের তৈরীকৃত চতুষ্পদ জন্তু তাদের জন্য সৃষ্টি করেছি, অতঃপর এরা সেগুলোর মালিক?

 

Tafsir		36:72
وَذَلَّلْنَاهَا لَهُمْ فَمِنْهَا رَكُوبُهُمْ وَمِنْهَا يَأْكُلُونَ
এবং সেগুলোকে তাদের জন্য নরম (বশীভূত) করে দিয়েছি। সুতরাং কতেকের উপর আরোহণ করে এবং কতেককে আহার করে।

 

Tafsir		36:73
وَلَهُمْ فِيهَا مَنَافِعُ وَمَشَارِبُ ۖ أَفَلَا يَشْكُرُونَ
এবং তাদের জন্য সেগুলোর মধ্যে কয়েক প্রকার উপকারিতা এবং পানীয় বস্তুসমূহ রয়েছে। তবুও কি তারা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে না?

 

Tafsir		36:74
وَاتَّخَذُوا مِن دُونِ اللَّهِ آلِهَةً لَّعَلَّهُمْ يُنصَرُونَ
এবং তারা আল্লাহ্‌ ব্যতীত অন্য খোদা সাব্যস্ত করে নিয়েছে, এ আশায় যে, তাদেরকে সাহায্য করা হবে।

 

Tafsir		36:75
لَا يَسْتَطِيعُونَ نَصْرَهُمْ وَهُمْ لَهُمْ جُندٌ مُّحْضَرُونَ
সেগুলো তাদের সাহায্য করতে পারে না এবং সেগুলো তাদের বাহিনী, সবাইকে গ্রেফতার করে হাযির করা হবে।

 

Tafsir		36:76
فَلَا يَحْزُنكَ قَوْلُهُمْ ۘ إِنَّا نَعْلَمُ مَا يُسِرُّونَ وَمَا يُعْلِنُونَ
অতএব, আপনি তাদের কথায় দুঃখ করবেন না, নিশ্চয় আমি জানি যা তারা গোপন করে এবং প্রকাশ করে।

 

Tafsir		36:77
أَوَلَمْ يَرَ الْإِنسَانُ أَنَّا خَلَقْنَاهُ مِن نُّطْفَةٍ فَإِذَا هُوَ خَصِيمٌ مُّبِينٌ
এবং মানুষ কি দেখেনি যে, আমি তাকে পানির ফোঁটা (শুক্রবিন্দু) থেকে সৃষ্টি করেছি? অতঃপর সে (হয়ে যায়) প্রকাশ্য ঝগড়াটে।

 

Tafsir		36:78
وَضَرَبَ لَنَا مَثَلًا وَنَسِيَ خَلْقَهُ ۖ قَالَ مَن يُحْيِي الْعِظَامَ وَهِيَ رَمِيمٌ
এবং আমার জন্য উপমা রচনা করে আর নিজের সৃষ্টির কথা ভুলে গেছে। বললো, ‘এমন কে আছে যে অস্থিগুলোতে প্রাণ সঞ্চার করবে যখন সেগুলো একেবারে পচে গলে যায়?’

 

Tafsir		36:79
قُلْ يُحْيِيهَا الَّذِي أَنشَأَهَا أَوَّلَ مَرَّةٍ ۖ وَهُوَ بِكُلِّ خَلْقٍ عَلِيمٌ
আপনি বলুন! ‘সেগুলো তিনিই জীবিত করবেন, যিনি প্রথমবার সেগুলো সৃষ্টি করেছেন এবং তাঁরই নিকট প্রত্যেক সৃষ্টি সম্বন্ধে জ্ঞান রয়েছে;

 

Tafsir		36:80
الَّذِي جَعَلَ لَكُم مِّنَ الشَّجَرِ الْأَخْضَرِ نَارًا فَإِذَا أَنتُم مِّنْهُ تُوقِدُونَ
যিনি তোমাদের জন্য সবুজ বৃক্ষ থেকে আগুন সৃষ্টি করেছেন, তখনই তোমরা তা দ্বারা আগুন জ্বালিয়ে থাকো।

 

Tafsir		36:81
أَوَلَيْسَ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ بِقَادِرٍ عَلَىٰ أَن يَخْلُقَ مِثْلَهُم ۚ بَلَىٰ وَهُوَ الْخَلَّاقُ الْعَلِيمُ
এবং যিনি আসমান ও যমীন সৃষ্টি করেছেন, তিনি কি সেগুলোর মতো আরো সৃষ্টি করতে পারেন না? কেন নয়? আর তিনিই হন মহান স্রষ্টা, সর্বজ্ঞ।

 

Tafsir		36:82
إِنَّمَا أَمْرُهُ إِذَا أَرَادَ شَيْئًا أَن يَقُولَ لَهُ كُن فَيَكُونُ
তার কাজ তো এ যে, যখন কোন কিছু করতে চান তখন সেটার উদ্দেশে বলেন, ‘হয়ে যা’। তা তৎক্ষণাৎ হয়ে যায়।

 

Tafsir		36:83
فَسُبْحَانَ الَّذِي بِيَدِهِ مَلَكُوتُ كُلِّ شَيْءٍ وَإِلَيْهِ تُرْجَعُونَ
সুতরাং পবিত্রতা তাঁরই, যার হাতে প্রত্যেক কিছুর ক্ষমতা রয়েছে এবং তাঁরই দিকে তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে।