সূরা নাজ্‌ম -‏النجم‎ 

~ সুরা পরিচিতি ~

---

 

Tafsir		53:1
وَالنَّجْمِ إِذَا هَوَىٰ
ওই প্রিয় উজ্জ্বল নক্ষত্র মুহাম্মদের শপথ, যখন তিনি মি’রাজ থেকে অবতরণ করেন;

 

Tafsir		53:2
مَا ضَلَّ صَاحِبُكُمْ وَمَا غَوَىٰ
তোমাদের ‘সাহিব’ না পথভ্রষ্ট হয়েছেন, না বিপথে চলেছেন।

 

Tafsir		53:3
وَمَا يَنطِقُ عَنِ الْهَوَىٰ
এবং তিনি কোন কথা নিজ প্রবৃত্তি থেকে বলেন না।

 

Tafsir		53:4
إِنْ هُوَ إِلَّا وَحْيٌ يُوحَىٰ
তা তো ওহীই, যার তার প্রতি (নাযিল) করা হয়।

 

Tafsir		53:5
عَلَّمَهُ شَدِيدُ الْقُوَىٰ
তাকে শিক্ষা দিয়েছেন প্রবল শক্তিসমূহের অধিকারী,

 

Tafsir		53:6
ذُو مِرَّةٍ فَاسْتَوَىٰ
শক্তিমান। অতঃপর ওই জ্যোতি ইচ্ছা করলেন;

 

Tafsir		53:7
وَهُوَ بِالْأُفُقِ الْأَعْلَىٰ
আর ইনি উচ্চাকাশের সর্বোচ্চ দিগন্তে ছিলেন।

 

Tafsir		53:8
ثُمَّ دَنَا فَتَدَلَّىٰ
অতঃপর ওই জ্যোতি নিকটবর্তী হলো। অতঃপর খুব নেমে আসলো।

 

Tafsir		53:9
فَكَانَ قَابَ قَوْسَيْنِ أَوْ أَدْنَىٰ
অতঃপর ওই জ্যোতি ও এ মাহবূবের মধ্যে দু’ হাতের ব্যবধান রইলো, বরং তদপেক্ষাও কম।

 

Tafsir		53:10
فَأَوْحَىٰ إِلَىٰ عَبْدِهِ مَا أَوْحَىٰ
তখন ওহী করলেন আপন বান্দার প্রতি যা ওহী করার ছিলো।

 

Tafsir		53:11
مَا كَذَبَ الْفُؤَادُ مَا رَأَىٰ
অন্তর মিথ্যা বলে নি যা দেখেছে।

 

Tafsir		53:12
أَفَتُمَارُونَهُ عَلَىٰ مَا يَرَىٰ
তবে কি তোমরা তার সাথে তিনি যা দেখেছেন তাতে বিতর্ক করছো?

 

Tafsir		53:13
وَلَقَدْ رَآهُ نَزْلَةً أُخْرَىٰ
এবং তিনি তো ওই জ্যোতি দু’বারদেখেছেন;

 

Tafsir		53:14
عِندَ سِدْرَةِ الْمُنتَهَىٰ
সিদরাতুল মুন্তাহার নিকটে।

 

Tafsir		53:15
عِندَهَا جَنَّةُ الْمَأْوَىٰ
সেটার নিকট রয়েছে ‘জান্নাতুল মা’ওয়া।

 

Tafsir		53:16
إِذْ يَغْشَى السِّدْرَةَ مَا يَغْشَىٰ
যখন সিদরার উপর আচ্ছন্ন করছিলো যা আচ্ছন্ন করছিলো;

 

Tafsir		53:17
مَا زَاغَ الْبَصَرُ وَمَا طَغَىٰ
চক্ষু না কোন দিকে ফিরেছে, না সীমাতিক্রম করেছে।

 

Tafsir		53:18
لَقَدْ رَأَىٰ مِنْ آيَاتِ رَبِّهِ الْكُبْرَىٰ
নিশ্চয় আপন রবের বহু বড় নিদর্শনাদি দেখেছেন।

 

Tafsir		53:19
أَفَرَأَيْتُمُ اللَّاتَ وَالْعُزَّىٰ
তবে কি তোমরা দেখেছো লা-ত ও ওয্‌যা

 

Tafsir		53:20
وَمَنَاةَ الثَّالِثَةَ الْأُخْرَىٰ
এবং ওই তৃতীয় মানাতকে?

 

Tafsir		53:21
أَلَكُمُ الذَّكَرُ وَلَهُ الْأُنثَىٰ
তোমাদের জন্য কি পুত্র, আর তার জন্য কি কন্যা?

 

Tafsir		53:22
تِلْكَ إِذًا قِسْمَةٌ ضِيزَىٰ
তখন তো এটা জঘন্য অসঙ্গত বন্টন!

 

Tafsir		53:23
إِنْ هِيَ إِلَّا أَسْمَاءٌ سَمَّيْتُمُوهَا أَنتُمْ وَآبَاؤُكُم مَّا أَنزَلَ اللَّهُ بِهَا مِن سُلْطَانٍ ۚ إِن يَتَّبِعُونَ إِلَّا الظَّنَّ وَمَا تَهْوَى الْأَنفُسُ ۖ وَلَقَدْ جَاءَهُم مِّن رَّبِّهِمُ الْهُدَىٰ
সেগুলো তো নয়, কিন্তু কিছু নাম, যেগুলো তোমরা ও তোমাদের পিতৃপুরুষগণ রেখে ফেলেছো। আল্লাহ্‌ সেগুলোর পক্ষে কোন সনদ অবতীর্ণ করেন নি। তারা তো নিছক কল্পনা ও প্রবৃত্তিরই অনুসরণ করছে। অথচ নিশ্চয় তাদের নিকট তাদের রবের নিকট থেকে হিদায়ত এসেছে।

 

Tafsir		53:24
أَمْ لِلْإِنسَانِ مَا تَمَنَّىٰ
মানুষ কি পেয়ে যাবে যা কিছুর সে কামনা করবে?

 

Tafsir		53:25
فَلِلَّهِ الْآخِرَةُ وَالْأُولَىٰ
সুতরাং আখিরাত ও দুনিয়া সবকিছুর মালিক একমাত্র আল্লাহ্‌।

 

Tafsir		53:26
وَكَم مِّن مَّلَكٍ فِي السَّمَاوَاتِ لَا تُغْنِي شَفَاعَتُهُمْ شَيْئًا إِلَّا مِن بَعْدِ أَن يَأْذَنَ اللَّهُ لِمَن يَشَاءُ وَيَرْضَىٰ
এবং কত ফিরিশ্‌তাই রয়েছে আস্‌মানসমূহে যে, তাদের সুপারিশ কোন কাজে আসে না, কিন্তু যখন আল্লাহ্‌ অনুমতি দিয়ে দেবেন, যার পক্ষে চান ও পছন্দ করেন।

 

Tafsir		53:27
إِنَّ الَّذِينَ لَا يُؤْمِنُونَ بِالْآخِرَةِ لَيُسَمُّونَ الْمَلَائِكَةَ تَسْمِيَةَ الْأُنثَىٰ
নিশ্চয় ওই সব লোক, যারা পরকালের উপর ঈমান রাখে না, তারা ফিরিশ্‌তাদের নাম নারীদের মতোই রাখে।

 

Tafsir		53:28
وَمَا لَهُم بِهِ مِنْ عِلْمٍ ۖ إِن يَتَّبِعُونَ إِلَّا الظَّنَّ ۖ وَإِنَّ الظَّنَّ لَا يُغْنِي مِنَ الْحَقِّ شَيْئًا
এবং তাদের সে সম্পর্কে কোন খবর নেই। তারা তো নিছক অনুমানের পেছনে পড়েছে এবং নিশ্চয় অনুমান নিশ্চিত বিশ্বাসের স্থলে কোন কাজে আসে না।

 

Tafsir		53:29
فَأَعْرِضْ عَن مَّن تَوَلَّىٰ عَن ذِكْرِنَا وَلَمْ يُرِدْ إِلَّا الْحَيَاةَ الدُّنْيَا
সুতরাং আপনি তারই দিকে থেকে মুখ ফিরিয়ে নিন, যে আমার স্মরণ থেকে ফিরে গেছে। এবং সে তো কেবল পার্থিব জীবনই চায়।

 

Tafsir		53:30
ذَٰلِكَ مَبْلَغُهُم مِّنَ الْعِلْمِ ۚ إِنَّ رَبَّكَ هُوَ أَعْلَمُ بِمَن ضَلَّ عَن سَبِيلِهِ وَهُوَ أَعْلَمُ بِمَنِ اهْتَدَىٰ
এখান পর্যন্তই তাদের জ্ঞানের দৌড়। নিশ্চয় আপনার রব খুব জানেন তারই সম্পর্কে, যে তার পথ থেকে বিচ্যুত হয়েছে এবং তিনি ভালভাবে জানেন তাকে, যে সঠিক পথ পেয়েছে।

 

Tafsir		53:31
وَلِلَّهِ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ لِيَجْزِيَ الَّذِينَ أَسَاءُوا بِمَا عَمِلُوا وَيَجْزِيَ الَّذِينَ أَحْسَنُوا بِالْحُسْنَى
এবং আল্লাহ্‌রই যা কিছু আস্‌মানসমূহে রয়েছে এবং যা কিছু যমীনে রয়েছে; যাতে দুষ্কৃতকারীদেরকে তাদের কৃতকর্মের বদলা দেন এবং সৎকর্মপরায়ণদেরকে অত্যন্ত উত্তম প্রতিদান প্রদান করেন।

 

Tafsir		53:32
الَّذِينَ يَجْتَنِبُونَ كَبَائِرَ الْإِثْمِ وَالْفَوَاحِشَ إِلَّا اللَّمَمَ ۚ إِنَّ رَبَّكَ وَاسِعُ الْمَغْفِرَةِ ۚ هُوَ أَعْلَمُ بِكُمْ إِذْ أَنشَأَكُم مِّنَ الْأَرْضِ وَإِذْ أَنتُمْ أَجِنَّةٌ فِي بُطُونِ أُمَّهَاتِكُمْ ۖ فَلَا تُزَكُّوا أَنفُسَكُمْ ۖ هُوَ أَعْلَمُ بِمَنِ اتَّقَىٰ
ওই সব লোক, যারা মহাপাপগুলো ও অশ্লীল কার্যকলাপ থেকে বেচে থাকে, কিন্তু এতটুকুই যে, পাপের নিকটে গিয়েছে ও বিরত হয়েছে, নিশ্চয় আপনার রবের ক্ষমা প্রশস্ত। তিনি তোমাদেরকে খুব ভালভাবে জানেন। তোমাদেরকে মাটি থেকে সৃষ্টি করেছেনে এবং যখন তোমরা তোমাদের মায়ের গর্ভের মধ্যে ভ্রূণরূপে ছিলে। সুতরাং নিজেরা নিজেদেরকে পবিত্র পরিচ্ছন্ন বলো না; তিনি ভালভাবে জানেন যারা খোদাভীরু।

 

Tafsir		53:33
أَفَرَأَيْتَ الَّذِي تَوَلَّىٰ
তবে কি আপনি দেখেছেনতাকে, যে বিমুখ হয়েছে?

 

Tafsir		53:34
وَأَعْطَىٰ قَلِيلًا وَأَكْدَىٰ
এবং সামান্য কিছু দিয়েছে এবং রুখে রেখেছে?

 

Tafsir		53:35
أَعِندَهُ عِلْمُ الْغَيْبِ فَهُوَ يَرَىٰ
তার নিকট কি অদৃশ্যের জ্ঞান আছে, সুতরাং সে দেখছে?

 

Tafsir		53:36
أَمْ لَمْ يُنَبَّأْ بِمَا فِي صُحُفِ مُوسَىٰ
তার নিকট কি খবর আসে নি সে সম্পর্কে, যা সহীফাগুলোতে (কিতাবে) আছে-মূসার,

 

Tafsir		53:37
وَإِبْرَاهِيمَ الَّذِي وَفَّىٰ
এবং ইব্রাহীমের, যে বিধানাবলী যথাযথভাবে পালন করেছে?

 

Tafsir		53:38
أَلَّا تَزِرُ وَازِرَةٌ وِزْرَ أُخْرَىٰ
যে, কোন বোঝা বহনকারী আত্না অন্য কোন আত্নার বোঝা বহন করে না;

 

Tafsir		53:39
وَأَن لَّيْسَ لِلْإِنسَانِ إِلَّا مَا سَعَىٰ
এবং এ যে, মানুষ পাবে না, কিন্তু আপন প্রচেষ্টা।

 

Tafsir		53:40
وَأَنَّ سَعْيَهُ سَوْفَ يُرَىٰ
এবং এ যে, তার প্রচেষ্টা শীঘ্রই প্রতিদান দেখা যাবে।s

 

Tafsir		53:41
ثُمَّ يُجْزَاهُ الْجَزَاءَ الْأَوْفَىٰ
অতঃপর তাকে পূর্ণমাত্রায় প্রতিদান দেওয়া হবে;

 

Tafsir		53:42
وَأَنَّ إِلَىٰ رَبِّكَ الْمُنتَهَىٰ
এবং এ যে, নিশ্চয় আপনারই রবের দিকে সমাপ্তি।

 

Tafsir		53:43
وَأَنَّهُ هُوَ أَضْحَكَ وَأَبْكَىٰ
এবং এ যে, তিনিই, যিনি হাসিয়েছেন এবং কাঁদিয়েছেন;

 

Tafsir		53:44
وَأَنَّهُ هُوَ أَمَاتَ وَأَحْيَا
এবং এ যে, তিনিই, যিনি মৃত্যু ঘটান ও জীবিত করেন;

 

Tafsir		53:45
وَأَنَّهُ خَلَقَ الزَّوْجَيْنِ الذَّكَرَ وَالْأُنثَىٰ
এবং এ যে, তিনিই দু’জোড়া তৈরী করেন- নর ও নারী;

 

Tafsir		53:46
مِن نُّطْفَةٍ إِذَا تُمْنَىٰ
বীর্য থেকে, যখন স্থূলিত হয়।

 

Tafsir		53:47
وَأَنَّ عَلَيْهِ النَّشْأَةَ الْأُخْرَىٰ
এবং এ যে, তাঁরই দায়িত্বে শেষ উত্থান।

 

Tafsir		53:48
وَأَنَّهُ هُوَ أَغْنَىٰ وَأَقْنَىٰ
এবং এ যে, তিনিই অভাবমুক্তি দান করেছেন এবং স্বল্পে তুষ্টি দিয়েছেন,

 

Tafsir		53:49
وَأَنَّهُ هُوَ رَبُّ الشِّعْرَىٰ
এবং এ যে, তিনিই ‘শি‘রা’ নক্ষত্রের রব্‌।

 

Tafsir		53:50
وَأَنَّهُ أَهْلَكَ عَادًا الْأُولَىٰ
এবং এ যে, তিনিই প্রথম ‘আদকে ধ্বংস করেছেন,

 

Tafsir		53:51
وَثَمُودَ فَمَا أَبْقَىٰ
এবং সামূদকে; সুতরাং কাউকেও অবশিষ্ট রাখেন নি;

 

Tafsir		53:52
وَقَوْمَ نُوحٍ مِّن قَبْلُ ۖ إِنَّهُمْ كَانُوا هُمْ أَظْلَمَ وَأَطْغَىٰ
এবং তাদের পূর্বে নূহের সম্প্রদায়কে। নিশ্চয় তারা তাদের চেয়েও অধিক যালিম ও অবাধ্য ছিলো।

 

Tafsir		53:53
وَالْمُؤْتَفِكَةَ أَهْوَىٰ
এবং তিনি পাল্টে যাবার বস্তিকে নিচে পতিত করেছেন;

 

Tafsir		53:54
فَغَشَّاهَا مَا غَشَّىٰ
অতঃপর সেটার উপর আচ্ছন্ন করেছে যা কিছু আচ্ছন্ন করার ছিলো।

 

Tafsir		53:55
فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكَ تَتَمَارَىٰ
সুতরাং হে শ্রোতা! আপন রবের কোন অনুগ্রহের মধ্যে সন্দেহ করবে?>

 

Tafsir		53:56
هَٰذَا نَذِيرٌ مِّنَ النُّذُرِ الْأُولَىٰ
ইনি একজন সতর্ককারী পূর্ববর্তী সতর্ককারীদের ন্যায়।

 

Tafsir		53:57
أَزِفَتِ الْآزِفَةُ
নিকটে এসেছে নিকটে আগমনকারী।

 

Tafsir		53:58
لَيْسَ لَهَا مِن دُونِ اللَّهِ كَاشِفَةٌ
আল্লাহ্‌ ব্যতীত কেউ সেটার প্রকাশকারী নেই।

 

Tafsir		53:59
أَفَمِنْ هَٰذَا الْحَدِيثِ تَعْجَبُونَ
তোমরা কি এ বাণীতে বিস্মিত হও?

 

Tafsir		53:60
وَتَضْحَكُونَ وَلَا تَبْكُونَ
হাসছো এবং কাদছো না?

 

Tafsir		53:61
وَأَنتُمْ سَامِدُونَ
এবং তোমরা খেলাধূলায় মগ্ন আছো!

 

Tafsir		53:62
فَاسْجُدُوا لِلَّهِ وَاعْبُدُوا ۩
সুতরাং আল্লাহ্‌র জন্য সাজদা এবং তার বন্দেগী করো।