যাতে আল্লাহ আপনার কারণে ক্ষমা করে দেন আপনার পূর্ববর্তীদের ও আপনার পরবর্তীদের গুনাহ্ এবং আপন নি’মাতসমূহ আপনার উপর পরিপূর্ণ করে দেন আর আপনাকে সোজা পথ দেখিয়ে দেন;
তিনিই, যিনি ঈমানদারদের অন্তসমূহে প্রশান্তি অবতীর্ণ করেন, যাতে তাদের মধ্যে দৃঢ় বিশ্বাসের উপর দৃঢ় বিশ্বাস বৃদ্ধি পায়; এবং আল্লাহরই মালিকানাধীন সমস্ত বাহিনী আসমানসমূহ ও যমীনের; এবং আল্লাহ জ্ঞানময়, প্রজ্ঞাময়;
যাতে ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারীদেরকে বাগানসমূহে নিয়ে যান, যেগুলোর নিম্নদেশে নহরসমূহ প্রবহমান, তারা সেগুলোর মধ্যে স্থায়ীভাবে থাকবে; এবং তাদের পাপরাশি তাদের থেকে মোচন করে দেন। আর এটা আল্লাহর নিকট মহা সাফল্য।
এবং শান্তি দেন মুনাফিক্ব পুরুষ ও মুনাফিক্ব নারীদেরকে এবং মুশরিক পুরুষ ও মুশরিক নারীদেরকে, যারা আল্লাহ সম্বন্ধে ধারণা পোষণ করে-মন্দ ধারণা। তাদের উপর রয়েছে মন্দচক্র। এবং আল্লাহ তাদের উপর ক্রব্ধ হয়েছেন ও তাদের উপর অভিসম্পাত করছেন আর তাদের জন্য জাহান্নাম তৈরী করেছেন; এবং তা কতই মন্দ পরিণাম!
যাতে হে লোকেরা! তোমরা আল্লাহ ও তার রসূলের উপর ঈমান আনো এবং রসূলের মহত্ব বর্ণনা ও (তার প্রতি) সম্মান প্রদর্শন করো আর সকাল-সন্ধ্যা আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করো।
ওই সব লোক, যারা আপনার নিকট বায়’আত গ্রহণ করেছে তারা তো আল্লাহরই নিকট বায়’আত গ্রহণ করেছে। তাদের হাতগুলোর উপর আল্লাহর হাত রয়েছে। সুতরাং যে কেউ অঙ্গীকার ভঙ্গ করেছে সে নিজেরাই অনিষ্টার্থে অঙ্গীকার ভঙ্গ করেছে; আর যে কেউ পূরণ করেছে ওই অঙ্গীকার, যা সে আল্লাহর সাথে করেছিলো, তবে অতি সত্বর আল্লাহ তাকে মহা পুরস্কার দেবেন।
এখন আপনাকে, যেসব মরুবাসী পেছনে (ঘরে) রয়েগিয়েছিলো তার বলবে, ‘আমাদের ধন-সম্পদ ও আমাদের পরিবার পরিজন আমাদেরকে যাওয়া থেকে বিরত রেখেছে। এখন হুযূর! আমাদের ক্ষমার জন্য প্রার্থনা করুন। তাদের মুখে ওই কথা বলে, যা তাদের অন্তরে নেই, আপনি বলুন, ‘সুতরাং আল্লাহর সামনে তোমাদের রক্ষার্থে কার কি ক্ষমতা আছে, যদি তিনি তোমাদের অনিষ্ট চান অথবা তোমাদের মঙ্গলের ইচ্ছা করেন?’ বরং আল্লাহ তোমাদের কৃতকর্ম সম্পর্কে অবগত আছেন।
বরং তোমরা তো এ মনে করেছিলে যে, রসূল ও মুসলমানগণ কখনো তাদের ঘরের দিকে ফিরে আসবে না এবং সেটাকেই নিজেদের অন্তরগুলোর মধ্যে ভালো মনে করে বসেছিলে এবং তোমরা মন্দ ধারণা পোষণ করেছো। আর তোমরা ধ্বংস হবার লোক ছিলে।
এখন যারা পেছনে বসে আছে তারা বলবে, যখন তোমরা গনীমতের মাল নিতে যাবে, ‘সুতরাং আমাদেরকেও তোমাদের পেছনে আসতে দাও’। তারা চায় আল্লাহর বাণী বদলে ফেলতে। আপনি বলুন, ‘তোমরা কখনো আমাদের সাথে এসো না! আলাহ প্রথম থেকে এমনিই বলে দিয়েছেন’। অতঃপর এখন তারা বলবে, ‘বরং তোমরা আমাদের প্রতি বিদ্বেষভাব পোষণ করছো। বরং তারা কথা বুঝতো না, কিন্তু স্বল্প কিছু।
ওই সব পেছনে অবস্থানকারী মরুবাসীদেরকে বলে দিন, ‘অবিলম্বে তোমাদেরকে এক জঘন্য যুদ্ধবাজ সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান করা হবে যে, তাদের সাথে যুদ্ধ করো! অথবা তারা মুসলমান হয়ে যাবে। অতঃপর যদি তোমরা আদেশ মেনে নাও তবে আল্লাহ তোমাদেরকে উত্তম প্রতিদান দেবেন। আর যদি ফিরে যাও যেমন পূর্বে ফিরে গিয়েছিলে, তবে তোমাদেরকে বেদনাদায়ক শাস্তি দেবেন।
না অন্ধের জন্য কোন অপরাধ আছে, না খোড়া ব্যক্তির জন্য কোন অসুবিধা আছে এবং না ব্যাধিগ্রস্তের উপর জবাবদিহিতা আছে। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তার রসূলে নির্দেশ মেনে চলে, আল্লাহ তাকে বাগানসমূহে নিয়ে যাবেন, যেগুলোর নিম্নদেশে নহরসমূহ প্রবহমান; এবং যে ফিরে যাবে তাকে বেদনাদায়ক শাস্তি দেবেন।
নিশ্চয় আল্লাহ সন্তুষ্ট হয়েছেন ঈমানদারদের প্রতি যখন তারা ওই বৃক্ষের নীচে আপনার নিকট বায়’আত গ্রহণ করছিলো। সুতরাং আল্লাহ জেনেছেন যা তাদের অন্তরগুলোতে রয়েছে। অতঃপর তাদের উপর প্রশান্তি অবতীর্ণ করেছেন এবং তাদেরকে শীঘ্র আগমনকারী বিজয়ের পুরস্কার দিয়েছেন;
এবং আল্লাহ তোমাদের সাথে ওয়াদা করেছেন বহুল পরিমাণ গনীমতের, যা তোমরা গ্রহণ করবে। সুতরাং তোমাদেরকে এটা শীঘ্রই দান করেছেন এবং মানুষের (অনিষ্টের) হাত তোমাদের দিক থেকে রুখে দিয়েছেন; আর এ জন্য যে, ঈমানদারদের জন্য নিদর্শন হবে এবং তোমাদেরকে সরলপথ দেখাবেন;
এবং তিনিই, যিনি তাদের হাতকে তোমাদের থেকে প্রতিরুদ্ধ করেছেন এবং তোমাদের হাতকে তাদের থেকে প্রতিরুদ্ধ করেছেন মক্কার উপত্যকায় এরপর যে, তোমাদেরকে তাদের উপর ক্ষমতা দিয়ে দিয়েছিলেন এবং আল্লাহ তোমাদের কর্ম প্রত্যক্ষ করছেন।
ওই সব হচ্ছে তারাই, যারা কুফর করেছে এবং তোমাদেরকে মসজিদে হারাম থেকে বাধা দিয়েছে আর ক্বোরবানীর পশুগুলো বাধাপ্রাপ্ত হয়ে রয়েছে আপন স্থানে পৌছা থেকে। এবং যদি এমন না হতো যে, কিছু সংখ্যক মুসলমান নারী, যাদের সম্পর্কে তোমরা অবগত নও, তাদেরকে তোমরা পদদলিত করবে, অতঃপর তোমাদেরকে কোন অবাঞ্ছিত বিষয় স্পর্শ করবে, তবে আমি তোমাদেরকে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার অনুমতি দিতাম।তাদের এ পরিত্রান এ জন্য যে, আল্লাহ আপন অনুগ্রহে প্রবিষ্ট করেন যাকে চান। যদি তারা পৃথক হয়ে যেতো, তবে অবশ্যই আমি তাদের মধ্য থেকে কাফিরদেরকে বেদনাদায়ক শাস্তি দিতাম।
যখন কাফিরগণ তাদের হৃদয়ে পোষণ করে রেখেছে অন্ধকার যুগের গোত্রীয় অহমিকার মতো অহমিকা তখন আল্লাহ আপন প্রশানিত আপন রসূল ও ঈমানদারদের উপর অবতীর্ণ করেছেন এবং খোদাভীরুতার বাণী তাদের উপর অপরিহার্য করেছেন;এবং তারা এরই অধিকতর যোগ্য ও উপযুক্ত ছিলো। এবং আল্লাহ সবকিছু জানেন।
নিশ্চয় আল্লাহ সত্য করে দেখিয়েছেন আপন রসূলের সত্য স্বপ্নকে; নিশ্চয় নিশ্চয় তোমরা মসজিদে হারামে প্রবেশ করবে যদি আল্লাহ চান, নিরাপদে, স্বীয় মাথার চুল মুণ্ডিত অবস্থায় অথবা চুল ছেটে, নির্ভয়ে; সুতরাং তিনি জেনেছেন যা তোমাদের জানা নেই। অতএব, এর পূর্বে এক আসন্ন বিজয় রেখেছেন।
মুহাম্মদ আল্লাহর রসূল; এবং তার সঙ্গে যারা আছে, কাফিরদের উপর কঠোর এবং পরস্পরের মধ্যে সহানুভূতিশীল, তুমি তাদেরকে দেখবে রুকূ’কারী, সাজদারত, আল্লাহর অনুগ্রহ ও সন্তষ্টি কামনা করে, তাদের চিহ্ন তাদের চেহারায় রয়েছে সাজদার চিহ্ন থেকে, তাদের এ বৈশিষ্ট্য তাওরীতের মধ্যে রয়েছে এবং তাদের (অনুরূপ) বৈশিষ্ট্য রয়েছে ইনজীলে; যেমন একটা ক্ষেত, যা আপন চারা উৎপন্ন করেছে, অতঃপর সেটাকে শক্তিশালী করেছে, তারপর তা শক্ত হয়েছে, তারপর আপন কাণ্ডের উপর সোজা হয়ে দণ্ডায়মান হয়েছে, যা চাষীদেরকে আনন্দ দেয়, যাতে তাদের দ্বারা কাফিরদের অন্তর (হিংসার আগুনে) জ্বলে; আল্লাহ ওয়াদা করেছেন তাদের সাথে, যারা তাদের মধ্যে ঈমানদার ও সৎকর্মপরায়ণ-ক্ষমা ও মহা প্রতিদানের।