সূরা আম্বিয়া -‏الأنبياء‎ 

~ সুরা পরিচিতি ~

---

 

Tafsir		21:1
اقْتَرَبَ لِلنَّاسِ حِسَابُهُمْ وَهُمْ فِي غَفْلَةٍ مُّعْرِضُونَ
মানুষের হিসাব নিকাস আসন্ন এবং তারা অলসতায় মুখফিরিয়ে রয়েছে।

 

Tafsir		21:2
مَا يَأْتِيهِم مِّن ذِكْرٍ مِّن رَّبِّهِم مُّحْدَثٍ إِلَّا اسْتَمَعُوهُ وَهُمْ يَلْعَبُونَ
যখন তাদের রবের নিকট থেকে তাদের নিকট কোন উপদেশ আসে, তখন সেটা তারা শুনে না, কিন্তু ক্রীড়া কৌতুকচ্ছলে।

 

Tafsir		21:3
لَاهِيَةً قُلُوبُهُمْ ۗ وَأَسَرُّوا النَّجْوَى الَّذِينَ ظَلَمُوا هَلْ هَٰذَا إِلَّا بَشَرٌ مِّثْلُكُمْ ۖ أَفَتَأْتُونَ السِّحْرَ وَأَنتُمْ تُبْصِرُونَ
তাদের অন্তর খেলাধূলায় পড়ে রয়েছে; এবং যালিমগণ পরস্পরের মধ্যে গোপনে পরামর্শ করেছে, ‘ইনি কে? একজন তোমাদেরই মত মানুষ মাত্র। তোমরা কি দেখেশুনে যাদুর নিকট যাচ্ছো?’

 

Tafsir		21:4
قَالَ رَبِّي يَعْلَمُ الْقَوْلَ فِي السَّمَاءِ وَالْأَرْضِ ۖ وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ
নবী বললেন, ‘আমার রব আসমানসমূহ ও যমীনের প্রতিটি কথাই জানেন, এবং তিনিই হন শ্রোতা, জ্ঞাতা।

 

Tafsir		21:5
بَلْ قَالُوا أَضْغَاثُ أَحْلَامٍ بَلِ افْتَرَاهُ بَلْ هُوَ شَاعِرٌ فَلْيَأْتِنَا بِآيَةٍ كَمَا أُرْسِلَ الْأَوَّلُونَ
বরং তারা বললো, ‘(এ হচ্ছে) উদ্বেগপূর্ণ স্বপ্নসমূহ; বরং তারই মনগড়া; বরং তিনি একজন কবি। সুতরাং আমাদের নিকট কোন নিদর্শন নিয়ে আসুক যেমন পূর্ববর্তীগণ প্রেরিত হয়েছিলেন।

 

Tafsir		21:6
مَا آمَنَتْ قَبْلَهُم مِّن قَرْيَةٍ أَهْلَكْنَاهَا ۖ أَفَهُمْ يُؤْمِنُونَ
তাদের পূর্বে যে জনপদকে আমি ধ্বংস করেছি, তারা ঈমান আনে নি, তবে কি তারা ঈমান আনবে?

 

Tafsir		21:7
وَمَا أَرْسَلْنَا قَبْلَكَ إِلَّا رِجَالًا نُّوحِي إِلَيْهِمْ ۖ فَاسْأَلُوا أَهْلَ الذِّكْرِ إِن كُنتُمْ لَا تَعْلَمُونَ
এবং আমি আপনার পূর্বে কেবল পুরুষগণকে প্রেরণ করেছি, যাদেরকে আমি ওহী করতাম; সুতরাং হে লোকেরা! জ্ঞানবানদেরকে জিজ্ঞাসা করো যদি তোমাদের জ্ঞান না থাকে।

 

Tafsir		21:8
وَمَا جَعَلْنَاهُمْ جَسَدًا لَّا يَأْكُلُونَ الطَّعَامَ وَمَا كَانُوا خَالِدِينَ
এবং আমি তাদেরকে এমন নিছক দেহ তৈরী করি নি যে, খাদ্য আহার করবে না আর না তারা দুনিয়ার মধ্যে সর্বদা থাকবে।

 

Tafsir		21:9
ثُمَّ صَدَقْنَاهُمُ الْوَعْدَ فَأَنجَيْنَاهُمْ وَمَن نَّشَاءُ وَأَهْلَكْنَا الْمُسْرِفِينَ
অতঃপর আমি তাদেরকে আমার প্রতিশ্রুতি সত্য করে দেখিয়েছি, অতঃপর তাদেরকে উদ্ধার করেছি এবং যাদেরকে ইচ্ছা করেছি তাদেরকেও! আর সীমালঙ্ঘনকারীদেরকে ধ্বংস করে দিয়েছি।

 

Tafsir		21:10
لَقَدْ أَنزَلْنَا إِلَيْكُمْ كِتَابًا فِيهِ ذِكْرُكُمْ ۖ أَفَلَا تَعْقِلُونَ
নিশ্চয় আমি তোমাদের প্রতি একটা কিতাব অবতীর্ণ করেছি, যাতে তোমাদের খ্যাতির উল্লেখ রয়েছে, তবে কি তোমাদের বিবেক নেই?

 

Tafsir		21:11
وَكَمْ قَصَمْنَا مِن قَرْيَةٍ كَانَتْ ظَالِمَةً وَأَنشَأْنَا بَعْدَهَا قَوْمًا آخَرِينَ
আর কত জনপদই আমি ধ্বংস করেছি; যারা অত্যাচারী ছিলো; এবং তাদের পর ওপর সম্প্রদায় সৃষ্টি করেছি।

 

Tafsir		21:12
فَلَمَّا أَحَسُّوا بَأْسَنَا إِذَا هُم مِّنْهَا يَرْكُضُونَ
অতঃপর যখন তারা আমার শাস্তি পেলো, তখনই তারা তা থেকে পলায়ন করতে লাগলো।

 

Tafsir		21:13
لَا تَرْكُضُوا وَارْجِعُوا إِلَىٰ مَا أُتْرِفْتُمْ فِيهِ وَمَسَاكِنِكُمْ لَعَلَّكُمْ تُسْأَلُونَ
‘পলায়ন করো না এবং ফিরে যাও সেসব ভোগ বিলাসের দিকে, যা তোমাদেরকে প্রদান করা হয়েছিলো এবং তোমাদের বাসগৃহসমূহের দিকে, হয়তো তোমাদেরকে জিজ্ঞাসা করা হবে’।

 

Tafsir		21:14
قَالُوا يَا وَيْلَنَا إِنَّا كُنَّا ظَالِمِينَ
তারা বললো, ‘হায় আমাদের দুর্ভোগ! নিশ্চয় আমরা অত্যাচারী ছিলাম’।

 

Tafsir		21:15
فَمَا زَالَت تِّلْكَ دَعْوَاهُمْ حَتَّىٰ جَعَلْنَاهُمْ حَصِيدًا خَامِدِينَ
সুতরাং তারা এ আর্তনাদই করতে থাকলো, যতক্ষণ না আমি তাদেরকে করেছি কর্তিত, নির্বাপিত।

 

Tafsir		21:16
وَمَا خَلَقْنَا السَّمَاءَ وَالْأَرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَا لَاعِبِينَ
আর আমি আসমান ও যমীন এবং যা কিছু সেগুলোর মধ্যখানে রয়েছে অনর্থক সৃষ্টি করি নি।

 

Tafsir		21:17
لَوْ أَرَدْنَا أَن نَّتَّخِذَ لَهْوًا لَّاتَّخَذْنَاهُ مِن لَّدُنَّا إِن كُنَّا فَاعِلِينَ
যদি আমি কোন ক্রীড়া উপকরণ অবলম্বন করতে চাইতাম, তবে আমার নিকট থেকেই অবলম্বন করতাম; যদি আমায় করতেই হতো।

 

Tafsir		21:18
بَلْ نَقْذِفُ بِالْحَقِّ عَلَى الْبَاطِلِ فَيَدْمَغُهُ فَإِذَا هُوَ زَاهِقٌ ۚ وَلَكُمُ الْوَيْلُ مِمَّا تَصِفُونَ
বরং আমি সত্যকে মিথ্যার উপর ছুড়ে মারি; ফলে, তা সেটার মস্তিষ্ক বের করে দেয়, অতঃপর তখনি তা নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় এবং তোমাদের দুর্ভোগ ওই সব উক্তির কারণে যেগুলো তোমরা রচনা করছো।

 

Tafsir		21:19
وَلَهُ مَن فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ۚ وَمَنْ عِندَهُ لَا يَسْتَكْبِرُونَ عَنْ عِبَادَتِهِ وَلَا يَسْتَحْسِرُونَ
এবং তারই, যতো কিছু আসমানসমূহ ও যমীনে রয়েছে এবং তার নিকটবর্তীগণ তার ইবাদত থেকে অহঙ্কারবশত? না বিমুখ হয় এবং না ক্লান্ত হয়।

 

Tafsir		21:20
يُسَبِّحُونَ اللَّيْلَ وَالنَّهَارَ لَا يَفْتُرُونَ
দিনরাত তার পবিত্রতা ঘোষণা করে এবং আলস্য করে না।

 

Tafsir		21:21
أَمِ اتَّخَذُوا آلِهَةً مِّنَ الْأَرْضِ هُمْ يُنشِرُونَ
তারা কী যমীনে কিছু সংখ্যক এমন খোদা তৈরী করেছে, যেগুলো কিছু সৃষ্টিও করে?

 

Tafsir		21:22
لَوْ كَانَ فِيهِمَا آلِهَةٌ إِلَّا اللَّهُ لَفَسَدَتَا ۚ فَسُبْحَانَ اللَّهِ رَبِّ الْعَرْشِ عَمَّا يَصِفُونَ
যদি আসমান ও যমীনের মধ্যে আল্লাহ্‌ ব্যতীত আরো খোদা থাকতো, তবে অবশ্যই উভয়ই ধ্বংস হয়ে যেতো; সুতরাং পবিত্রতা আল্লাহ্‌ আরশাধিপতির ওই সব উক্তি থেকে যেগুলো এরা রচনা করছে।

 

Tafsir		21:23
لَا يُسْأَلُ عَمَّا يَفْعَلُ وَهُمْ يُسْأَلُونَ
তাকে প্রশ্ন করা যায়না ওই বিষয়ে, যা তিনি করেন এবং তাদের সবাইকে প্রশ্ন করা হবে।

 

Tafsir		21:24
أَمِ اتَّخَذُوا مِن دُونِهِ آلِهَةً ۖ قُلْ هَاتُوا بُرْهَانَكُمْ ۖ هَٰذَا ذِكْرُ مَن مَّعِيَ وَذِكْرُ مَن قَبْلِي ۗ بَلْ أَكْثَرُهُمْ لَا يَعْلَمُونَ الْحَقَّ ۖ فَهُم مُّعْرِضُونَ
তারা কি আল্লাহ্‌ ব্যতীত আরো খোদা বানিয়ে রেখেছে? আপনি বলুন, ‘নিজেদের প্রমাণ উপস্থিত করো। এ ক্বোরআন আমার সাথে যারা আছে তাদের স্মরণ এবং আমার পূর্ববর্তীদের আলোচনা; বরং তাদের মধ্যে অধিকাংশ সত্যকে জানে না, ফলে তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়।

 

Tafsir		21:25
وَمَا أَرْسَلْنَا مِن قَبْلِكَ مِن رَّسُولٍ إِلَّا نُوحِي إِلَيْهِ أَنَّهُ لَا إِلَٰهَ إِلَّا أَنَا فَاعْبُدُونِ
এবং আমি আপনার পূর্বে যে রসূলই প্রেরণ করেছি তাকে এ মর্মে ওহী প্রেরণ করি যে, ‘আমি ব্যতীত অন্য কোন উপাস্য নেই, সুতরাং তোমরা আমারই ইবাদত করো’।

 

Tafsir		21:26
وَقَالُوا اتَّخَذَ الرَّحْمَٰنُ وَلَدًا ۗ سُبْحَانَهُ ۚ بَلْ عِبَادٌ مُّكْرَمُونَ
এবং তারা বললো, ‘রাহমান পুত্রসন্তান গ্রহণ করেছেন’। তিনি পবিত্র; বরং তারা হচ্ছে সম্মানিত বান্দা।

 

Tafsir		21:27
لَا يَسْبِقُونَهُ بِالْقَوْلِ وَهُم بِأَمْرِهِ يَعْمَلُونَ
তারা আগে বেড়ে কথা বলে না এবং তারা তারই আদেশ অনুসারে কাজ করে।

 

Tafsir		21:28
يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ وَلَا يَشْفَعُونَ إِلَّا لِمَنِ ارْتَضَىٰ وَهُم مِّنْ خَشْيَتِهِ مُشْفِقُونَ
তিনি জানেন যা তাদের সম্মুখে রয়েছে এবং যা তাদের পেছনে রয়েছে, আর তারা সুপারিশ করে না কিন্তু তারই পক্ষে, যাকে তিনি পছন্দ করেন এবং তারা তার ভয়ে ভীত সন্ত্রস্ত।

 

Tafsir		21:29
وَمَن يَقُلْ مِنْهُمْ إِنِّي إِلَٰهٌ مِّن دُونِهِ فَذَٰلِكَ نَجْزِيهِ جَهَنَّمَ ۚ كَذَٰلِكَ نَجْزِي الظَّالِمِينَ
এবং তাদের মধ্যে যে কেউ বলে, ‘আমি আল্লাহ্‌ ব্যতীত উপাস্য হই,’ তবে তাকে আমি জাহান্নামের শাস্তি দেবো। আমি এভাবেই শাস্তি দিয়ে থাকি যালিমদেরকে।

 

Tafsir		21:30
أَوَلَمْ يَرَ الَّذِينَ كَفَرُوا أَنَّ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ كَانَتَا رَتْقًا فَفَتَقْنَاهُمَا ۖ وَجَعَلْنَا مِنَ الْمَاءِ كُلَّ شَيْءٍ حَيٍّ ۖ أَفَلَا يُؤْمِنُونَ
কাফিররা কি এ কথা ভাবে নি যে, আসমান ও যমীন বন্ধ ছিলো, অতঃপর আমি সেগুলোকে খুলেছি এবং আমি প্রত্যেক জীবনবিশিষ্ট বস্তুকে পানি থেকে সৃষ্টি করেছি । তবুও কি তারা ঈমান আনবে না?

 

Tafsir		21:31
وَجَعَلْنَا فِي الْأَرْضِ رَوَاسِيَ أَن تَمِيدَ بِهِمْ وَجَعَلْنَا فِيهَا فِجَاجًا سُبُلًا لَّعَلَّهُمْ يَهْتَدُونَ
এবং যমীনে আমি নোঙ্গর ফেলেছি, যাতে সেগুলো নিয়ে প্রকম্পিত না হয় আর আমি তাতে বহু প্রশস্ত পথ রেখেছি, যাতে তারা সঠিক পথ পায়।

 

Tafsir		21:32
وَجَعَلْنَا السَّمَاءَ سَقْفًا مَّحْفُوظًا ۖ وَهُمْ عَنْ آيَاتِهَا مُعْرِضُونَ
এবং আমি আসমানকে সুরক্ষিত ছাদ করেছি, আরা তারা তার নিদর্শনসমূহ থেকে মুখ ফিরিয়ে আছে।

 

Tafsir		21:33
وَهُوَ الَّذِي خَلَقَ اللَّيْلَ وَالنَّهَارَ وَالشَّمْسَ وَالْقَمَرَ ۖ كُلٌّ فِي فَلَكٍ يَسْبَحُونَ
আর তিনিই হন, যিনি সৃষ্টি করেছেন রাত ও দিন এবং সূর্য ও চন্দ্র; প্রত্যেকটি একেকটি কক্ষপথে বিচরণ করছে।

 

Tafsir		21:34
وَمَا جَعَلْنَا لِبَشَرٍ مِّن قَبْلِكَ الْخُلْدَ ۖ أَفَإِن مِّتَّ فَهُمُ الْخَالِدُونَ
এবং আমি তোমাদের পূর্বে কোন মানুষের জন্য পৃথিবীতে অনন্ত জীবন সৃষ্টি করি নি । সুতরাং যদি আপনি ইনতিকাল করেন তবে এরা কি চিরজীবী হয়ে থাকবে?

 

Tafsir		21:35
كُلُّ نَفْسٍ ذَائِقَةُ الْمَوْتِ ۗ وَنَبْلُوكُم بِالشَّرِّ وَالْخَيْرِ فِتْنَةً ۖ وَإِلَيْنَا تُرْجَعُونَ
প্রত্যেক প্রাণকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে এবং আমি তোমাদেরকে পরীক্ষা করি মন্দ ও ভাল দ্বারা পরখ করার জন্য এবং আমার প্রতি তোমাদেরকে ফিরে আসতে হবে।

 

Tafsir		21:36
وَإِذَا رَآكَ الَّذِينَ كَفَرُوا إِن يَتَّخِذُونَكَ إِلَّا هُزُوًا أَهَٰذَا الَّذِي يَذْكُرُ آلِهَتَكُمْ وَهُم بِذِكْرِ الرَّحْمَٰنِ هُمْ كَافِرُونَ
এবং কাফিরগণ যখন আপনাকে দেখে তখন আপনাকে সাব্যস্ত করে না, কিন্তু ঠাট্টা-বিদ্রূপের পাত্ররূপে। ‘ইনিই কি ওই ব্যক্তি, যিনি তোমাদের উপাস্যগুলোকে মন্দ বলে?’ এবং তারা পরম করুণাময়েরই স্মরণকে অস্বীকার করে।

 

Tafsir		21:37
خُلِقَ الْإِنسَانُ مِنْ عَجَلٍ ۚ سَأُرِيكُمْ آيَاتِي فَلَا تَسْتَعْجِلُونِ
মানুষকে ত্বরাপ্রবণ করে সৃষ্টি করা হয়েছে। এখন আমি তোমাদেরকে আপন নিদর্শনসমূহ দেখাব; সুতরাং ত্বরা করো না।

 

Tafsir		21:38
وَيَقُولُونَ مَتَىٰ هَٰذَا الْوَعْدُ إِن كُنتُمْ صَادِقِينَ
এবং বলে, ‘কখন পূর্ণ হবে এ প্রতিশ্রুতি যদি তোমরা সত্যবাদী হও?’

 

Tafsir		21:39
لَوْ يَعْلَمُ الَّذِينَ كَفَرُوا حِينَ لَا يَكُفُّونَ عَن وُجُوهِهِمُ النَّارَ وَلَا عَن ظُهُورِهِمْ وَلَا هُمْ يُنصَرُونَ
যদি কাফিরগণ কোনমতে জানতো ওই সময়ের কথা, যখন তারা না তাদের মুখমণ্ডল থেকে আগুনকে প্রতিহত করতে পারবে এবং না নিজেদের পৃষ্ঠগুলো থেকে আর না তাদেরকে সাহায্য করা হবে!

 

Tafsir		21:40
بَلْ تَأْتِيهِم بَغْتَةً فَتَبْهَتُهُمْ فَلَا يَسْتَطِيعُونَ رَدَّهَا وَلَا هُمْ يُنظَرُونَ
বরং তা তাদের উপর হঠাৎ করে এসে পড়বে, তখন তা তাদেরকে হতভম্ভ কর দেবে; অতঃপর না তারা সেটা রোধ করতে পারবে এবং না তাদেরকে অবকাশ দেওয়া হবে।

 

Tafsir		21:41
وَلَقَدِ اسْتُهْزِئَ بِرُسُلٍ مِّن قَبْلِكَ فَحَاقَ بِالَّذِينَ سَخِرُوا مِنْهُم مَّا كَانُوا بِهِ يَسْتَهْزِئُونَ
এবং নিশ্চয় আপনার পূর্ববর্তী রসূলগণের প্রতি বিদ্রূপ করা হয়েছে, তখন ঠাট্টা-বিদ্রূপকারীদেরকেই পেয়ে বসেছে।

 

Tafsir		21:42
قُلْ مَن يَكْلَؤُكُم بِاللَّيْلِ وَالنَّهَارِ مِنَ الرَّحْمَٰنِ ۗ بَلْ هُمْ عَن ذِكْرِ رَبِّهِم مُّعْرِضُونَ
আপনি বলুন, ‘রাত ও দিনে পরম করুণাময় থেকে তোমাদেরকে কে রক্ষা করছে? বরং তারা আপন রবের স্মরণ থেকে মুখ ফিরিয়ে আছে।

 

Tafsir		21:43
أَمْ لَهُمْ آلِهَةٌ تَمْنَعُهُم مِّن دُونِنَا ۚ لَا يَسْتَطِيعُونَ نَصْرَ أَنفُسِهِمْ وَلَا هُم مِّنَّا يُصْحَبُونَ
তাদের কি এমন কিছু খোদা রয়েছে, যারা তাদেরকে আমার (পাকড়াও) থেকে রক্ষা করে? সেগুলো নিজেরা নিজেদেরকেও রক্ষা করতে পারে না এবং না আমার নিকট থেকে তাদেরকে কোন সাহায্য করা হবে।

 

Tafsir		21:44
بَلْ مَتَّعْنَا هَٰؤُلَاءِ وَآبَاءَهُمْ حَتَّىٰ طَالَ عَلَيْهِمُ الْعُمُرُ ۗ أَفَلَا يَرَوْنَ أَنَّا نَأْتِي الْأَرْضَ نَنقُصُهَا مِنْ أَطْرَافِهَا ۚ أَفَهُمُ الْغَالِبُونَ
বরং আমি তাদেরকে এবং তাদের পিতৃপুরুষকে ভোগ-সম্ভার প্রদান করেছি, এমন কি তাদের আয়ুষ্কালও দীর্ঘ হয়েছে, তবে কি তারা দেখতে পাচ্ছে না যে, আমি যমীনকে সেটার প্রান্তগুলো থেকে সঙ্কুচিত করে আনছি? তবুও কি এরা বিজয়ী হবে?’

 

Tafsir		21:45
قُلْ إِنَّمَا أُنذِرُكُم بِالْوَحْيِ ۚ وَلَا يَسْمَعُ الصُّمُّ الدُّعَاءَ إِذَا مَا يُنذَرُونَ
আপনি বলুন, ‘আমি তোমাদেরকে শুধু ওহী দ্বারা সতর্ক করি; এবং বধিরগণ আহ্বান শুনে না যখন সতর্ক করা হয়’।

 

Tafsir		21:46
وَلَئِن مَّسَّتْهُمْ نَفْحَةٌ مِّنْ عَذَابِ رَبِّكَ لَيَقُولُنَّ يَا وَيْلَنَا إِنَّا كُنَّا ظَالِمِينَ
এবং যদি তাদেরকে আপনার রবের শাস্তির বাতাস স্পর্শ করে যায়, তবে অবশ্যই বলবে, ‘হায় দুর্ভোগ আমাদের! নিশ্চয় আমরা যালিম ছিলাম’।

 

Tafsir		21:47
وَنَضَعُ الْمَوَازِينَ الْقِسْطَ لِيَوْمِ الْقِيَامَةِ فَلَا تُظْلَمُ نَفْسٌ شَيْئًا ۖ وَإِن كَانَ مِثْقَالَ حَبَّةٍ مِّنْ خَرْدَلٍ أَتَيْنَا بِهَا ۗ وَكَفَىٰ بِنَا حَاسِبِينَ
এবং আমি ক্বিয়ামতের দিন ন্যায় বিচারের মানদণ্ডসমূহ স্থাপন করবো। সুতরাং কারো আত্নার প্রতি কোন অবিচল করা হবে না। এবং যদি কোন বস্তু তিন বাজের পরিমাণও হয়, তবে আমি তাও নিয়ে আসবো; আর আমি যথেষ্ট হিসাব গ্রহণে।

 

Tafsir		21:48
وَلَقَدْ آتَيْنَا مُوسَىٰ وَهَارُونَ الْفُرْقَانَ وَضِيَاءً وَذِكْرًا لِّلْمُتَّقِينَ
এবং নিশ্চয় আমি মূসা ও হারূনকে ‘মীমাংসার মাপকাঠি’ প্রদান করেছি ও উজ্জ্বল আলো আর খোদাভীরুদের জন্য উপদেশ।

 

Tafsir		21:49
الَّذِينَ يَخْشَوْنَ رَبَّهُم بِالْغَيْبِ وَهُم مِّنَ السَّاعَةِ مُشْفِقُونَ
ওই সব লোক, যারা না দেখেও আপন রবকে ভয় করে এবং ক্বিয়ামতের ভয় তাদের মধ্যে লেগেই রয়েছে।

 

Tafsir		21:50
وَهَٰذَا ذِكْرٌ مُّبَارَكٌ أَنزَلْنَاهُ ۚ أَفَأَنتُمْ لَهُ مُنكِرُونَ
এবং এটা হচ্ছে কল্যাণময় উপদেশ, যা আমি অবতীর্ণ করেছি। তবুও কি তোমরা সেটার অস্বীকারকারী হও?

 

Tafsir		21:51
وَلَقَدْ آتَيْنَا إِبْرَاهِيمَ رُشْدَهُ مِن قَبْلُ وَكُنَّا بِهِ عَالِمِينَ
আর নিশ্চয় আমি ইব্রাহীমকে পূর্ব থেকেই তার সৎপথ দান করেছি এবং আমি তার সম্বন্ধে পরিজ্ঞাত ছিলাম।

 

Tafsir		21:52
إِذْ قَالَ لِأَبِيهِ وَقَوْمِهِ مَا هَٰذِهِ التَّمَاثِيلُ الَّتِي أَنتُمْ لَهَا عَاكِفُونَ
যখন সে তার পিতা ও সম্প্রদায়কে বললো, ‘এ মূর্তিগুলো কী, যেগুলোর সম্মুখে তোমরা আসন পেতে বসে আছো?’

 

Tafsir		21:53
قَالُوا وَجَدْنَا آبَاءَنَا لَهَا عَابِدِينَ
তারা বললো, ‘আমরা আপন পিতৃপুরুষকে সেগুলোর পূজা করতে (দেখতে) পেয়েছি’।

 

Tafsir		21:54
قَالَ لَقَدْ كُنتُمْ أَنتُمْ وَآبَاؤُكُمْ فِي ضَلَالٍ مُّبِينٍ
বললো, ‘নিশ্চয় তোমরা ও তোমাদের পিতৃপুরুষ সবাই স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে রয়েছো’।

 

Tafsir		21:55
قَالُوا أَجِئْتَنَا بِالْحَقِّ أَمْ أَنتَ مِنَ اللَّاعِبِينَ
তারা বললো, ‘তুমি কি আমাদের নিকট সত্য নিয়ে এসেছো, না এভাবেই খেলা করছো’?

 

Tafsir		21:56
قَالَ بَل رَّبُّكُمْ رَبُّ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ الَّذِي فَطَرَهُنَّ وَأَنَا عَلَىٰ ذَٰلِكُم مِّنَ الشَّاهِدِينَ
বললো, ‘বরং তোমাদের রব তিনিই, যিনি রব হন আসমানসমূহ ও যমীনের, যিনি সেগুলোকে সৃষ্টি করেছেন, এবং এ বিষয়ে আমি অন্যতম সাক্ষী হই।

 

Tafsir		21:57
وَتَاللَّهِ لَأَكِيدَنَّ أَصْنَامَكُم بَعْدَ أَن تُوَلُّوا مُدْبِرِينَ
এবং আমার আল্লাহ্‌র শপথ! আমি তোমাদের মূর্তিগুলোর ধ্বংস কামনা করবো এরপর যে, তোমরা পৃষ্ঠপ্রদর্শন করে ফিরে যাবে’।

 

Tafsir		21:58
فَجَعَلَهُمْ جُذَاذًا إِلَّا كَبِيرًا لَّهُمْ لَعَلَّهُمْ إِلَيْهِ يَرْجِعُونَ
অতঃপর সে সবকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দিলো, কিন্তু একটাকে, যেটা ওই সবের মধ্যে বড় ছিলো এ জন্য যে, সম্ভবতঃ তারা তাকে কিছু জিজ্ঞাসা করবে।

 

Tafsir		21:59
قَالُوا مَن فَعَلَ هَٰذَا بِآلِهَتِنَا إِنَّهُ لَمِنَ الظَّالِمِينَ
তারা বললো, ‘আমাদের খোদাগুলোর সাথে কে এমন আচরণ করলো? নিশ্চয় সে যালিম’।

 

Tafsir		21:60
قَالُوا سَمِعْنَا فَتًى يَذْكُرُهُمْ يُقَالُ لَهُ إِبْرَاهِيمُ
তাদের মধ্য থেকে কিছু সংখ্যক লোক বললো, ‘আমরা এক যুবককে সেগুলকে মন্দ বলতে শুনেছি, যাকে ইব্রাহীম বলা হয়’।

 

Tafsir		21:61
قَالُوا فَأْتُوا بِهِ عَلَىٰ أَعْيُنِ النَّاسِ لَعَلَّهُمْ يَشْهَدُونَ
তারা বললো, ‘সুতরাং লোকসম্মুখে তাকে উপস্থিত করো, হয়তো তারা সাক্ষ্য দেবে’।

 

Tafsir		21:62
قَالُوا أَأَنتَ فَعَلْتَ هَٰذَا بِآلِهَتِنَا يَا إِبْرَاهِيمُ
তারা বললো, ‘তুমি কি আমাদের খোদাগুলোর সাথে এ আচরণ করেছো, হে ইব্রাহীম’।

 

Tafsir		21:63
قَالَ بَلْ فَعَلَهُ كَبِيرُهُمْ هَٰذَا فَاسْأَلُوهُمْ إِن كَانُوا يَنطِقُونَ
তিনি বললেন, ‘বরং সেগুলোর মধ্যে সম্ভবতঃ ওই বড়টাই করেছে। সুতরাং সেগুলোকে জিজ্ঞাসা করো যদি সেগুলো কথা বলে’।

 

Tafsir		21:64
فَرَجَعُوا إِلَىٰ أَنفُسِهِمْ فَقَالُوا إِنَّكُمْ أَنتُمُ الظَّالِمُونَ
সুতরাং তারা নিজেদের মনের প্রতি প্রত্যাবর্তন করলো, (মনে মনে ভাবতে লাগলো) এবং বললো, ‘নিশ্চয়, তোমরাই যালিম’।

 

Tafsir		21:65
ثُمَّ نُكِسُوا عَلَىٰ رُءُوسِهِمْ لَقَدْ عَلِمْتَ مَا هَٰؤُلَاءِ يَنطِقُونَ
অতঃপর তাদেরকে তাদের মস্তকের উপর ভয় করে অবনত করানো হলো (আর বলতে লাগলো) যে, ‘আপনি ভালভাবে জানেন এরা কথা বলে না’।

 

Tafsir		21:66
قَالَ أَفَتَعْبُدُونَ مِن دُونِ اللَّهِ مَا لَا يَنفَعُكُمْ شَيْئًا وَلَا يَضُرُّكُمْ
বললো, ‘তবে কি তোমরা আল্লাহ্‌ ব্যতীত এমন সবের পূজা করছো, যেগুলো না তোমাদের উপকার করতে পারে এবং না ক্ষতি করতে পারে?

 

Tafsir		21:67
أُفٍّ لَّكُمْ وَلِمَا تَعْبُدُونَ مِن دُونِ اللَّهِ ۖ أَفَلَا تَعْقِلُونَ
ধিক্কার তোমাদের প্রতি এবং ওই মূর্তিগুলোর প্রতি, যেগুলোকে তোমরা আল্লাহ্‌ ব্যতীত পূজা করছো! তবে কি তোমাদের বিবেক নেই’?

 

Tafsir		21:68
قَالُوا حَرِّقُوهُ وَانصُرُوا آلِهَتَكُمْ إِن كُنتُمْ فَاعِلِينَ
তারা বললো, ‘তাকে জ্বালিয়ে দাও এবং নিজেদের খোদাগুলোকে সাহায্য করো । যদি তোমাদের কিছু করার থাকো!’

 

Tafsir		21:69
قُلْنَا يَا نَارُ كُونِي بَرْدًا وَسَلَامًا عَلَىٰ إِبْرَاهِيمَ
আমি বললাম, ‘হে আগুন! ইব্রাহীমের উপর হয়ে যাও শীতল ও নিরাপদ!’

 

Tafsir		21:70
وَأَرَادُوا بِهِ كَيْدًا فَجَعَلْنَاهُمُ الْأَخْسَرِينَ
এবং তারা তার ক্ষতি সাধনের ইচ্ছা করলো। তখন আমি তাদেরকে সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত করে দিলাম।

 

Tafsir		21:71
وَنَجَّيْنَاهُ وَلُوطًا إِلَى الْأَرْضِ الَّتِي بَارَكْنَا فِيهَا لِلْعَالَمِينَ
এবং আমি তাকে ও লূতকে নাজাত দান করে নিয়ে গেলাম ওই ভূমির দিকে যাতে আমি বিশ্ববাসীদের জন্য কল্যাণ রেখেছি।

 

Tafsir		21:72
وَوَهَبْنَا لَهُ إِسْحَاقَ وَيَعْقُوبَ نَافِلَةً ۖ وَكُلًّا جَعَلْنَا صَالِحِينَ
এবং আমি তাকে দান করেছি ইসহাক্বকে আর ইয়া’ক্বুবকে পৌত্ররূপে এবং আমি তাদের সবাইকে আমার বিশেষ নৈকট্যের উপযোগী করেছি।

 

Tafsir		21:73
وَجَعَلْنَاهُمْ أَئِمَّةً يَهْدُونَ بِأَمْرِنَا وَأَوْحَيْنَا إِلَيْهِمْ فِعْلَ الْخَيْرَاتِ وَإِقَامَ الصَّلَاةِ وَإِيتَاءَ الزَّكَاةِ ۖ وَكَانُوا لَنَا عَابِدِينَ
এবং আমি তাদেরকে ‘ইমাম’ করেছি, যারা আমার নির্দেশে আহ্বান করে আর আমি তাদের প্রতি ওহী প্রেরণ করেছি- সৎকর্ম করতে, নামায প্রতিষ্ঠিত রাখতে এবং যাকাত প্রদান করতে; আর তারা আমার ইবাদত করতো।

 

Tafsir		21:74
وَلُوطًا آتَيْنَاهُ حُكْمًا وَعِلْمًا وَنَجَّيْنَاهُ مِنَ الْقَرْيَةِ الَّتِي كَانَت تَّعْمَلُ الْخَبَائِثَ ۗ إِنَّهُمْ كَانُوا قَوْمَ سَوْءٍ فَاسِقِينَ
আর লূতকে আমি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ও জ্ঞান প্রদান করেছি এবং তাকে এমন এক জনপদ থেকে উদ্ধার করেছি, যারা অশ্লীল কাজ করতো; যারা নিশ্চয় তারা মন্দলোক, নির্দেশ অমান্যকারী ছিলো।

 

Tafsir		21:75
وَأَدْخَلْنَاهُ فِي رَحْمَتِنَا ۖ إِنَّهُ مِنَ الصَّالِحِينَ
এবং আমি তাকে আপনার করুণার মধ্যে প্রবেশ করিয়েছি। নিঃসন্দেহে, সে আমা একান্ত নৈকট্যের উপযোগীদের অন্তর্ভুক্ত।

 

Tafsir		21:76
وَنُوحًا إِذْ نَادَىٰ مِن قَبْلُ فَاسْتَجَبْنَا لَهُ فَنَجَّيْنَاهُ وَأَهْلَهُ مِنَ الْكَرْبِ الْعَظِيمِ
এবং নূহকে; যখন সে ইতোপূর্বে আমাকে আহ্বান করেছে, তখন আমি তার প্রার্থনা মঞ্জুর করেছি এবং তাকে ও তার পরিজনবর্গকে মহা সংকট থেকে উদ্ধার করেছি।

 

Tafsir		21:77
وَنَصَرْنَاهُ مِنَ الْقَوْمِ الَّذِينَ كَذَّبُوا بِآيَاتِنَا ۚ إِنَّهُمْ كَانُوا قَوْمَ سَوْءٍ فَأَغْرَقْنَاهُمْ أَجْمَعِينَ
এবং আমি ওই সব লোকের বিরুদ্ধে তাকে সাহায্য করেছি যারা আমার নিদর্শনাবলী অস্বীকার করেছে; নিশ্চয় তারা মন্দলোক ছিলো; অতঃপর আমি তাদের সবাইকে নিমজ্জিত করেছি।

 

Tafsir		21:78
وَدَاوُودَ وَسُلَيْمَانَ إِذْ يَحْكُمَانِ فِي الْحَرْثِ إِذْ نَفَشَتْ فِيهِ غَنَمُ الْقَوْمِ وَكُنَّا لِحُكْمِهِمْ شَاهِدِينَ
এবং দাঊদ ও সুলায়মানকে স্মরণ করুন! যখন শস্যক্ষেত্রের এক বিবাদ মীমাংসা করছিলো, যখন রাতের বেলায় তাতে কিছুলোকের মেষসমূহ প্রবেশ করেছিলো এবং আমি তাদের বিচারের সময় উপস্থিত ছিলাম

 

Tafsir		21:79
فَفَهَّمْنَاهَا سُلَيْمَانَ ۚ وَكُلًّا آتَيْنَا حُكْمًا وَعِلْمًا ۚ وَسَخَّرْنَا مَعَ دَاوُودَ الْجِبَالَ يُسَبِّحْنَ وَالطَّيْرَ ۚ وَكُنَّا فَاعِلِينَ
আমি ওই বিষয় সুলায়মানকে বুঝিয়ে দিয়েছি এবং উভয়কে রাষ্ট্রীয় শাসন ক্ষমতা ও জ্ঞান দান করেছি; আর দাঊদের সাথে পর্বতকে অনুগত ঘোষণা করতো; এবং পক্ষীকুলকেও। আর এসব আমার কাজ ছিলো।

 

Tafsir		21:80
وَعَلَّمْنَاهُ صَنْعَةَ لَبُوسٍ لَّكُمْ لِتُحْصِنَكُم مِّن بَأْسِكُمْ ۖ فَهَلْ أَنتُمْ شَاكِرُونَ
এবং আমি তাকে তোমাদের এক পরিধেয় (বর্ম) তৈরী করা শিক্ষা দিয়েছি, যাতে তোমাদেরকে তোমাদের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে, অতুপর তোমরা কি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে?

 

Tafsir		21:81
وَلِسُلَيْمَانَ الرِّيحَ عَاصِفَةً تَجْرِي بِأَمْرِهِ إِلَى الْأَرْضِ الَّتِي بَارَكْنَا فِيهَا ۚ وَكُنَّا بِكُلِّ شَيْءٍ عَالِمِينَ
এবং সুলায়মানের জন্য তীব্র বায়ুকে বশীভূত করে দিয়েছি; তা তার নির্দেশে প্রবাহিত হতো ওই ভূমির প্রতি, যেখানে আমি কল্যাণ রেখেছি এবং প্রত্যেকটা বিষয় আমার জানা আছে।

 

Tafsir		21:82
وَمِنَ الشَّيَاطِينِ مَن يَغُوصُونَ لَهُ وَيَعْمَلُونَ عَمَلًا دُونَ ذَٰلِكَ ۖ وَكُنَّا لَهُمْ حَافِظِينَ
আর শয়তানের মধ্যে যেগুলো তার জন্য ডুব দিতো এবং তা ব্যতীত অন্য কাজও করতো আর আমি তাদেরকে রুখে দিয়েছিলাম।

 

Tafsir		21:83
وَأَيُّوبَ إِذْ نَادَىٰ رَبَّهُ أَنِّي مَسَّنِيَ الضُّرُّ وَأَنتَ أَرْحَمُ الرَّاحِمِينَ
এবং আইয়ূবকে (স্মরণ করুন) যখন সে আপন রবকে ডাকলো, ‘আমাকে দুঃখ কষ্ট স্পর্শ করেছে এবং তুমি সমস্ত দয়ালুর মধ্যে সর্বাধিক দয়ালু’।

 

Tafsir		21:84
فَاسْتَجَبْنَا لَهُ فَكَشَفْنَا مَا بِهِ مِن ضُرٍّ ۖ وَآتَيْنَاهُ أَهْلَهُ وَمِثْلَهُم مَّعَهُمْ رَحْمَةً مِّنْ عِندِنَا وَذِكْرَىٰ لِلْعَابِدِينَ
অতঃপর আমি তার প্রার্থনা শুনেছি। তখন আমি দূরীভূত করেছি যে দুঃখ-কষ্ট তার ছিলো, এবং আমি তাকে তার পরিজনবর্গ ও তাদের সাথে তদসংখ্যক আরো দান করলাম আমার নিকট থেকে দয়া করে এবং ইবাদতকারীদের জন্য উপদেশ স্বরূপ।

 

Tafsir		21:85
وَإِسْمَاعِيلَ وَإِدْرِيسَ وَذَا الْكِفْلِ ۖ كُلٌّ مِّنَ الصَّابِرِينَ
এবং ইসমাঈল, ইদ্‌রীস ও যুল্‌-কিফ্‌লকে (স্মরণ করুন)। তারা সবাই ধৈর্যশীল ছিলো।

 

Tafsir		21:86
وَأَدْخَلْنَاهُمْ فِي رَحْمَتِنَا ۖ إِنَّهُم مِّنَ الصَّالِحِينَ
এবং তাদেরকে আমি আপন অনুগ্রহের অন্তর্ভুক্ত করেছি। নিশ্চয় তারা আমার বিশেষ নৈকট্যের উপযোগীদের অন্তর্ভুক্ত ।

 

Tafsir		12:87
وَذَا النُّونِ إِذ ذَّهَبَ مُغَاضِبًا فَظَنَّ أَن لَّن نَّقْدِرَ عَلَيْهِ فَنَادَىٰ فِي الظُّلُمَاتِ أَن لَّا إِلَٰهَ إِلَّا أَنتَ سُبْحَانَكَ إِنِّي كُنتُ مِنَ الظَّالِمِينَ
এবং যুন্‌নূনকে (স্মরণ করুন); যখন ক্রোধভরে চললো, তখন মনে করলো যে, আমি তার উপর প্রতিবন্ধকতা (বিপদ) সৃষ্টি করবো না । অতঃপর অন্ধকাররশির মধ্যে ডাকলো, ‘কোন উপাস্য নেই তুমি ব্যতীত; পবিত্রতয়া তোমারই, নিশ্চয় আমার দ্বারা অশোভন কাজ সম্পাদিত হয়েছে।

 

Tafsir		12:88
فَاسْتَجَبْنَا لَهُ وَنَجَّيْنَاهُ مِنَ الْغَمِّ ۚ وَكَذَٰلِكَ نُنجِي الْمُؤْمِنِينَ
তখন আমি তার প্রার্থনা শুনেছি এবং তাকে দুশ্চিন্তা থেকে উদ্ধার করেছি আর এভাবেই উদ্ধার করবো মুসলমানদেরকে।

 

Tafsir		21:89
وَزَكَرِيَّا إِذْ نَادَىٰ رَبَّهُ رَبِّ لَا تَذَرْنِي فَرْدًا وَأَنتَ خَيْرُ الْوَارِثِينَ
এবং যাকারীয়াকে, যখন সে আপন রবকে আহ্বান করেছে, ‘হে আমার রব! আমাকে একা রেখো না এবং তুমি সর্বাধিক উত্তম ওয়ারিস (মালিক)।

 

Tafsir		21:90
فَاسْتَجَبْنَا لَهُ وَوَهَبْنَا لَهُ يَحْيَىٰ وَأَصْلَحْنَا لَهُ زَوْجَهُ ۚ إِنَّهُمْ كَانُوا يُسَارِعُونَ فِي الْخَيْرَاتِ وَيَدْعُونَنَا رَغَبًا وَرَهَبًا ۖ وَكَانُوا لَنَا خَاشِعِينَ
তখন আমি তার প্রার্থনা ক্ববূল করেছি এবং তাকে দান করেছি ইয়াহ্‌য়াকে এবং তার জন্য তার স্ত্রীকে যোগ্যতাসম্পন্ন করেছি। নিশ্চয় তারা সৎকর্মসমূহে ত্বরা করতো এবং আমাকে ডাকতো আশা ও ভীতির সাথে আর আমার দরবারে বিনীতভাবে প্রার্থনা করতো।

 

Tafsir		21:91
وَالَّتِي أَحْصَنَتْ فَرْجَهَا فَنَفَخْنَا فِيهَا مِن رُّوحِنَا وَجَعَلْنَاهَا وَابْنَهَا آيَةً لِّلْعَالَمِينَ
এবং ওই নারীকে, যে নিজ সতীত্বকে রক্ষা করেছ, অতঃপর তার মধ্যে আমার ‘রূহ’ ফুঁকে দিয়েছি এবং তাকে ও তার পুত্রকে সমগ্র বিশ্বের জন্য নিদর্শন করেছি।

 

Tafsir		21:92
إِنَّ هَٰذِهِ أُمَّتُكُمْ أُمَّةً وَاحِدَةً وَأَنَا رَبُّكُمْ فَاعْبُدُونِ
নিশ্চয় তোমাদের এ দ্বীন হচ্ছে একই দ্বীন; এবং আমি তোমাদের রব। অতএব, তোমরা আমার ইবাদত করো।

 

Tafsir		21:93
وَتَقَطَّعُوا أَمْرَهُم بَيْنَهُمْ ۖ كُلٌّ إِلَيْنَا رَاجِعُونَ
এবং অন্যান্য লোকেরা তাদের কার্যকলাপকে পরস্পরের মধ্যে টুকরো টুকরো করে ফেলেছে; সবাইকে আমারই দিকে প্রত্যাবর্তন করতে হবে।

 

Tafsir		21:94
فَمَن يَعْمَلْ مِنَ الصَّالِحَاتِ وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَلَا كُفْرَانَ لِسَعْيِهِ وَإِنَّا لَهُ كَاتِبُونَ
সুতরাং যে কেউ কোন ভাল কাজ করে এবং হয় ঈমানদার, তবে তার প্রচেষ্টার অবমূল্যায়ন করা হবে না আর আমি তা লিপিবদ্ধ করছি।

 

Tafsir		21:95
وَحَرَامٌ عَلَىٰ قَرْيَةٍ أَهْلَكْنَاهَا أَنَّهُمْ لَا يَرْجِعُونَ
এবং হারাম ওই জনপদের উপর, যাকে আমি ধ্বংস করেছি যে, তারা ফিরে আসবে,

 

Tafsir		21:96
حَتَّىٰ إِذَا فُتِحَتْ يَأْجُوجُ وَمَأْجُوجُ وَهُم مِّن كُلِّ حَدَبٍ يَنسِلُونَ
এ পর্যন্ত যে, যখন উন্মুক্ত করা হবে ইয়া’জূজ ও মা’জূজকে এবং তার প্রত্যেক উচ্চভূমি থেকে ছুটে আসবে।

 

Tafsir		21:97
وَاقْتَرَبَ الْوَعْدُ الْحَقُّ فَإِذَا هِيَ شَاخِصَةٌ أَبْصَارُ الَّذِينَ كَفَرُوا يَا وَيْلَنَا قَدْ كُنَّا فِي غَفْلَةٍ مِّنْ هَٰذَا بَلْ كُنَّا ظَالِمِينَ
এবং সন্নিকটে এসেছে সত্য প্রতিশ্রুতি; সুতরাং তখনই কাফিরদের চক্ষুগুলো বিস্ফারিত হয়ে থেকে যাবে (আর বলবে,) ‘হায় আমাদের দুর্ভোগ! নিশ্চয় আমরা সে বিষয়ে উদাসীনতার মধ্যে ছিলাম; বরং আমরা যালিম ছিলাম’।

 

Tafsir		21:98
إِنَّكُمْ وَمَا تَعْبُدُونَ مِن دُونِ اللَّهِ حَصَبُ جَهَنَّمَ أَنتُمْ لَهَا وَارِدُونَ
নিশ্চয় তোমরা এবং যা কিছুর আল্লাহ্‌ ব্যতীত তোমরা পূজা করছো সবই জাহান্নামের ইন্ধন। তোমাদেরকে সেটার মধ্যে যেতে হবে।

 

Tafsir		21:99
لَوْ كَانَ هَٰؤُلَاءِ آلِهَةً مَّا وَرَدُوهَا ۖ وَكُلٌّ فِيهَا خَالِدُونَ
যদি এ মূর্তিগুলো খোদা হতো, তবে জাহান্নামে যেতো না এবং তাদের সবাইকে সেটার মধ্যে স্থায়ীভাবে থাকতে হবে।

 

Tafsir		21:100
لَهُمْ فِيهَا زَفِيرٌ وَهُمْ فِيهَا لَا يَسْمَعُونَ
তারা সেটার মধ্যে আর্তনাদ করবে এবং তারা সেটার মধ্যে কিছুই শুনবে না

 

Tafsir		21:101
إِنَّ الَّذِينَ سَبَقَتْ لَهُم مِّنَّا الْحُسْنَىٰ أُولَٰئِكَ عَنْهَا مُبْعَدُونَ
নিশ্চয় ওই সব লোক, যাদের জন্য আমার প্রতিশ্রুতি কল্যাণের হয়েছে, তাদেরকে জাহান্নাম থেকে দূরে রাখা হয়েছে।

 

Tafsir		21:102
لَا يَسْمَعُونَ حَسِيسَهَا ۖ وَهُمْ فِي مَا اشْتَهَتْ أَنفُسُهُمْ خَالِدُونَ
তারা সেটার ক্ষীন ধ্বনিও শুনবে না এবং তারা তাদের মন যেমন চায় তেমন ভোগ বিলাসের মধ্যে সর্বদা থাকবে।

 

Tafsir		21:103
لَا يَحْزُنُهُمُ الْفَزَعُ الْأَكْبَرُ وَتَتَلَقَّاهُمُ الْمَلَائِكَةُ هَٰذَا يَوْمُكُمُ الَّذِي كُنتُمْ تُوعَدُونَ
তাদেরকে বিষাদে ফেলবে না ওই সর্বাধিক মহাভীতি এবং ফিরিশতাগণ তাদের অভ্যর্থনা করার জন্য আসবে, ‘এটাই হচ্ছে তোমাদের ওই দিন, যার সম্পর্কে তোমাদের সাথে ওয়াদা ছিলো’।

 

Tafsir		21:104
يَوْمَ نَطْوِي السَّمَاءَ كَطَيِّ السِّجِلِّ لِلْكُتُبِ ۚ كَمَا بَدَأْنَا أَوَّلَ خَلْقٍ نُّعِيدُهُ ۚ وَعْدًا عَلَيْنَا ۚ إِنَّا كُنَّا فَاعِلِينَ
যেদিন আমি আসমাঙ্কে গুটিয়ে ফেলবো যেভাবে লেখক ফিরিশতাগণ আমলনামাসমূহ গুটায়; যেভাবে আমি সর্বপ্রথম সেটা সৃষ্টি করেছিলাম পুনরায় সেভাবেই করে দেবো। এটাহচ্ছে প্রতিশ্রুতি আমার দায়িত্বে; সেটা আমি অবশ্যই করবো।

 

Tafsir		21:105
وَلَقَدْ كَتَبْنَا فِي الزَّبُورِ مِن بَعْدِ الذِّكْرِ أَنَّ الْأَرْضَ يَرِثُهَا عِبَادِيَ الصَّالِحُونَ
এবং নিশ্চয় আমি ‘যাবূর’ এর মধ্যে উপদেশের পর লিখে দিয়েছি যে, এ ভূমির অধিকারী আমার সৎকর্মপরায়ণ বান্দাগণ হবে।

 

Tafsir		21:106
إِنَّ فِي هَٰذَا لَبَلَاغًا لِّقَوْمٍ عَابِدِينَ
নিশ্চয় এ ক্বোরআন যথেষ্ট ইবাদতকারীদের জন্য।

 

Tafsir		21:107
وَمَا أَرْسَلْنَاكَ إِلَّا رَحْمَةً لِّلْعَالَمِينَ
এবং আমি আপনাকে সমগ্র জগতের রহমতরূপেই প্রেরণ করেছি।

 

Tafsir		21:108
قُلْ إِنَّمَا يُوحَىٰ إِلَيَّ أَنَّمَا إِلَٰهُكُمْ إِلَٰهٌ وَاحِدٌ ۖ فَهَلْ أَنتُم مُّسْلِمُونَ
আপনি বলুন, ‘আমার প্রতি তো এ ওহী হয় যে, ‘তোমাদের উপাস্য নেই কিন্তু এক আল্লাহ্‌। তবে কি তোমরা মুসলমান হচ্ছো?’

 

Tafsir		21:109
فَإِن تَوَلَّوْا فَقُلْ آذَنتُكُمْ عَلَىٰ سَوَاءٍ ۖ وَإِنْ أَدْرِي أَقَرِيبٌ أَم بَعِيدٌ مَّا تُوعَدُونَ
অতঃপর যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে বলে দিন, ‘আমি তোমাদেরকে যুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছি সমানভাবে; এবং আমি কি জানি তা নিকটে, না দূরে, যার প্রতিশ্রুতি তোমাদেরকে দেওয়া হচ্ছে?’

 

Tafsir		21:110
إِنَّهُ يَعْلَمُ الْجَهْرَ مِنَ الْقَوْلِ وَيَعْلَمُ مَا تَكْتُمُونَ
নিশ্চয় আল্লাহ্‌ জানেন সশব্দে ব্যক্ত কথা আর জানেন যা তোমরা গোপন করো ।

 

Tafsir		21:111
وَإِنْ أَدْرِي لَعَلَّهُ فِتْنَةٌ لَّكُمْ وَمَتَاعٌ إِلَىٰ حِينٍ
এবং আমি কী জানি, হয়তো তা তোমাদের জন্য এক পরীক্ষা এবং এককালের জন্য জীবনোপভোগ’।

 

Tafsir		21:112
قَالَ رَبِّ احْكُم بِالْحَقِّ ۗ وَرَبُّنَا الرَّحْمَٰنُ الْمُسْتَعَانُ عَلَىٰ مَا تَصِفُونَ
নবী আরয করলেন, ‘হে আমার রব! ন্যায় মীমাংসা করে দিন এবং আমাদের রব রহমানেরই সাহায্য আবশ্যক ওই সব কথার উপর যা তোমরা বলছো।